বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য প্রবাসী রয়েছে যারা বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি খেলাধুলাও করে থাকেন। তাদের মাধ্যমে দেশ অনেক সুনাম অর্জন করে। অনেক সময় কিছু প্রবাসী খেলাধুলা করে অনেক ভালো অবস্থানে চলে চায়। তবে তারা প্রবাসে থাকলেও দেশের কথা ভুলতে পারেন না। আর দেশের দলে ডাক পাওয়ার আশায় থাকেন অসংখ্য প্রবাসী। নিজের দেশে ডাক পেলেই প্রবাসী খেলোয়াড়দের আনন্দের সিমা থাকে না। এবার তেমনি এক কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশ দলে ডাক পেলেন। এই সংবাদ প্রকাশ পাওয়ার পর তার নিজ বাড়িতে আনন্দ দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে এবার বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশ্যে এলো।
কিরগিজস্তানের ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের জন্য জাতীয় দলে ডাক পাওয়া কানাডা প্রবাসী ফুটবলার রাহবার ওয়াহেদ খান সেহরানের ঢাকার বনানীর বাসায় এখন যেন ঈদের আনন্দ। সেহরানের বাবা আকরাম আলী খান ও মা বনানীতে থাকেন। আকরাম-তানিয়া দম্পতির দুই সন্তানই (ছেলে) দেশের বাইরে থেকে পড়াশোনা করে। বড় ছেলে সেহরান কানাডায়, ছোট ছেলে রাফসানি ওয়াহেদ খান সায়ের যুক্তরাষ্ট্রে।
দুই ভাই দুই দেশেই ফুটবল খেলেন। বড় ভাই রাহবার স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসে কিরগিজস্তানে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টেই লাল-সবুজ জার্সি গায়ে অভিষেক হতে পারে তার। ছেলের জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর থেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের ফোন পাচ্ছেন আকরাম আলী খান। সেহরানের বাবা-মায়ের মধ্যে ভর করেছে যেন ঈদ-আনন্দ।
কোচ জেমি ডে’র পছন্দমতো দুই প্রবাসী ফুটবলার কানাডার সেহরান ও ফ্রান্সের নায়েব তাহমিদ ইসলামের সঙ্গে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছিল বাফুফে।
‘বাফুফে যোগাযোগ শুরুর পরই আমাকে আভাস দিয়েছিল সেহরান। ২৩ আগস্ট চিঠি পাওয়ার পর আমাকে নিশ্চিত করে। আর মিডিয়ায় খবর প্রকাশের পর থেকে মোবাইল সেট রাখতেই পারছি না-ফোন আর ফোন। আত্মীয়-স্বজন আর বন্ধু-বান্ধবরা অভিনন্দন জানাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আমরা কত খুশি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না ’- বলছিলেন সেহরানের বাবা আকরাম আলী খান।
কানাডায় স্পোর্টস অ্যান্ড অ্যাডুকেশনের ওপর স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশুনার পাশপাশি একটি চাকরিও করতেন সেহরান। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর দিনই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ‘সেহরানের ইচ্ছে ছিল ইউরোপে খেলার। সে কারণে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বড় দুটি ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেয়েও রাজি হয়নি। তবে আমি বলেছিলাম, কখনও বাংলাদেশ দলে ডাক পেলে অবশ্যই খেলবা। ওটা তোমার দায়িত্ব। সেহরানেরও স্বপ্ন ছিল একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলবে। ডাক পাওয়ার পর সেই স্বপ্ন পূরণের পথে সে’- ছেলেকে নিয়ে বললেন আকরাম আলী খান।
উল্লেখ্য, ছোট বেলা থেকে তারা দুই ভাই ফুটবল খেলতেন। তারা এক রকম ফুটবলের পাগল ছিল। দেশে যখন পড়াশুনা করতেন তখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দুই ভাই পাঁচ বছরের বড় ছোট। তাদের মধ্যে অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আর সারাখন তারা বাসার মধ্যে ফুটবল খেলে সবকিছু এলোমেলো করে ফেলতো। প্রবাসে যাওয়ার পরও তারা সুযোগ পেলেই ফুটবল নিয়ে নেমে পরতো। তবে এবার তাদের এক ভাইয়ের স্বপ্ন পূরন হতে চলেছে। এই সু-সংবাদে তাদের বাসায় আনন্দ দেখা দিয়েছে।