অপরাধ করে হয়তো কেউ কিছুদিন নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে কিন্তু তকে ঠিকি একদিন ধরা পরতে হয়। দেশের মাটিতে অপরাধ করে কেউ কোনোদিন পালিয়ে যেতে পারেনি আর হয়তো পারবেওনা। দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে প্রাণনাশের চেষ্টা করা খুবই একটি গুরুতর অন্যায়। সম্প্রতি জানা যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার দায়ে পলাতক আসামি শেখ মোহাম্মদকে মৃ/ত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
দুই দশকেরও বেশি আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বো/মা ফেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের চেষ্টার দায়ে পলাতক আসামি শেখ মোহাম্মদকে মৃ/ত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এনামুল হক ওরফে শেখ মো. এনামুল করিমকে (৫৩) গ্রেফতার করেছে র্যাব। শনিবার (১৮ জুন) রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর একটি অভিযানিক দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী সূত্রে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজির আমির মুফতি আবদুল হান্নানের সঙ্গে এনামুল হকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মুফতি হান্নান তার মালিকানাধীন সোনার বাংলা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানায় গোপন বৈঠক করেন এবং কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে বো/মা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেন। ঘটনার পর দীর্ঘ ২২ বছর তিনি রাজধানীর উত্তরা, মোহাম্মদপুর, বনশ্রী ও গাজীপুরে নাম ও পেশা পরিবর্তন করে আত্মগোপন করেন। তিনি তার জাতীয় পরিচয়পত্রও পরিবর্তন করেছেন।
রোববার (১৯ জুন) কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। তিনি জানান, শনিবার (১৮ জুন) রাতে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর একটি অভিযানিক দল রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালায়। এনামুল হক ওরফে শেখ মো. এনামুল করিমকে গ্রেফতার করেছে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, শেখ মো. এনামুল হক ওরফে শেখ মো. এনামুল করিম গাজীপুরে অবস্থানকালীন একটি হোমিওপ্যাথি কলেজে দুই বছর প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একইভাবে তিনি নিজেকে গাজীপুর হোমিও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ দাবি করতেন। পরে ২০১০ সালে ঢাকার উত্তরা ও বনশ্রীতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। পরে ২০১৫ সালে উত্তরায় ‘আইকে হোমিও কলেজ উত্তরা’ নামে একটি ভুয়া হোমিও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এনামুল। পরবর্তীতে, ২০২০ সালে, তিনি আইকে হোমিও কলেজ উত্তরা বন্ধ করে দেন এবং ক্যান্সার নিরাময় কেন্দ্র নামে আরেকটি সংস্থা চালু করেন, যা নকল ভেষজ প্রতিকার দেওয়া শুরু করে। তার চিকিৎসায় ক্যান্সার পুরোপুরি সেরে গেছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি এইডস নিরাময় করতে সক্ষম বলেও দাবি করেন।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত এনামুল সব সময় নিজের গন্ডিতেই চিকিৎসা করতেন। হেপাটাইটিস-ভাইরাস, প্যারালাইসিস, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, বন্ধ্যাত্ব, টিউমার, হার্ট, কিডনি, যৌনরোগ ও মানসিক রোগসহ বিস্তৃত রোগে তিনি নিজেকে একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে দাবি করেন। ডিএমপিতে বাসা ভাড়া নিতে হলে ভাড়াটিয়াকে তার পরিচয়পত্র দিতে হয় এবং কীভাবে ২২ বছর ধরে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে ফাঁসিতে ঝুলে পালিয়ে যায়। জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির সঙ্গে কেউ জড়িত কিনা জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এনামুল ২০১০ সালে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছিল।
এ সময় গাজীপুরে দীর্ঘদিন থাকার সুবাদে নিজের অবস্থান তৈরি করেন। এ হিসেবে তিনি গোপালগঞ্জের পরিবর্তে গাজীপুরে স্থানীয় ঠিকানা হিসেবে এলানুম হক থেকে এনামুল করিম নাম পরিবর্তন করে একটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন।
প্রসঙ্গত, অপরাধ দমনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকার। ছাড় দেওয়া হবেনা কোনো অন্যায়কারীকে। দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার করা হয়েছে অনেক উন্নতি। অপরাধ যেখানেই হোক না কেনো তারা জীবন বাজি রেখে অপরাধ দমন করে থাকেন।