বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্র্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকারের অধীনে বিরোধী দল বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না বলে জানায় দলটি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরেপক্ষ সম্ভব নয়। কিন্তু সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহন করায় তাকে দল থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। এবার সাক্কুর বিরুদ্ধে যে মন্তব্য করল সংসদ সদস্য আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রকাশ্যে কুমিল্লার সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করে আসছেন। এবার দলীয় সভায় সাক্কুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ‘বো/মা’ ফাটালেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আ. ক. ম বাহাউদ্দিন বাহার। বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের নকশা অনুমোদনের জন্য সাক্কু ৮০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বাহার।
শনিবার রাতে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এমপি বাহার। বৈঠকে তিনি নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। সেখানে উপস্থিত দলের একাধিক নেতাকর্মী জানান, আলোচনার একপর্যায়ে এমপি বাহার সাক্কুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ তোলেন। বাহার জানান, শহরের প্রাণকেন্দ্রে কান্দিরপাড় দীপিকা সিনেমা হলের জায়গায় রূপায়ন টাওয়ারের নকশা অনুমোদনের জন্যও সাক্কু ৬০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। পরে রূপায়ন গ্রুপের মালিক বিষয়টি তাকে জানালে তিনি উদ্যোগ নেন এবং সিটি করপোরেশন থেকে নকশা অনুমোদনের ব্যবস্থা করেন।
এমপি বাহার আরো বলেন, শুধু রূপায়ণ টাওয়ার নয়, শহরের সব টাওয়ারের নকশা অনুমোদনের জন্য ঘুষ নিয়েছেন। টেন্ডারে অনিয়ম প্রসঙ্গে এমপি বাহার বলেন, আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সহযোগিতায় শহরের উন্নয়নে তদবির করেছি, কিন্তু তিনি (সাক্কু) এই টাকা লুট করতে চেয়েছেন। আমি যখন ভারতে ছিলাম, তিনি নির্বাচনের সময়সূচির আগে তড়িঘড়ি করে ৪১২ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করেছিলেন, যা তিনি করতে পারেননি। বিষয়টি জানতে পেরে আমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দরপত্র বাতিলের ব্যবস্থা করি। তিনি (সাক্কু) দশ শতাংশ খাওয়ার জন্য এই টেন্ডার ডেকেছেন।
বৈঠকে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিম ও আদর্শ সদর উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।। এ ব্যাপারে এমপি বাহারের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, তিনি (বাহার) আমার বড় ভাইয়ের মতো। শহরের উন্নয়নে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি, এমন কথা আগে কখনো শুনিনি। এখন নির্বাচন এসেছে, এসব বলার কারণ বুঝতে পারছি না।
প্রসঙ্গত, সাবেক মেয়র সাক্কুর বিভিন্ন দুর্নীতির সম্পর্কে তুলে ধরেন সদরের সংসদ সদস্য আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি আরও বলেন, মেয়র থাকা অবস্থায় সাক্কু অনেক কাজের অনুমোদনের ঘুষ গ্রহন করেছেন।