সম্প্রতি চট্রগ্রামের সীতাকুন্ডে অগ্নিকান্ডে সম্পূর্ণ দেশ হতভম্বিত। এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি বাংলাদেশে। শুধু বাংলাদেশেই নয় এমন দুঃখজনক ঘটনা দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পরেছে। কন্টেইনারের মধ্যে ছিলো কার্বনডাই পার অক্সাইড। এইটা এক ধরণের রাসায়নিক তরল পদার্থ। সম্প্রতি জানা গেল সীতাকুন্ডের ( Sitakunda ) অগ্নিকান্ডে ৯০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিজিএমইএর ( BGMEA ) সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম ( Rakibul Alam ) বলেন, “আমরা আমাদের সদস্যদের ডিপোতে কার পণ্য ছিল তা জানানোর জন্য একটি সার্কুলার জারি করেছি। আমরা অনুমান করছি যে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার রপ্তানি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আমরা আরও তদন্ত করছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।” বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ( Bangladesh Garment Manufacturers Exporters Association ) (বিজিএমইএ) নেতারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ( Sitakunda, Chittagong ) বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তারা বলছেন, এ ঘটনা রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
রোববার বিকেলে ( afternoon ) দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বিজিএমইএর ( BGMEA ) সহসভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সদস্যদের ডিপোতে কার পণ্য ছিল তা জানানোর জন্য একটি সার্কুলার জারি করেছি।” আমরা অনুমান করি যে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার রপ্তানি সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গেছে। আমরা আরও তদন্ত করছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এ ঘটনা দেশের রপ্তানিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বড় ধরনের প্রভাব আশা করছি। তারপর আমরা সব ক্রেতা-রপ্তানিকারকদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব এ বিষয়ে কী করা যায়। ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইসিডিএ) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, আমরা মনে করি ডিপোতে ক্ষয়ক্ষতি ১১ কোটি কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে (প্রতি ডলার ৬৯.৯০ টাকায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকা)।
‘এর মধ্যে রপ্তানি কনটেইনারে ৪৫ মিলিয়ন ডলার (৪০৪ কোটি টকা) ও আমদানি পণ্যের কনটেইনারের ক্ষেত্রেও ৪৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি এবং অন্তত ২০ মিলিয়ন ডলারের (১৮০ কোটি টাকা) খালি কনটেইনারের ক্ষতি হয়েছে। যদিও সঠিক নিরূপণ করা এখনও সম্ভব হয়নি। সেখানে হিমায়িত খাদ্য পণ্যের পাশাপাশি তৈরি পোশাকও ছিল।’
রোববার রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায় একটি কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ হয়েছে। তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন কর্মী রয়েছেন। আগুনে দগ্ধ ও আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা যারা আগুন নেভাতে এসেছিলেন তাদের রাসায়নিকের উপস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়নি, কোম্পানির কর্মকর্তার অভিযোগ। ডিপো কর্তৃপক্ষ অবশ্য রাসায়নিকের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিস পানির পরিবর্তে নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহারের কথা শোনেনি বলে অভিযোগ করেছে। ডিপো ম্যানেজার নাজমুল আক্তার খান নিউজবাংলাকে জানান, ডিপোতে চার হাজার ৩০০ কনটেইনার ছিল। এর মধ্যে খালি ছিল তিন হাজার। বাকি ১৩০০ টি পাত্রে বিভিন্ন রপ্তানি পণ্য রয়েছে। যার বেশির ভাগই পোশাক খাতের রপ্তানি পণ্য।
উল্লেখ্য, সীতাকুন্ডের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি অনেক হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। স্বজন হারিয়ে পরিবারের মানুষেরা এখন নির্বাক হয়ে গেছে। স্বজন হারানোর যে কতোটা কষ্ট সেইটা শুধু তারাই জানে যারা হারিয়েছে। চট্রগ্রামসহ সম্পূর্ণ দেশ জুড়ে চলছে শোকের মাতম।