সিরিয়াল কিলার নামটি অনেকের কাছেই বেশ পরিচিত। তবে এবার নতুন একটি শব্দের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেই। আর তা হলো সিরিয়াল ডেটার। যিনি ডেটিং নিয়েই ব্যস্ত থাকেন সব সময়ই। ৩৩৫ জনের সাথে ডেটিং করে সিরিয়াল ডেটারের তকমা পেয়েছেন এই ব্যক্তি। তবে লক্ষ্য পূরণের জন্য খুঁজছেন আরও ৩০ জনকে। কারণ ৩৬৫ জনের সাথে ডেটিং করাই এই ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাকে বলা হচ্ছে ‘ডেটিং কিং’। কেউ আবার বলছেন ‘৩৬৫ ডেট ম্যান’।
তবে এতো জনের সাথে ডেটিং করলেও বিশ্ব প্রেমিক কথাটা বোধহয় তামিল অভিনেতা, পেশাদার নৃত্যশিল্পী, সুন্দর রামুর ক্ষেত্রে খাটে না।
কারণ তার এই ডেটিং আর দশটা সাধারণ প্রেমের মতো নয়। ডিভোর্সি এই অভিনেতার লক্ষ্য মনের মানুষ খুঁজে বের করা নয়। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে কেন এতো জনের সাথে ডেট করছেন তিনি? উত্তর রামুর মুখেই শোনা যাক।
রামু বলেন, আমি ভীষণ রোমান্টিক মানুষ। প্রতিদিনই ভালোবাসা খুঁজে ফিরি। তবে ৩৬৫ জনের সাথে ডেটিংয়ের পেছনে রয়েছে অন্য কারণ।
রামু জানান, তিনি এমন পরিবারে বড় হয়েছেন যেখানে নারীদের শ্রদ্ধা করা হতো। তাদের সাথে সবসময় ভালো আচরণ করা হতো। তিনি যে স্কুলে পড়েছেন সেখানেও নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ছিল না। কিন্তু স্কুলের পাঠ চুকিয়ে যখন বাইরের দুনিয়ায় পা রাখলেন, দেখলেন নারী-পুরুষের বৈষম্যের করুণ চিত্র। বিষয়টি তাকে ভাবিয়ে তোলে।
তবে ২০১২ সালে দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা ভীষণভাবে প্রভাবিত করে তাকে। এই ঘটনার পর অনেক রাত তিনি ঘুমাতে পারেননি। এমনকি দেশের বাইরে গেলেই কেন ভারতীয়রা নারীদের সাথে এতো বাজে আচরণ করেন- এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন বারবার।
তিনি সবসময় ভাবতেন লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা সরকার বা এনজিও মতো কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ। কিন্তু এক সময় তিনি ভাবতে শুরু করেন কীভাবে তিনি এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে পারেন। ঠিক তখন তার মাথায় ৩৬৫ জন নারীর সাথে ডেটিংয়ের চিন্তা আসে।
তার মতে, ডেটিং নিয়ে অনেক ধারণা প্রচলিত আছে। কিন্তু নারীরা তো শুধু মাংসপিণ্ড নয়। তারা আলাদা সত্তা। আর এই বিষয়টি তুলে ধরাই ছিল রামুর লক্ষ্য।
২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর রামু তার এই ৩৬৫ জনের সাথে ডেটিংয়ের পরিকল্পনা জানান। এক মিনিটের মধেই তিনি এক বান্ধবীর কাছ থেকে পরদিন দুপুরে লাঞ্চ ডেটিংয়ের প্রস্তাব পান। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় তার এই ৩৫৬ জনের সাথে ডেটিংয়ের প্রথম ধাপ। তার সঙ্গে ডেটিংয়ে আসা নারীরা তার জন্য রান্না করে আনেন বা তাকে টাকা দেন। সেই খাবার আর টাকা তিনি দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করেন।
এ পর্যন্ত নিজের ১০৫ বছর বয়সী দাদি, তার বাসায় ময়লা সংগ্রহ করতে আসা নারী, স্থানীয় ফল বিক্রেতা, ৯০ বছর বয়সী আইরিশ নান, অভিনেত্রী, মডেল, ইয়োগা প্রশিক্ষক, আন্দোলনকর্মী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার নারীর সাথে ডেটিং করেছেন তিনি। শুনেছেন তাদের জীবনের গল্প।
এ দিকে তার এই ঘটনা স্যোশাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়লে সবখানে বেশ তোলপার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে তার এই অদ্ভুত শখের ব্যাপারটা অনেকের কাছেই বেশ অবাক লেগেছে।