সৌদি আরবের জেদ্দায় বিপুল পরিমানের স্বর্ন ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ ফ্লোরা নামের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক কেবিন ক্রুকে আটক করা হয়েছে। রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটে ওঠার ঠিক আগে সৌদি পুলিশ তাকে আটক করে। এ ঘটনায় ফ্লোরাকে গ্রাউন্ড করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, ফিরতি ফ্লাইট ফ্লোরাকে ছাড়াই দেশে ফিরেছে। তাকে চাকরিচ্যুতও করা হতে পারে।
সৌদি আরবে তিন কোটি টাকার স্বর্ণ ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ আটক বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু ফ্লোরাকে চাকরিচ্যুত করা হতে যাচ্ছে। ফ্লোরাকে বরখাস্ত করার আগে তাকে শোকজ করা হবে। পরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্ত করা হবে। বুধবার বিমানের গ্রাহক কেন্দ্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ১৩ জুন ফ্লাইটে ওঠার ঠিক আগে সৌদি পুলিশ তাকে আটক করে। এ কারণে তাকে ছাড়াই দেশে ফিরেছে বিমানের ফিরতি ফ্লাইট। এ ঘটনায় ফ্লোরা ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আরেক কেবিন ক্রু রুহুল আমিন শুভ কিছুদিন আগে স্বর্ণসহ গ্রেফতার হন। সৌদি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফ্লোরার বিমানের ঢাকাগামী ফ্লাইট বিজি০৩৪০-এর ফ্লাইট পার্সার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানে ওঠার ঠিক আগে সৌদি পুলিশ জানতে পারে তার লাগেজে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে।
পরে পুলিশ লাগেজ তল্লাশি করে প্রায় তিন কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার করে। ফ্লোরা এই সোনার কাগজগুলো দেখতে চাইলে দেখাতে পারেনি। এ কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে ছাড়াই ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দর ত্যাগ করে। বেসামরিক বিমান চলাচল আইন অনুযায়ী, একটি বিমানের জন্য এই ধরনের ফ্লাইটে ১০ জন কেবিন ক্রু থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ফ্লোরাকে আটক করায় পাইলট আইন অমান্য করে ৯ ক্রু সদস্য নিয়ে ঢাকায় আসেন। এক্ষেত্রে বিমানকে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে। বিমানের গ্রাহক কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সৌদি কারাগার থেকে ফ্লোরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ রয়েছে যে ফ্লোরা এবং শুভ এয়ারলাইন্সের শিডিউলিং শাখার একটি সিন্ডিকেটের হাতে রুটে একটি বড় আকারের সোনা চোরাচালান চক্র গড়ে তুলেছে।
চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব ও দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে স্বর্ণ বহনকারী ফ্লাইট ব্যবহার করে আসছে। তফসিল শাখায় চক্রের সদস্যদের মোটা অংকের টাকা নিয়ে এ রুটে উড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে সিন্ডিকেট। সিডিউলিং শাখার সিন্ডিকেট প্রতিটি ফ্লাইটের জন্য ক্রুদের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা নেয়। স্বর্ণ চোরাচালানের চক্রের গডফাদাররা বিমানের এই কেবিন ক্রুদের বাহক হিসেবে ব্যবহার করে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার সোনা নিয়ে আসছে। ফ্লোরা, শুভ ও তার (শুভ) স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বর্ণ আমদানি ও অর্থ পাচারসহ অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও এয়ারলাইন্সের সাবেক প্রভাবশালী পরিচালকের কারণে কর্তৃপক্ষ সেগুলো আমলে নেয়নি। এ কারণে ১৩ জুন ফ্লোরাকে গ্রেপ্তার করা হলেও বিমান কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, হাতেনায় গ্রেফতারের পরও শুভকে কাজে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিন্ডিকেট। এজন্য তারা কাউকে পাত্তা দেয় না। এ চক্রের এক সদস্যের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে বিমান। তার নাম শেহজাদ। সম্প্রতি সোনাসহ হাতেনাতে ধরা পড়েন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেদ্দায় বাংলাদেশের একটি বিমানের নারী কেবিন ক্রু বিপুল পরিমানের অবৈধ সম্পদ নিয়ে হাতেনাতে ধরা পরেছে। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি সূত্র দেশের কিছু জনপ্রিয় গনমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঘটনার সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ফ্লোরা ঢাকাগামী ফ্লাইটের (বিজি ০৩৪০) ফ্লাইট পার্সার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু বিমানে ওঠার ঠিক আগে সৌদি পুলিশ জানতে পারে তার লাগেজে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। লাগেজ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। ফ্লোরা এসব সোনার কাগজ দেখাতে নারায় চরমভাবে বিপাকে পড়েছে।