Sunday , November 10 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার এমপি বাহারকে নির্বাচন নিয়ে চ্যালেন্জ ছুড়ে দিলেন সাক্কু

এবার এমপি বাহারকে নির্বাচন নিয়ে চ্যালেন্জ ছুড়ে দিলেন সাক্কু

গত ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে কুমিল্লায় যে রাজনীতি শুরু হয়, সেখানে একিউএম বাহাউদ্দিন বাহারের প্রভাব সকলের নিকট অনেকটাই স্পষ্ট। ১৯৭৩ সালে অর্থাৎ স্বাধীনতা-পরবর্তী দুই বছর পর তারই হাত ধরে ওই সদর আসনটি আয়ত্তে নিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তিনি একসময় ছিলেন বিএনপি নেতা সেটা হলেও তার প্রতি নেতিবাচক কোন দৃষ্টি ছিল না, এমনটাই জানা আছে কুমিল্লা বাসিন্দারা।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ নেতা আরফানুল হক রিফাতের রাজনৈতিক গুরু আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একিউএম বাহাউদ্দিন বাহারের সঙ্গে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি থেকে বহি”ষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু।

শুক্রবার বিকেলে সাক্কুরের ব্যক্তিগত সহকারী কবির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাক্কু পরে বলেছিলেন, “আপনি জানেন আমি একটি রাজনৈতিক পরিবারের। রাজনীতি আমার ধ্যান-জ্ঞান আমি রাজনীতির বাইরে কিছু ভাবতে পারি না। রাজনীতির বাইরে আমি কিচ্ছু চিন্তা করতাম পারি না। আমি এমপি ইলেকশান করাম। এইডাই আমার ফাইনাল কথা।’

সিটি নির্বাচনে সাক্কুর পরাজয়ের পর তার এক কর্মী ফে’/সবু’কে লিখেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ আসনে ইনশাআল্লাহ প্রিয় নেতা মনিরুল হক সাক্কু। এমন পোস্টের পরই কুমিল্লাজুড়ে আলোচনা শুরু হয়।

বুধবার সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের কাছে ৩৩৪ ভোটে হেরে যান দুইবারের মেয়র সাক্কু। এটাই তার জীবনের প্রথম পরাজয়।

বিএনপি শাসনামলে কুমিল্লা পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের শাসনামলে ২০১২ ও ২০১৭ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও জয়ী হন সাক্কু। তিনি সিটির প্রথম নির্বাচনে ৩০ হাজার ভোটে এবং দ্বিতীয় নির্বাচনে ১১ হাজার ভোটে জয়ী হন। এবার স্বচ্ছাসেবক দলের নেতা নিজামউদ্দিন কায়সার ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে ভোট বিভক্ত হওয়ায় হেরে গেলেন সাক্কু। নৌকার পক্ষে রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। সাক্কু পেয়েছেন ৪৯,০৯৬ ভোট।

নৌকার প্রার্থী রিফাতের রাজনৈতিক গুরু বাহার। ১৯৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে তার হাত ধরে ২০০৮ সালে কুমিল্লা সদর আসনে প্রথমবারের মতো জয় পায় আওয়ামী লীগ।

গত এক দশকে কুমিল্লার রাজনীতিতে বাহারের প্রভাব স্পষ্ট। তিনি বিএনপির সদস্য হলেও সাক্কুরের ওপরও তার ভালো নজর ছিল বলে কুমিল্লায় গু/’ঞ্জন রয়েছে।

বাহার ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আকবর হোসেনের কাছে বড় ব্যবধানে হে”রে যান। এ সময় তিনি পেয়েছিলেন ২৬ হাজার ৫৫২ ভোট। অন্য দিকে, আকবর ধানের শীষ দিয়ে পান ৫৪ হাজার ৪৯৬ ভোট।

এর পরের দুটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ টি এম শামসুল হক বিএনপির সঙ্গে লড়াই জমাতে পারেননি। আকবর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে সহজ জয় পান।

বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে আকবর হোসেনের প্রয়ানের পর ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপি বিএনপি প্রার্থী করে আমিন উর রশিদ ইয়াসিনকে। আর আওয়ামী লীগ ব্র্যান্ডটি বাহারের হাতে তুলে দেয়।

আগে আসনটি ছিল কুমিল্লা-৮। তবে ২০০৬ সালে সীমানা পুনর্নির্মাণের পর আসনটি হয় কুমিল্লা-৬। এক দশক আগে ওই নির্বাচনে বাহার পেয়েছিলেন ১ লাখ ২৬ হাজার ১৩১ ভোট। অন্যদিকে ধানের শীষ পেয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ৩০৫ জন পরীক্ষার্থী।

ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটের হার ২০০১ সালের তুলনায় ২৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

সাক্কু প্রয়াত বিএনপি নেতা আকবর হোসেনের চাচাতো ভাই। এবার সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তার অনুসারীরা অবশ্য তাই মনে করেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ ধরনের বহিষ্কার কোনো তাৎপর্য বহন করে না। পরে এসব আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

২০১২ সালে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বর্জন করার পর, সাক্কু দল থেকে পদত্যাগ করেন এবং নাগরিক কমিটির ব্যানারে ভোটে অংশ নেন। ২০১৭ সালে বিএনপি তার হাতে দলের মার্কা ধানের শীষ তুলে দেয়।

২০১২ সালের দিকে বিএনপি যে সময়ে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়, সেই সময় সাক্কু তার দল থেকে নিজেই সরে যান। এবং নতুনভাবে নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৭ সালের দিকে বিএনপি তার দলের প্রতীক ধানের শীষ সাক্কুর হাতে অর্পণ করে। খবর নিউজ বাংলার।

About bisso Jit

Check Also

জিরো পয়েন্ট প্রস্তুত শত শত ছাত্র-জনতা, অপেক্ষা আ.লীগের

গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রোববার (১০ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ রাজধানীতে একটি বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *