আর কিছুদিন পর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ বাংলার মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। আর এই সেতু উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়, বিশেষ করে বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয় এই প্রকল্পটি হবে আ.লীগের একটি হরিলুটের প্রকল্প। এদিকে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দাওয়াত দেয়া হবে কি-না সে বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার করলেন আইনমন্ত্রী।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো বা দাওয়াত দেওয়ার বিষয়ে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
রোববার ঢাকার জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের ১৪৬তম রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে দুটি শর্ত রয়েছে, তা হলো- তিনি বাংলাদেশের ভেতরে চিকিৎসা নিবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। সে কারণে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় তাকে আমন্ত্রণ জানাতে কোনো আইনি বাধা নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে কারও বিরুদ্ধে কোনো ‘অ্যাকশন’ নেয়নি। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়। দুদকের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেগুলো সম্পন্ন হয়েছে। এখন যদি তারা বলে যে আওয়ামী লীগ সরকার এসব মামলা করেছে, তাহলে আমার মনে হয় তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে দোষারোপ করছে যে, সেটাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আওয়ীমী লীগ সরকারকে দোষারোপ করছে। তাদের দোষারোপ করাটা ভিত্তিহীন।
আইনমন্ত্রী বলেন, দুদক একটি স্বাধীন সংস্থা। ২০০৪ সালের আইনের পর বিএনপি সরকার ২০০৬ সাল পর্যন্ত দুদককে চেয়ার-টেবিলও দেয়নি। বাস্তবে তা ২০০৭ সালে কার্যকর হয়।
বিচার বিভাগের বাজেট বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো যুক্তিসঙ্গত প্রয়োজনে অর্থ দিতে কার্পণ্য করবে না। জাতীয় বাজেটে আইন মন্ত্রণালয়কে যে অর্থ দেওয়া হয়েছে তা এর আগে কোনো সরকার দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই প্রথম বিচারকদের প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে। সুপ্রিম কোর্টে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পের একটি অংশ বাস্তবায়নের জন্য সরকার ২১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এটি আইন মন্ত্রণালয়ের নামে বরাদ্দকৃত মূল বাজেটের বাইরে।
এর আগে প্রধান বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য প্রণীত হয়নি। সাইবার অপ”রাধ রোধে এ আইন করা হয়েছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মোঃ গোলাম সারোয়ার ও কোর্স পরিচালক মীর মোঃ ইমতাজুল হক বক্তব্য রাখেন।
এই বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, দুদককে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। যেটা আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর করেছে। দুদক স্বাধীনভাবে কাজ না করতে পারলে দেশ দুর্নীতি মুক্ত হতে পারবে না। তাই দুদকের বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে বর্তমান সরকার এটিকে একটি শক্তিশালী সংস্থা হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।