নির্বাচন কমিশনের দেয়া ভুল তথ্যের জন্য রীতিমতো নানা ভোগান্তীতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাংলাদেশের নাগরীরিক হিসেবে যে সকল সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল, নির্বাচন কমিশনের এক ভুলের জন্য তা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে তাদেরকে। আর সেই সকল বঞ্চিতদের মধ্যে একজন আরমান হোসেন।
জন্ম ১১ অক্টোবর, ১৯৮৯ স্ত্রী, সন্তান ও মাকে নিয়ে ছোট পরিবার। জীবিকার তাগিদে তিনি বিপণিবিতানে কাজ করছেন। আরমানের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও নির্বাচন কমিশনের মতে তিনি একজন ‘মৃত’ ব্যক্তি।
আরমান (৩২) থাকেন ঠাকুরগাঁওয়ের মুন্সির হাট গ্রামে গোবিন্দ নগরে। সে একই গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে। এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্র থেকেও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করতে পারেননি আরমান। ইভিএমে ভোট দিতে পারেননি। বঞ্চিত হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে।
আরমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে ভুলে সব কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাদের সামান্য ভুলের কারণে আমি ধাপে ধাপে কষ্ট পাচ্ছি। নির্বাচন অফিসে গেলেও নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে হবে। আর এত কাগজপত্র না পেলে এভাবেই ভোগান্তি পোহাতে হবে।
শুধু আরমান নয়, একই অবস্থা রিকশাচালক রফিকুল ইসলামের স্ত্রী লতিফা বেগমেরও। তিনি ২৪ অক্টোবর ১৯৮২ জন্মগ্রহণ করেন। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তাদের সংসার। জীবিত প্রমাণসহ সংশোধনের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচন অফিসে আবেদন করেন তিনি।
লতিফা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় সরকার কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। নির্বাচন কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে ‘যেহেতু মারা গেছেন জীবিত হতে একটু সময় লাগবে।’
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, লতিফার আবেদন যাচাই-বাছাই করে জাতীয় পরিচয়পত্রে তাকে জীবিত করা হয়েছে। আরমান হোসেনের আঙুলের ছাপ পরীক্ষা করেই বিষয়টি সমাধান করা হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করে এ পর্যন্ত ৮৪ জনকে জীবিত করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে। সারাদেশে আবারও বেড়েছে সক্রমণ। আর এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের ভুলের জন্য যদি তারা টিকা থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে আগামী পরিস্থিতি আরও ভয়বাহ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।