অনেক প্রতিকূলতা ও বাধা অতিক্রম করে এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক ও দুঃসাহসিক সিদ্ধান্তে পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে পদ্মা সেতুর মতো এত বড় প্রকল্পের বাস্তবায়ন সত্যিই অবিশ্বাস্য। সরকারের ধারাবাহিকতা, সদিচ্ছা, সর্বোপরি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্রে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সাফল্যের সাক্ষী হতে এসেছেন অনেক শোবিজ তারকাদের পাশাপাশি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। এখন থেকে আর পদ্মা পারাপারের দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। পদ্মা সেতুর সুফল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সারাজীবন ভোগ করবে। এই তালিকায় দেশের নামকরা সব তারকারাও রয়েছেন। অনেকের জন্ম দক্ষিণে। যারা দূর দূরান্তে যেতেন তারা মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়িতে যেতেন। নানা সমস্যার কারণে তিনি চাইলেও ভুল সময়ে যেতে পারেননি। পদ্মা সেতু হওয়ায় এবার তাদের দুঃখ দূর হলো। সেই তারকাদের মধ্যে চলচ্চিত্র নির্মাতা জায়েদ খানের জন্ম বরিশালে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানেও তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন তিনি। পদ্মা সেতুর নিচে তোলা ছবি শেয়ার করে ফে// সবুকে ক্যাপশনে লিখেছেন, আমার টাকা দিয়ে আমার পদ্মা সেতু। আনন্দিত এবং গর্বিত। এমন একটি ঐতিহাসিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের দ্রুততম প্রবাহিত নদীর তালিকায় আমাজনের পরেই পদ্মা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এত দ্রুত প্রবাহিত নদীর উপর বিশ্বে একটিই সেতু রয়েছে। তাই সেতুটিকে টেকসই করতে বিশেষ প্রযুক্তির পাশাপাশি উচ্চমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা ৪২টি এবং স্প্যান ৪১টি। খুঁটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরতায় স্টিলের পাইল স্থাপন করা হয়েছে। অন্য কথায়, পাইলগুলিকে প্রায় ৪০ তলা উচ্চতায় নিয়ে যেতে হয়েছিল। পৃথিবীতে আর কোনো সেতুর জন্য এত গভীর পাইলিং হয়নি। পদ্মা সেতুতেও রয়েছে অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা। সাধারণ আলোর সুবিধার পাশাপাশি, আলো এবং সৌন্দর্য বাড়াতে সেতুটিতে স্থাপত্য আলোকসজ্জা রয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, টোলের বেশির ভাগ টাকা দিয়েই সরকারি ঋণ পরিশোধ করা হবে। বাকি টাকা সেতু রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হবে। এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে। ৩৫ বছরে, সরকারকে ৩৬ হাজার কোটি টাকা সুদ দিতে হবে। ঋণ পরিশোধ, সেতু রক্ষণাবেক্ষণ, নদী ব্যবস্থাপনা এবং টোল ও ভ্যাট আদায়ের জন্য অর্থের প্রয়োজন। টোল থেকে এই টাকা আদায় করা হবে।