পদ্মা সেতু নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্তের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প হাতে নিতে সময় লেগেছে প্রায় আট বছরের মতো। এরপর আর্থিক জটিলতায় কেটে যায় আরও প্রায় পাঁচ বছর। দেশীয় অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের পর ২০১২ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় এক যুগ পর আগামী ২৫ জুন চালু হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
আগামী ২৫ জুন বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন সেতুর দুই পাশে গণসংযোগ করবেন। এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মনে করি এটি হবে সর্বকালের সবচেয়ে বড় জনসভা, যাতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, আজ এই পদ্মা সেতু যাদের স্বপ্ন, এই পদ্মা সেতু যাদের প্রতিশ্রুতি, এই পদ্মা সেতুর জন্য যারা পরিবারের কাছে অপমানিত হয়েছেন তাদের স্বপ্ন পদ্মা সেতু। বাঙালির সামর্থ্যের পদ্মা সেতু আর অপমানের প্রতিশোধের এই পদ্মা সেতু।
রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
সকাল সোয়া ৮টার দিকে মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজারের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ফেরি ঘাট এলাকায় পৌঁছান ওবায়দুল কাদের। পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি দেখতে মুন্সীগঞ্জ থেকে মন্ত্রীর কনভয় নিয়ে মাদারীপুর যান তিনি। জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের সংসদ সদস্য নুর-ই-আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, ইকবাল হোসেন অপু এমপি, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড… রহিমা খাতুন, মাদারীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সময় বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা এপাশে (মাদারীপুর) ভাষণ দেবেন, ওপারে (মুন্সিগঞ্জ) সমাবেশ করবেন। সেদিন বেলা ১১টার মধ্যে আপনারা সবাই প্রস্তুত হয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সুত্রপাত ঘটেছিলো। এরপর ২০০৫ সালে পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়। পরের বছর ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন এবং পরিবেশগত প্রভাব প্রশমনের পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৮ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। ১৯ অক্টোবর ২০০৫ তারিখে, ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। তবে তৎকালীন সরকার ডিপিপি অনুমোদন দিতে পারেনি।