বানভাসীদের সাহার্যার্থে যে যেভাবে পারছে করে যাচ্ছে সহযোগিতা। তাদের দুর্দশা শ্য করতে না পেরে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে প্রশ্ন উঠেছে বিএনপিকে নিয়ে। বন্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষের নেই দুঃখের শেষ কিন্তু এদিকে নেই বিএনপির কোনো খোঁজ। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এক বক্তব্যে সিসি মেয়রকে জিজ্ঞেস করেছেন বন্যায় বিএনপির কাছ থেকে কি পেয়েছেন।
সিলেট-সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে শেখ হাসিনা সিলেট সার্কিট হাউসে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মঙ্গলবার (২১ জুন) সিলেট সার্কিট হাউসে বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও বন্যার্তদের পুনর্বাসন নিয়ে মতবিনিময়কালে মেয়র আরিফের কাছে বন্যা নেতাদের কাছে কী পেয়েছেন তা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।
মতবিনিময় সভায় সিলেট-সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বক্তব্য শোনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিএসআইসি) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মেয়র আরিফের উদ্দেশে বলেন, তার দলের কেউ (বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতায়) আসেননি। তিনি (মেয়র আরিফ) বলুন তিনি তার দলের কাছ থেকে কী পেয়েছেন, আমরা শুনি।
এ সময় মেয়র আরিফ বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি অসহায় মানুষের মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে। আপনার (প্রধানমন্ত্রী) উপস্থিতির পর এখানকার মানুষ আশার আলো দেখেছে। তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে সক্ষম হয়। মেয়র বলেন, ‘আপনার এখানে আসার খবর পাওয়ার পর থেকেই মানুষ আশা করছে প্রধানমন্ত্রী আসলে ব্যবস্থা নেবেন। নগরীর সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীদের শুকনো খাবারের দাম বৃদ্ধি বন্ধ করে সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানান মেয়র।
আরিফ বলেন, সিলেট নগরীর ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত। এখানকার (সিলেট) বেশ কিছু এলাকা দিয়ে হঠাৎ করে পানি প্রবেশ করায় নগরী তলিয়ে গেছে। এ জন্য শহরে সুরক্ষা বাঁধ দরকার। সুরমা নদীর তীরে যেসব এলাকায় উঁচু হাঁটা পথ নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো দিয়ে পানি প্রবেশ করতে পারছে না। তাই ১৫ কিলোমিটার এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য আমি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) দাবি জানাচ্ছি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী চলমান বন্যায় নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমাদের সিটি কর্পোরেশনের সকল কাউন্সিলর বন্যার্তদের জন্য একযোগে কাজ করেছেন। প্রতিটি ওয়ার্ড। আমরা ৭০টি কেন্দ্র খুলেছি।
তিন জেলার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে মঙ্গলবার সকাল ৮টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লো-ফ্লাইং মোডে হেলিকপ্টার থেকে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে সকাল ১০টার দিকে তিনি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে তিনি প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় কাটান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় ও বন্যা মোকাবেলায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। দুপুর ২টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী বানভাসীদের পাশে প্রত্যেকবারের মতো এবারো পাশে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করে দিলেন তিনি কতো বড় মনের মানুষ। তিনি বাংলাদেশের জন্য গর্ব। বাংলার মানুষের দুঃখ কষ্ট প্রধানমন্ত্রী শ্য করতে পারেন না আর তাই এক মুহূর্ত বসে না থেকে চলে গেলেন বানভাসীদের কাছে এবং সেখানে যেয়ে দিলেন সুখবর।