জয়া মাসুদ চরিত্রে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। মডেল ও অভিনেতা ফয়সাল আহসানকে বিয়ে করার পর আহসান তার নামের শেষে মাসুদকে বদল করেন। এখন দুই বাংলাতেই তিনি ‘জয়া আহসান’ নামেই বেশি পরিচিত।
1996 সালে ফয়সাল আহসানকে বিয়ে করার পর, এই দম্পতির একটি সুন্দর সময় ছিল। কিন্তু ১৩ বছর বয়সে সেই বিয়ে টেকেনি। জানা গেছে, ফয়সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ সালে জয়া তাকে তালাক দেন। তবে তাদের বিচ্ছেদের খবর তাদের দুজনের কেউই নিশ্চিত করেননি।
জানা যায়, ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার নবাব খাজা আহসানউল্লাহ পরিবারের ছেলে ফয়সাল, তার পুরো নাম মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ। বিয়ের পরও জয়া আহসান তার স্বামী ফয়সালের নামের অংশ। প্রায় এক যুগ ধরে ফয়সাল আহসান জয়া তার স্বামী না হলেও জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী কেন নিজের নামের একটি অংশ ধরে রেখেছেন? জানার কৌতুহল রয়েছে ভক্তদের। কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর দেননি অভিনেত্রী।
এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হলেও ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলতে চান না বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি। এছাড়া দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় এই লম্পট অভিনেত্রী কেন ফয়সাল আহসানের সঙ্গে সংসার টিকলেন না তা নিয়ে মুখ খোলেননি।
যেভাবে সে ফয়সালের প্রেমে পড়েছে
ফয়সাল, ঢাকার এক জমিদার পরিবারের ছেলে। সদরঘাটের ঐতিহাসিক স্থান আহসান মঞ্জিল তার পূর্বপুরুষদের দ্বারা নির্মিত। ফয়সাল ১৯৯৭ সালে জাইরার সঙ্গে দেখা করেন। সেই প্রথম সফরের কথা এক সাক্ষাৎকারে বলেন ফয়সাল। প্রাথমিক ‘তিক্ত সম্পর্ক’ কীভাবে প্রেমে পরিণত হয়েছিল তার গল্পও শোনালেন তিনি।
জয়া এবং ফয়সাল 1997 সালে একটি বিজ্ঞাপনে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। সেখানেই আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। শুটিংয়ে এক ঘণ্টা দেরি করে আসেন ফয়সাল। মেকআপ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন জয়া। ফয়সালের উপর রেগে যায়। নানা কটু কথা বললেন। সেই রাগ পরে স্নেহে পরিণত হয়। ফোনে কথা বলতে বলতে প্রেমে পড়ে গেলাম। সেই প্রেম পরে বিয়েতে রূপ নেয়।
বিয়ে ভাঙা কেন?
জয়া বা ফয়সাল বিবাহিত জীবনের কোনো দিক নিয়ে মুখ খোলেননি। বিয়ের পরও জাইরার সঙ্গে বিভিন্ন নাটক ও বিজ্ঞাপনে কাজ করছিলেন ফয়সাল। জনপ্রিয় তারকা দম্পতি হয়ে ওঠেন তারা। ধানমন্ডিতে ‘প্রেমের সোপান’ নামে একটি ফাস্টফুডের দোকানও খুলেছেন তিনি। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কয়েক বছর পর ছন্দ পড়ে।
সেই সময়ে, জাইরার জনপ্রিয়তা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। পেছনে ছিল ফয়সাল। গুজব রয়েছে যে জাইরার সাফল্য তাদের বিবাহে ফাটল সৃষ্টি করেছিল। মনোমালিন্য বাড়তে থাকে। ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
ফয়সাল পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জাইরা রাজি হননি। ফলে দূরত্ব কমেনি। ফাটলটি বড় হওয়ার সাথে সাথে এটি 2011 সালে বিভক্ত হয়। তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
ফয়সাল আর জয়া এখনকার মতো
বিবাহ বিচ্ছেদের যুগেও জাইরার হাতে মেহেদির রঙ আসেনি। অর্থাৎ দ্বিতীয়বার সংসার শুরুর উদ্যোগ নেননি এই অভিনেত্রী। সে কি ঘর বাঁধবে না? গত বছর এক সাক্ষাৎকারে এই অভিনেত্রী বলেছিলেন যে তার বিয়ের কোনো চিন্তা নেই। কারণ সে তার কাজে এতটাই মগ্ন যে সে আর সংসারে জড়াতে চায় না।
বর্তমানে দুই বাংলাতেই সমানভাবে কাজ করছেন জয়া আহসান। আগামী ২৪শে জুন কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে তার নতুন ভারতীয় বাংলা সিনেমা ‘ঝাড়া পালক’। এই সিনেমাটি কবি জীবনানন্দ দাশের জীবনী নিয়ে। পরিচালক সামন্ত মুখোপাধ্যায়। সেখানে জীবনানন্দ দাশের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ব্রাত্য বসু। তার স্ত্রী লাবণ্যের ভূমিকায় দেখা যাবে জয়াকে। এছাড়া তার হাতে রয়েছে আরও একগুচ্ছ কাজ।
এদিকে ফয়সাল আহসানও বিয়ে করেননি। হারানো ভালোবাসাকে তিনি বুকে লালন করেছেন। এক সময়ের জনপ্রিয় মডেল ফয়সাল এখন রেস্টুরেন্ট, বুটিক হাউস ও আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। সাবেক হকি খেলোয়াড়দের নিয়ে ‘ভেটারান হকি বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকও তিনি।
উল্লেখ্য, এরই মধ্যে তার নতুন সিনেমা ঝড় পালক মুক্তি পাবে। সেখানেও তাকে স্বামী সম্পর্কে আনন্দের ছলে প্রশ্ন করা হয়। তবে সে প্রতিউত্তরে বলেন, একজন শিল্পীর স্ত্রী হওয়া কি যতটা কঠিন একজন শিল্পীর স্বামী হওয়া? সিনেমা মুক্তির আগে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন প্রশ্ন করা হয় জয়াকে। উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, “আমার স্বামী নেই, কিভাবে বলবো! তবে আমি মনে করি, শুধু স্বামী বা স্ত্রী হওয়াই নয়, সঙ্গী হওয়াও খুব কঠিন। অনেক উত্থান-পতন আছে। প্রতিটি শিল্পীর জীবন তাদের পরিচালনা করতে একটি শক্তিশালী হাত লাগে।