Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / কুসিক নির্বাচন: মেয়র পদে দুই স্বতন্ত্র গোপনে মাঠে নেমেছে, আওয়ামী লীগের ১৩ নেতা এখনো নীরব

কুসিক নির্বাচন: মেয়র পদে দুই স্বতন্ত্র গোপনে মাঠে নেমেছে, আওয়ামী লীগের ১৩ নেতা এখনো নীরব

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণার আর মাত্র একদিন বাকি। সোমবার ১৩ জুন থেকে প্রার্থীদের প্রচারণা বন্ধ থাকবে। প্রচারণার শেষ মুহূর্তেও প্রার্থীরা নিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। আর দুদিন পর ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ঢাকায় ডাকা আওয়ামী লীগের ১৩ নেতা এখনো নীরব। গতকাল পর্যন্ত দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামেননি তারা। রবিবার তারা একসঙ্গে শহরে ‘প্রদর্শনী’ কিছু করবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বিএনপির সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতা ‘ঘড়ি’ ও ‘ঘোড়া’ প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ও গোপনে মাঠে নেমেছেন।

মনিরুল হক, একিউএম বাহাউদ্দিন
শনিবার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। এসময় মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল পাশা সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। নিজাম যে বাড়িতে ইশতেহার ঘোষণা করেন সেটি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুর রশিদ ইয়াসিনের কার্যালয়।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিতে নিজাম উদ্দিন ও মো. মনিরুল হককে (সাক্কু) আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি। মনিরুল হক বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর নিজাম উদ্দিন কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছিলেন।

বহিষ্কৃত দুই নেতার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে এবং নির্বাচনী কাজে অংশ না নিতে দলের নেতা-কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে। তবে অনেকেই এই নির্দেশ মানছেন না।

‘মনোনীত দলের নেতারা এখনো মাঠে নামেননি। তারা সন্ধ্যায় সভা করে প্রচারণায় অংশ নেবেন বলে শুনেছি।
আরফানুল হক (রিফাত), আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী। জানা গেছে, নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিউল আলম, মহানগর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মনিরুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল পাশা সিদ্দিকী ও সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম শাহেদ প্রমুখ।

আমিরুল পাশা সিদ্দিকী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে গতকাল রাতে তিনি এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আজ ঘোড়া প্রতীকে শুভপুর ও সানরাইশ এলাকায় বড় ধরনের শোডাউন হয়েছে।

দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হকের পক্ষে কাজ করছেন। তাকে প্রায়ই মনিরুল হকের বাসায় দেখা যায়। এছাড়া কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম ও হুমায়ুন কবির, দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল হক ভূঁইয়া ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মজিবুর রহমানকেও নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা গেছে।

গতকাল রাতে নজরুল হক ভূঁইয় এক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, কমিটি ঘোষণার আগেই সাক্কুর ভাইয়ের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেছিলাম। ৩০ মে আহ্বায়ক কমিটিতে আমার নাম দেখে ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলাম।

উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ইতোমধ্যে পাঁচ প্রার্থীকে নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। তাদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নোটিশের জবাব দেওয়ার চেয়ে এই মুহূর্তে সাক্কু ভাইয়ের জন্য কাজ করা বেশি জরুরি বলে মনে করি।

এছাড়া কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে তিন যুগ্ম আহ্বায়ক ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ছয় সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তবে বেলা সোয়া ৯টা পর্যন্ত বৈঠকে আনজুম সুলতানা, তার ভাই মাসুদ পারভেজ খান ও মনোনয়নপ্রত্যাশী শফিকুল ইসলাম সিকদার ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। আঞ্জুম সুলতানাও, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি

আজ নামতে পারেন আ-লীগের ১৩ নেতা
মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও পাননি ১৩ নেতা, গতকাল পর্যন্ত নৌকা প্রতীকে মাঠে নামেননি। গত শুক্রবার তাদের ঢাকায় ডেকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত এই ১৩ জনের মধ্যে কেউ প্রচারণায় নেমেছেন এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক (রিফাত) এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়া দলের নেতারা এখনো মাঠে নামেননি। শুনেছি সন্ধ্যায় সভা করে প্রচারণায় অংশ নেবেন।

১৩ নেতার একজন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানাও প্রথম আলো ডটকমকে বলেন: শফিকুল ইসলাম সিকদার ছাড়া আর কেউ হাজির হননি।

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক প্রার্থী নুর উর রহমান মাহমুদ এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তার এক আত্মীয় ঢাকায় অসুস্থ। তিনি এর পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারেননি। আজ রবিবার ছুটি।

আরফানুল ও মনিরুলের গণযোগাযোগ
শনিবার সকাল ১০টায় গণমাধ্যমে আসেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক। তিনি প্রথমে নগরীর কমলাপুর এলাকায় ফরিদ গ্রুপের কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভোট চান।

বেলা ১১টার দিকে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুপুর ১২টায় তিনি নগরীর ভাটপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করেন।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের পরিবেশ অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে পুলিশ তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। নগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের বিজিবি টহল দল ৯টি পর্যবেক্ষণ দল ও ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত রয়েছে।

 

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *