নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে স্বপ্নের পদ্মাসেতু গড়তে সক্ষম হয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। চলতি মাসের আগামী ২৫ জুন পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে পদ্মাসেতুর পেছনে এমন অনেকেরই অবদান রয়েছে, যাদের কথা হয়তো কেউ জানেনই না। আর তাদের মধ্যে রয়েছেন ফজল হক মুন্সি-ইলিয়াছ শেখ-আব্দুর রউফ খালাশী।
জাজিরা বেড়িবাঁধের পেছনে দিরা নাওডোবা অংশে পদ্মা সেতুর জন্য জমি দিতে হয় ফজল হক মুন্সিকে। তিনি বলেন, পৈতৃক সম্পত্তি ছিল ১৫ বিঘা জমি। ২০০৭ সালে আমি ১০ লাখ টাকা বিল পেয়েছি। এখন দাম হবে এক কোটি টাকা। সরকারের কাছ থেকে ৫ শতাংশ জমি কিনে বাড়ি তৈরি করছি। প্রতি শতাংশে ৬০ হাজার টাকা জমা দিয়েছি, মোট ৩ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ায় ভালো লাগছে। জমি চলে গেলেও একটা আনন্দ আছে। পদ্মা সেতুর জন্য আমাদের জমি চলে গেছে।
পদ্মা সেতুর জন্য জাজিরা অংশে জমি বরাদ্দকারী ইলিয়াস শেখ বলেন, আগে দুই বিঘার মধ্যে একটি বাড়ি ছিল। এখন আড়াই শতাংশের মধ্যে বাড়ি। সরকারের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের দেওয়া সব ক্ষতিপূরণ বসে বসে খরচ হয়। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য আমাদের জমি ছাড়া। না হলে আমরা জমি ছাড়তাম না। পদ্মা সেতু ভালো হচ্ছে। পদ্মা সেতুর কারণে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন হয়েছে। ফেরার পথে শান্তি, ভালো লাগছে। কিন্তু আমি আর্থিকভাবে খারাপ অবস্থানে আছি। কোন কাজ নেই।
শরীয়তপুরের বাসিন্দা আবদুর রউফ খালাশীর পরিবারকে সেতুর জন্য ২৭ বিঘা জমি দিতে হয়েছে। জমি নিয়ে কিছু সমস্যা থাকায় তিনি এখনো সরকারের কাছ থেকে টাকা পাননি। তবে পদ্মা সেতু চালু হবে, খুশি খালাশী।
জাজিরা ঘাটে তিনি বলেন, প্রায় ২৭ বিঘা জমি দিতে হয়ে গেছে। জমি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলা চলমান। আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে জমির টাকা পাব বলে আশা করছি। এখন আমি অন্যের ক্ষেত্রে কাজ করতে পারি, অন্যথায় আমি পারি না। সরকারের কাছ থেকে টাকা পেলে কিছু করতে পারব।
এদিকে ফজল হক মুন্সি-ইলিয়াছ শেখ-আব্দুর রউফ খালাশী ছাড়াও এমন অনেকেই রয়েছেন, যাদের জমির ওপর দিয়েই পদ্মা সেতু গেছে। তবে এতে তাদের কোনো দুঃখ নেই। বরং পদ্মা সেতুর জন্য জমি দিতে পেরে নিজেদেরকে ধন্য মনে করছেন তারা।