বেবি নাজনীন, বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গের এক সময়ের সব থেকে জনপ্রিয় শিল্পীর নাম। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি গানের জগতে ছিলেন বেশ সক্রিয়। পেয়েছেন অনেক সন্মাননাও। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ও রাজনীতিবিদ বেবী নাজনীনের জন্মদিন আজ। ১৯৬৫ সালের এই দিনে নীলফামারীর সৈয়দপুরে কৃষ্ণহীরক কিংবা ব্ল্যাক ডায়মন্ড খ্যাত এ সংগীত তারকার জন্ম। তিনি বিশিষ্ট বংশীবাদক প্রয়াত মনসুর সরকারের কন্যা। নিউইয়র্কে পারিবারিকভাবেই আজ জন্মদিন পালন করছেন তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশের রাজনীতি ও শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলেছেন বেবী নাজনীন।
দেশের জনপ্রিয় একজন সংগীতশিল্পী হয়েও রাজনীতিতে জড়ানোর পর শিল্পীজীবনে এর কী ধরনের প্রভাব পড়েছে, এমন প্রশ্নে বেবী নাজনীন বলেন, ‘রাজনীতির মতো বাংলাদেশের সংস্কৃতিও যেন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। আমরা যারা বিএনপির সঙ্গে যুক্ত তারা বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশে একটু কোণঠাসা অবস্থায় আছি। তাছাড়া আগের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে না। আমি চাকরি বা ব্যবসা করি না। তাই জীবিকার তাগিদেই অনুষ্ঠান করতে বিদেশে থাকতে হয় বেশিরভাগ সময়।’
দেশের শিল্প-সংস্কৃতির বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির কারণে বাজারজাতের ধারা হয়তো বদলেছে, কিন্তু আগামী দিনের শিল্প ও সংস্কৃতি সেভাবে উঠে আসতে পারছে না। সংস্কৃতিকে এখন পেশা হিসেবে নেয়ার সাহসও করা যায় না। কারণ এই মাধ্যমে এখন নতুন বিনিয়োগ নেই, নেই সুযোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা।’
বেবী নাজনীনের কথায়- ‘একটা-দুইটা গান বা সিঙ্গেল ট্র্যাকের মাধ্যমে নিজেদের চেষ্টায় কেউ কেউ হয়তো যুক্ত হচ্ছেন গানের বাজারে, কিন্তু সেভাবে বেশি দূর যাওয়া যায় না। মেধা বিকাশের পরিপূর্ণ কোনও প্ল্যাটফর্ম নেই।’
তিনি বলেন, ‘যারা সংগীতে নিজের ভাগ্য গড়তে চান, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শঙ্কিত। এ ধারার দ্রুত পরিবর্তন হওয়া দরকার।’
উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালে গানের ক্যারিয়ার শুরু করেন বেবি নাজনীন। আর এরপর থেকেই পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক জনপ্রিয় সব গান গেয়ে পেয়েছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। ‘ঘুম ভাঙ্গায়া গেল রে মরার কোকিলে’, ‘দু’চোখে ঘুম আসে না’, ‘কাল সারা রাত ছিল স্বপনেরও রাত’, ‘এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ব্ল্যাক ডায়মন্ড’খ্যাত এই শিল্পী।