বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষিজাত পণ্যদ্রব্যসহ অন্য সকল পণ্যদ্রব্যের উৎপাদন ব্যায়ে জ্বালানি তেলের বিষয়টি বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। যার কারণে বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতিতে দ্রব্যমূল্যের দামের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। যার কারণে দেশে দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্যের দাম। তাছাড়া জ্বালানি তেলসহ ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশেও।
পদ্মা সেতুর জাঁকজমক উদযাপন না করে প্রান্তিক মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আজ রোববার (১৯ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারীদের দুর্দশা এবং তা থেকে মুক্তির উপায়’ শীর্ষক বাংলাদেশ প্রান্তিক মুরগির খামারি ঐক্য পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
পরিষদের সভাপতি মিজান বাশারের সভাপতিত্বে ও শাহিন হাওলাদারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতিক ছাড়াও আরো অনেক বিশিষ্ট জনেরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে ইতিমধ্যে ২২ হাজার কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে আপনি ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করেছেন। এমন সময়ে যখন দেশের দুই কোটি পরিবার ঈদ করতে পারবে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বন্যা। এতে করে ৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ কঠিন সময় পার করছেন।
দেশীয় পোল্ট্রি খামারিদের বাঁচাতে নীতিমালা দরকার।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নীতিমালা না হলে সিন্ডিকেটের পাল্লায় পড়ে শিক্ষিত যুবসমাজকে ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৬ বছর। বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭৩ বছর। বর্তমানে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল পুষ্টি। যেটি প্রান্তিক কৃষক ও পশুপালক সংগ্রহ করেছেন। এখানে বড় যারা তাদের কোনো অবদান নেই।
প্রধানমন্ত্রী ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি এত বড় কাজ করতে যাবেন না। এখন দেশের দিকে তাকান। চাষি, খামারি ও প্রান্তিক জনগণের প্রতি মনোযোগ দেন। তারা আপনাকে বাঁচাবে। নইলে তাদের মতো আপনাকেও ধুঁকে ধুঁকে কষ্ট পেতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, এই প্রান্তিক কৃষকদের বাঁচাতে আমাদের মৌলিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা এই দেশটাকে বড় পুঁজিবাদীদের হাতে তুলে দেব নাকি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর হাতে দেব।
তিনি বলেন, দেশের বড় পুঁজিপতিরা ছোটদের খেয়ে ফেলতে চায় কিন্তু তারা জানে না আল্লাহর সৃষ্টিতে ছোট-বড় মিলেমিশে বসবাসের উপযোগী করে রেখেছে। এর বাইরে গেলে ধ্বংস নেমে আসে।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতি সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইস ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছে। এই টাকা এই প্রান্তিক মানুষের ঘামে ভেজা পরিশ্রমের টাকা। কিন্তু আমাদের সরকার বলেছে এই টাকার ৬ শতাংশ সরকারকে দিলে তা বৈধ হয়ে যাবে।
প্রসংগত, ধারণা করা হচ্ছে একটি সময়ে এসে দেশকে কৃষির উপর নির্ভর হয়ে পড়বে যার কারণে সরকারের এখনই উচিত কৃষির উপর নজর দেওয়া এবং কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণের জীবন ধারণের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। সয়াবিনের বিকল্প হিসেবে সরিষার তেলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের নজর দেওয়া একান্ত জরুরী।