সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে যে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তার মূলে যে কারণ রয়েছে, সেটা আবিষ্কার করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে একটি রাসায়নিক দ্রব্য বিশেষজ্ঞ টিম। তবে প্রাথমিকভাবে যে ধারণা করছে সেটা হলো, অতিরিক্ত তাপের কারণে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডে আগুন ধরে যায়। যার ফলে একটির পর একটি বি”স্ফোরণে সেই সকল রাসায়নিকের অন্য কন্টেইনার গুলোতেও আগুন লাগতে থাকে।
সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পারক্সাইড থাকার কারনে এতোটা বড় ধরনের বি”ষ্ফোরনের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা বলছেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে, ঐ সকল কন্টেইনারগুলোর কয়েকটিতে অত্যন্ত দাহ্য রাসায়নিক ছিল। এ কারণেই একাধিক বিস্ফো”রণ ঘটেছে, এতে অনেক প্রাণহানি ঘটেছে, এমনটাই ধারনা করছেন তারা।
শনিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর অদূরে ডিপোতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত চার শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, কিছু মানুষের মৃ/’তদেহ এমনভাবে পুড়ে গেছে যা শনাক্ত করা কঠিন।
হাসপাতালগুলো আহ”ত মানুষ উপচে পড়ছে। প্রয়াতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশ/’ঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু একটি বিস্ফো”রণ ছিল না। কিছুক্ষণ পর বিস্ফো’/রণ হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুন একটা থেকে অন্য কন্টেইনারে যাওয়ার সময় একে একে বিস্ফো’/রিত হচ্ছে।
ডিপোটি প্রায় ২৬ একর এলাকা জুড়ে রয়েছে। ধারণা করা হয় সেখানে কয়েক হাজার কন্টেইনার ছিল। এই পাত্রে হাইড্রোজেন পারক্সাইড ছাড়া অন্য রাসায়নিক রয়েছে বলে মনে করা হয়। রপ্তানির জন্য তৈরি পোশাকও ছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও আ”গুন নেভাতে গিয়ে এত কর্মী প্রয়াত হয়নি।
কর্মকর্তারা বলছেন, সীতাকুণ্ডের মতো শিল্প এলাকায় আ”গুন মোকাবেলা করার জন্য অগ্নিনির্বাপকদের প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম রয়েছে। কিন্তু অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ডিপোতে রাসায়নিক ভর্তি কন্টেইনার সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। দমকলকর্মীরা বলেছেন যে তারা যখন আগুন নেভাচ্ছিলেন, তখন একের পর এক বি’স্ফো/রণ ঘটে, যার ফলে সামনের সারিতে কাজ করা দলটি প্রয়াত হন।
একজন দমকলকর্মী বলেছেন, “”আমরা যদি জানতে পারতাম যে এখানে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিক পদার্থ আছে তাহলে আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারতাম। তাহলে আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারতাম। রসায়নবিদরা তাদের সরঞ্জাম নিয়ে আগেই সেখানে যেতে পারতেন।”
ঘটনাস্থলে কোনো মালিক নেই বলেও অভিযোগ ফায়ার ব্রিগেডের। একজন শ্রমিক বলেন, “আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি এবং খোঁজাখুঁজি করেও তাদের খুঁজে পাইনি। এ কারণেই এসব হতা’হ/তের ঘটনা ঘটেছে।”
পরিস্থিতি বুঝে রাজধানী ঢাকার বিপ’/জ্জ’নক পদার্থ বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বিস্ফো’/রণের ফলে গ্যাস ও ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, স্থানীয়দের চোখ ও চামড়া পুড়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রয়াতদের সারি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ইতিমধ্যে যারা এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাঁদেরকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে সরকারের এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।