বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের জন্য সংসদ সদস্য হাজী সেলিম সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমান সময়ে কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পর মামলায় তাকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। ফের জামিনের জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন হাজি সেলিমের আইনজীবী। কিন্তু আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত সেই জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়। তবে তার আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে দিন ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারক এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। আদালতে হাজী সেলিমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।
তিনি বলেন, আমরা জামিনের আবেদন করেছি। চেম্বার জজ জামিন দেননি। আগামী ১ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে জামিন আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশে ২২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করে হাজী সেলিম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। গত ২৪ মে সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিম হাইকোর্টে বহাল থাকা ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিল করে ১০ বছরের সা”জা থেকে মুক্তি চান তিনি। জামিনের আবেদনও করেন তিনি।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জরুরি অবস্থার সময় সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৬ সালের ২৪ অক্টোবর লালবাগ থানায় হাজী সেলিম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল হাজী সেলিমকে দুদক আইনের দুটি ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সম্পত্তি বেআইনিভাবে অধিগ্রহণে সহায়তা করায় তার স্ত্রী গুলশান আরাকেও তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রের অনুকূলে প্রায় ২৬ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম ও তার স্ত্রী। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট তাদের রায় বাতিল করে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে দুদক। আপিলের শুনানির পর, হাইকোর্টের রায় ১২ জানুয়ারী ২০১৫ তারিখে খারিজ করা হয় এবং আপিল বিভাগ হাইকোর্টকে তাদের আপিলের পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেয়।
এদিকে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা প্রয়াত হন। এছাড়া এ মামলায় হাজী সেলিম জামিনে ছিলেন। আপিল বিভাগের আদেশের প্রায় ৫ বছর পর হাজী সেলিমের আপিল দ্রুত শুনানির জন্য হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। পুনঃশুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করেন।
২৫ এপ্রিল রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আদালতে পৌঁছায়। এরপর ২২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন হাজী সেলিম।
প্রসংগত, হাজী সেলিমের ছেলের ঘটনার কিছুদিন পর হাজী সেলিম দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার হন। প্রথম দিকে তার ১৩ বছরের সাজা হয়, পরবর্তীতে কমিয়ে তার দশ বছরের সাজার রায় দেয় আদালত। এই সাজায় তিনি বর্তমানে কারাগারে অন্তরীন রয়েছেন।
খবর ইউএনবি’র।