Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এইবার সংসদে অর্থমন্ত্রীর উপরই নাখোশ হয়ে গেলেন ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা, জানা গেল কারণ

এইবার সংসদে অর্থমন্ত্রীর উপরই নাখোশ হয়ে গেলেন ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা, জানা গেল কারণ

আ হ ম মুস্তফা কামাল হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী। একজন অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থের সুষম ভারসাম্যের সমতা বজায় রাখেন। তিনি হলেন সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয়ের প্রধান। তার পদটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ। অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল এই সম্মানীয় পদে অধিষ্ঠিত হবার থেকে সততা ও নিষ্ঠার সহিত তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি মুস্তফা কামাল বাজেটে যে প্রস্তাব রেখেছেন, জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরাও তার সমালোচনা করলেন।

জাতীয় পরিষদে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা অর্থ পাচারকে বৈধ করার জন্য বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রস্তাবেরও সমালোচনা করেছেন। রোববার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী কামাল সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন৷

এই বাজেটের বিপুল ব্যয় মেটাতে অর্থ জোগাড়ের নতুন পথ খুঁজে পেয়েছেন অর্থমন্ত্রী বিদেশের সম্পদের ‘খালাস’ দিয়ে তা আনার ঘোষণা দিয়েছেন এর ফলে তালিকায় যুক্ত হতে পারে বিদেশের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। দেশের সরকারি রেজিস্টারে বৈধ আয়ের ওপর ১৫ থেকে ৭ শতাংশ কর দিয়েও ওই টাকা দেশে আনা যাবে। সেই আয়ের উৎস জিজ্ঞেস করা হবে না

এমন সুযোগ দেওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হচ্ছে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান রোববার সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করে করের মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত দেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিদেশে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

ফজলুর রহমান বলেন, যারা টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায়, মানি লন্ডারিং বিরোধী আইনের প্রয়োজন ছিল না। ”

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, বিদেশে অর্থ পাচারও বেড়েছে। একদিকে অর্থমন্ত্রী এই রাজ্যাভিষেকের সময়ে যে বাজেট পেশ করেছেন তাতে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে এদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, তা ঠেকানো যাচ্ছে না।

অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “মানুষ সন্দেহ করছে, বিপুল সংখ্যক মানুষ বিদেশে টাকা পাচারের চেষ্টা করছে। এটা বাস্তবায়িত হলে তাদের উদ্দেশ্য পূরণ হবে।

“যারা অবৈধভাবে অর্থ লুট করে তাদের বৈধ করার জন্য এটি আনা হচ্ছে।” ছাড় দেওয়া হলে মানুষ অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনে উদ্বুদ্ধ হবে। ”

পীর ফজলুর রহমান বলেন, একদিকে মানুষ সৎ উপায়ে অর্থ উপার্জনের লড়াই করছে, অন্যদিকে যারা লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাঠিয়েছে তারা সামান্য ট্যাক্স দিয়ে টাকা ফেরত আনবে, চোররাই হবে সেরা করদাতা। ”

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্ত বলেছেন, “টাকা ফেরত আনার প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা যায় কি না। এটা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না, যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছে, তারা যদি সৎ হতেন, তাহলে তারা টাকা দেশেই রাখত চোর ডন। ধর্মের কথা শুনবেন না, মনে রাখতে হবে।

কালো টাকা পাচারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “ব্যাংক ডাকাতি করে টাকা বিদেশে নিয়ে গেলে কী হবে? ডাকাতির মামলা হবে না? দুর্নীতির মামলা হবে না? যদি থাকে তাহলে? কারো বিরুদ্ধে মামলা, এ সময় টাকা ফেরত দিলে মামলা চলবে না? সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে এ সুযোগ নেওয়া যাবে না এমন বিধান থাকা উচিত। এই উদ্যোগটি ভারতেও নেওয়া হয়েছিল কিন্তু সফল হয়নি”

শামীম হায়দার বলেন, “চলতি অর্থবছরে সরকার অনুমোদিত বাজেটের চেয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নিয়েছে ব্যাংকগুলো থেকে। এক্ষেত্রে সংসদের পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। সরকার যদি সব টাকা ধার করে, তাহলে কী হবে? জনগণ নেবে? তাই এত উন্নয়নের পরও জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি।”

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান এক ডজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানান। তিনি বলেন, এটা করা হলে একদিনে দুর্নীতি ৫০ শতাংশ কমে যাবে এবং দুর্নীতি না কমলে সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন।

“দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। জনগণের পকেট কেটেছে। কেরানি, চালকের মতো ক্ষুদে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” কিন্তু যারা বড় বড় পদে, হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে, তাদের চুল ছোঁয়ার সাহস নেই।

ক্ষমতাসীন দলের সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, “পণ্যের দাম এবং মুদ্রাস্ফীতি “রপ্তানি” হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের সাহায্য বাড়াতে হবে এবং মানুষের চাহিদা সীমাবদ্ধ না করে আর্থিক নীতি সহজ করতে হবে।” আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও মহিউদ্দিন খান আলমগীরসহ অন্যরা।

উল্লেখ্য, মন্ত্রী পরিষদের মধ্যে অর্থমন্ত্রীর পদটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ। একজন অর্থমন্ত্রীর উপর অনেক দায়িত্ব থাকে বিশেষ করে দেশের অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যাতে ভালো একটি পর্যায়ে থাকে তার সব সময় সেইদিকে খেয়াল রাখতে হয়।

About Shafique Hasan

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *