Wednesday , December 25 2024
Breaking News
Home / Countrywide / একেবারে মাঠে মারা গেলেন চাষিরা, কিভাবে হবে ১৪০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরন

একেবারে মাঠে মারা গেলেন চাষিরা, কিভাবে হবে ১৪০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরন

সম্প্রতি সিলেটে বন্যার কারনে ঘর বাড়ি নদী নালা সব একাকার হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পুরো সিলেট বাসি। সারাদেশর বিভিন্ন্  এলাকাথেকে তাদের উপর সহানুভূতির হাতও বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। এবার বন্যায় তাদের ক্ষয়ক্ষিতি নিয়ে মৎস্য অধিদফতরের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, চলমান বন্যায় সিলেটে মাছ চাষে ১৪০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সুনামগঞ্জের কৃষকরা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রায় 32,602 কৃষক 5,256 হেক্টর জমিতে কার্প চাষ করছিলেন। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিপাত এবং ভারতের মেঘালয় ও আসামের ঢাল থেকে আকস্মিক বন্যায় তাদের আর্থিক লাভের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। সিলেট মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোঃ মোতালেব হোসেন বলেন, এটি প্রাথমিক অনুমান। এতে কৃষকদের প্রকৃত ক্ষতি হবে অনেক বেশি। কারণ সুনামগঞ্জের প্রায় সব খামারই ভেসে গেছে।

এলাকায় যখন মাছ চাষের প্রসার ঘটছে তখন স্থানীয় কৃষকরা দুর্ভোগে পড়েছেন। দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে এবং সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রোটিনের চাহিদা। ফলে এই বর্ধিত চাহিদার সদ্ব্যবহার করতে পারবেন বলে আশা করছিল অনেকেই। 2019-20 অর্থবছরে, চাষকৃত মাছের ভাল বৃদ্ধি দেখা গেছে। ওই অর্থবছরের হিসাবে, উৎপাদিত ৪.৫ মিলিয়ন টন মাছের ৫৬ শতাংশ এসেছে চাষকৃত মাছ থেকে। যা প্রোটিনের সাশ্রয়ী উৎস হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তর এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সে বছর বাংলাদেশ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মাছ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। এক দশক আগে চাষকৃত মাছের পরিমাণ ছিল ১.৩৫ মিলিয়ন টন। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এটি মোট উৎপাদনের প্রায় ৪৭ শতাংশ। দেশের মোট চাষকৃত মাছ উৎপাদনের ৩% সিলেটে উৎপাদিত হয়। কর্মকর্তারা জানান, খোলা পানিতে মাছ উৎপাদন মূলত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ। সেখানকার কৃষকরা ক্যাটফিশ ও মিঠা পানির চিংড়ি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সহকারী পরিচালক মোতালেব হোসেন জানান, এলাকায় কার্প ছাড়াও তেলাপিয়া ও পাঙ্গাসিয়াস এরই মধ্যে চাষ হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যায় খামারের যে ক্ষতি হয়েছে তা একই সাথে খামার এবং ভোক্তা উভয়কেই প্রভাবিত করবে।

মোতালেব হোসেনের মতে, কৃষকদের উচিত তাদের মাছের খামারকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে জাল ব্যবহার করা। শীর্ষ পোল্ট্রি ও ফিড প্রস্তুতকারক প্যারাগন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মশিউর রহমান জানান, সিলেটে তাদের দুটি হ্যাচারি ও দুটি মাছের খামার রয়েছে। বন্যার পানির প্রবাহ রোধ করতে আমরা এর আগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট উঁচু বাঁধ নির্মাণ করেছি। ক্রমবর্ধমান জলস্তরের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা জালের উচ্চতাও বাড়িয়েছি, তিনি যোগ করেন।

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে বন্যা কবলিত সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে সেনাবাহিনী। দুই জেলার ৬টি উপজেলায় ১০ প্লাটুন ও ৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। সেনা সদস্যরা জলাবদ্ধ মানুষকে নৌকায় করে বাড়িঘর থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

About Nasimul Islam

Check Also

দীর্ঘ ১৭ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা পিন্টু

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পাওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *