দেশে মা/দ/ক এবং দূর্নীতির প্রবনতা মারাত্মক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। এমনকি মা/দ/ক এবং দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নীতি ঘোষনা করেছে। এই নীতি ঘোষনা করে দুই বছর আগে অভিযানে নামে সরকার। এতে অনেক ব্যক্তিকেই শনাক্ত করে আইনের আওতার আনা হয়েছ। এবং অনেকেই আত্মসমর্পণ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে সরকারের কাছে। অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও মা/দ/ক এবং দূর্নীতির সাথে জড়িত। তেমনি একজন কক্সবাজার টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। তারা ভাইয়েরাও এই অপরাধ কর্মাকান্ডের সাথে জড়িত। সম্প্রতি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের পরিমান উঠে এসেছে প্রকাশ্যে।
দুই বছর আগে মা/দ/ক/বি/রোধী অভিযানের মুখে কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মস/ম/র্প/ণ করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শতাধিক মা/দ/ক কারবারি। তাঁদের ১৩ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পা/চা/রে/র মা/ম/লার তদন্ত শেষ পর্যায়ে এনেছে পু/লি/শে/র অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সি/আই/ডি)। সি/আই/ডি কর্মকর্তারা বলেছেন, পাঁচজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। এই পাঁচজনের মধ্যে দুজন টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির আপন ছোট ভাই। তাঁরা হলেন, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক (৩২) ও ফয়সাল রহমান (৩৫)। অপর তিনজন হলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হক ওরফে এনাম, নুরুল হুদা ও মোহাম্মদ একরাম। সিআইডি সূত্র বলছে, এই পাঁচজন ই/য়া/বা/র বিক্রির টাকা দিয়ে কেউ দর্শনীয় বাড়ি তৈরি করেছেন, আবার কেউ করেছেন গরু-মুরগির খামার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
আবদুর রহমান বদির ভাই শফিক ও ফয়সাল এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। দুজনেরই উপকূলে লবণ উৎপাদন করে বিক্রি করার ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। তবে তাঁদের এ ব্যবসা শুধু কাগজে-কলমে বলেই তদন্তসংশ্লিষ্ট সি/আই/ডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, বাস্তবে দুই ভাইয়ের লবণের ব্যবসার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ই/য়া/বা বিক্রি করেই তাঁরা বিভিন্ন সম্পদ করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সি/আই/ডির পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, ফয়সাল রহমানের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। আর শফিকের একটি অ্যাকাউন্টে ৬৫ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালে মা/দ/ক/বিরোধী অভিযান শুরুর আগপর্যন্ত এসব লেনদেন করেছেন তাঁরা। শফিক ৭০ লাখ টাকা খরচ করে একটি দোতলা বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মা/দ/ক, অ/স্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও চারটি মা/ম/লা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মা/দ/কে/র বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা (জিরো টলারেন্স) ঘোষণার পর ২০১৮ সালের মাঝামাঝিতে দেশে মা/দ/কে/র বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু হয়। কয়েক মাসের মধ্যে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা/কা/রী বা/হি/নী/র অভিযানে কথিত ব/ন্দু/ক/যু/দ্ধে শতাধিক মানুষের প্রা/ণ/হা/নি ঘটে। এরই একপর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের ১২৩ জন চিহ্নিত মা/দ/ক কারবারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। মা/দ/ক বিরোধী ওই অভিযানের সময়ও আলোচনায় এসেছিলেন সে সময়ের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। তখন কিছু দিন সৌদি আরবে থেকে এসেছিলেন তিনি। পরে ওই বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বদির জায়গায় তাঁর স্ত্রী শাহীন আকতার চৌধুরীকে কক্সবাজার-৪ আসনে (টেকনাফ-উখিয়া) মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এখন শাহীন আকতারই ওই এলাকার সংসদ সদস্য।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সি/আই/ডির অর্গানাইজড ক্রা/ই/ম বিভাগের বিশেষ পু/লি/শ সুপার (এস/পি) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ই/য়া/বা বিক্রির টাকা দিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছে মা/দ/ক ব্যবসায়ীরা। পাঁচ মা/দ/ক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অর্থ/পা/চা/র আইনে করা মা/ম/লা/র অনুসন্ধান শেষ হয়েছে। এ মাসের মধ্যেই আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার আমদানি–রপ্তানির ব্যবসা রয়েছে। মিয়ানমার থেকে কাঠ এনে বিক্রি করি। ব্যবসা থেকে উপার্জন করেই আমি একটি বাড়ি বানিয়েছি। আমি ই/য়া/বা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। আমার যাবতীয় সম্পদের হিসেব সি/আই/ডিকে দিয়েছি।’ তাহলে আত্মসমর্পণ করেছিলেন কেন–প্রশ্নের জবাবে শফিকুল বলেন, বিভিন্ন মহলের চাপের কারণে তখন আত্মসমর্পণ করেছিলেন। বদির আরেক ভাই ফয়সাল বলেন, ‘জেলে থাকা অবস্থায় আমার বিরুদ্ধে মা/ম/লা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাকে সম্পদের হিসেব দিয়েছি। ব্যবসা করে টাকা আয় করেছি। ই/য়া/বা/র সঙ্গে আমার সম্পূক্ততা নেই। রাজনৈতিক চাপে আত্মসমর্পণ করেছিলাম।’ এদের বাইরে টেকনাফের নীলা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল হুদার (৩৫) অ্যাকাউন্টে এক কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন। স্থানীয়দের তথ্যমতে, পাঁচ বছর আগেও গাড়িচালক ছিলেন নুরুল হুদা। ইয়াবার কারবার করেই তিনি ওই টাকার মালিক হয়েছেন বলে সিআইডি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন। এই পাঁচ বছরে তিনি ইটভাটা ও হাঁস-মুরগির খামার করেছেন। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে গরু ও কাঠ আনার ব্যবসাও শুরু করছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ২৪টি মা/দ/কে/র মামলা রয়েছে।
টেকনাফের বন্দর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এনামুল হকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৫ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, এনামুল এই অর্থ ই/য়া/বা বিক্রি করে পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২টি মাদকের মামলা রয়েছে। তবে তিনিও ই/য়া/বা কারবারে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এনামুলের দাবি, স্থানীয় মা/দ/ক ব্যবসায়ী ও প্রশাসন যোগসাজশ করে তাঁকে তালিকায় ঢুকিয়েছিল। সি/আই/ডির তথ্য মতে, মোহাম্মদ একরামের ২ কোটি ৪১ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি এই টাকা দিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে জমি কিনেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১১টি মা/দ/কে/র মামলা রয়েছে। বক্তব্যের জন্য একরাম ও নুরুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। সি/আই/ডির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই মা/দ/ক কার/বা/রি/দের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের পর তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে আদালতে আবেদন করা হবে।
দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য সমাজ থেকে মা/দ/ক এবং দূর্নীতি নির্মূল একান্ত জরুরি। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিককে সচেতনতা অবলম্বন করা বিশেষ প্রয়োজন। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার দেশ থেকে মা/দ/ক এবং দূর্নীতি সহ সকল ধরনের অপরাধ নির্মূলে আপ্রান ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করার জন্য।