সম্প্রতি বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ওমর সানী ও জায়েদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী হয় মৌসুমিকে কেন্দ্র করে। ওমর সানী অভিযোগ করেন জায়েদ তাদের সংসারে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। যার কারনে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিল্পাঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অবশেষে ওমর সানী ও মৌসুমির মধ্যে সমস্যার সমাপ্তি ঘটে। এবার মৌসুমিকে নিয়ে কটূক্তি করায় সতর্ক করা হল যাদের।
দেশের সিনেপাড়ায় কয়েক দিন ধরেই ওমর সানী, মৌসুমী, জায়েদ খান প্রসঙ্গে আলোচনা চলছিল। খবর ছড়িয়ে পড়ে ওমর সানি জায়েদ খানকে চড় মারেন এবং জায়েদ খান ওমর সানিকে ব/ন্দুক দেখান। শুধু তাই নয়, এর পেছনের কারণও জায়েদ খান মৌসুমীকে বিরক্ত করেন।
পরে রোববার সন্ধ্যায় ওমর সানি শিল্পী সমিতিতে জায়েদের বিরুদ্ধে পরিবার ভাঙার চেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেন।
ওই লিখিত অভিযোগে ওমর সানি উল্লেখ করেন, চার মাস ধরে জায়েদ তাদের সংসার ভাঙার চেষ্টা করছেন। তবে পরের দিন মৌসুমী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জায়েদ খান তাকে বিরক্ত করেননি, বরং সম্মান করেন। আর তিনিও জায়েদকে স্নেহ করেন। একই সঙ্গে মৌসুমী বলেন, জায়েদের মানসিকতা ভালো এবং সে ভালো ছেলে।
তবে ওমর সানি ফেসবুক লাইভে এসে নিজের বক্তব্যে অনড় বলে জানান।
গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল হয়তো নেতিবাচক কিছু ঘটতে যাচ্ছে। সে সব ভুল প্রমাণ করে এক টেবিলে বসলেন মৌসুমী-ওমর সানি। রাতের খাবার খান মানে দুজনের সম্পর্ক ঠিকই বলা যায়। তবে এসবের মধ্যে চলচ্চিত্রের কিছু ব্যক্তি মৌসুমী-ওমর সানীর সম্পর্কে ফাটল ধরানোর জন্য চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ।
ওমর সানির ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি জানা গেছে। ওমর সানী রীতিমতো চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখেছেন, ‘শিল্পী সমিতির বর্তমান প্রেসিডেন্ট শ্রদ্ধেয় কাঞ্চন ভাইসহ ফুল ক্যাবিনেটের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, শিল্পী সমিতির মেম্বার দাবি করা মিজান এবং জামাল পাটোয়ারী, যেসব কথা বলে আপনাদের কানে যায় না, নাকি আমরা কানে শুনি না দেখি না, বাকিটা শ্রদ্ধা রাখতে চাই সুযোগ দেন। ‘ ‘
মিজান কী বলেন? মিজানের বহুমাত্রিক ভাষণটি বিভিন্ন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে দেখা গেছে। প্রায় ভিডিওতে জায়েদ, মৌসুমী, ওমর সানি প্রসঙ্গ। একটি ভিডিওতে অভিনেত্রী মৌসুমীর সমালোচনা করছেন মিজান। বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন পৃথিবীর সেরা, কিন্তু তিনি (মৌসুমী) সেই বন্ধন রাখেন না। তার স্বামী একটা কথা বলছে, সে জানত, গুরুত্ব দিত, তারপর না মানুষ ভালো বলতে পারত। মৌসুমী-ওমর সানির দীর্ঘ ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটবে। তারা এ সময় আল্লাহবিল্লাহ করবে, তারা নোংরামি কেন করবে? পপির পরিণতিটা দেখছেন না জায়েদ খান কী করেছে? ‘
আরেকটি ভিডিওতে মিজান বলছেন, ‘মৌসুমীর মা হওয়ার সম্ভাবনা চলছে। সে যদি গাধা হয়, সে যদি গরু হয়, তাহলে সে মৌসুমী সংসার করতে পারবে। ‘
কয়েক মাস ধরেই মিজান ও জামাল পাটোয়ারী চলচ্চিত্রশিল্পীদের নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করে যাচ্ছেন। সেখানে ওমর সানির নামও রয়েছে। এ কারণেই ওমর সানি দুজনের নামে এমন অভিযোগ এনেছেন। শিল্পী সমিতি থেকে বাদ পড়া ১৮৪ জনের মধ্যে মিজান ও জামাল পাটোয়ারী দুজনই ছিলেন। যারা বর্তমান কমিটিতে নির্বাচিত হয়ে সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন।
জায়েদ খানকে নিয়ে একটি ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ‘জায়েদ খান একজন পাকাপোক্ত খেলোয়াড়। কত রকমের ঝামেলায় আমরা সেই গল্পে ঢুকতে পারিনি। আমার মনে হয় জায়েদ খান খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে মৌসুমীকে বিরক্ত করেছেন। জায়েদ খানকে শিল্পী সমিতি থেকে বাদ দেওয়া দরকার। স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা দরকার। এর আগেও নায়িকাদের নি/র্যাতন করেছেন তিনি। ‘
এর আগে জামাল পাটোয়ারী আরেকটি ভিডিওতে বলেছিলেন, ‘মৌসুমী-ওমর সানি জাতীয় বেইমান। ভিডিওতে তিনি জায়েদ খান ও মৌসুমীকে নিয়ে কথা বলেছেন।
তবে শুধু জামাল পাটোয়ারী বা মিজানকেই দায়ী করছেন না চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন। উসকানি দিয়ে ক্যামেরার সামনে যারা এসব বক্তব্য দিচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
জানা গেছে, মিজান ও জামাল পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে শিল্পী সমিতি। তাদেরকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক বলেন, জামাল, মিজানকে সতর্ক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওমর সানী ও মৌসুমিকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করায় করায় শিল্পী সমিতির সদস্য জামাল পাটোয়ারী ও মিজানকে সতর্ক করেছেন চলচ্চিত্র সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।