ক্ষমতাসীন সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট, দুর্নীতি, টাকা পাচার করছে বলে দাবি বিএনপি। মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করছে সরকার। আর এসব কারনে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সরকারের ( government ) দেশের জনগনের কথা ভাবে না সরকার তার দলের নেতাদের পকেট ভরার জন্য ব্যস্ত।
পদ্মা সেতু ক্ষমতাসীন দলের লুট, আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ( BNP ) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির ( Advocate Ruhul Kabir ) রিজভী।
প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আপনি কি অন্য দেশের উচ্চ সুদে এই পদ্মা সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব নিচ্ছেন? এটা লুটের প্রতীক, আত্মসাতের প্রতীক, দুর্নীতির প্রতীক। আজ যে শিশুর জন্ম হয়েছে তারও মাথায় ৯৬ হাজার টাকা ঋণের বোঝা। তাকেও পরিশোধ করতে হবে। চীন থেকে চড়া সুদে লোন নিয়ে বলছেন নিজস্ব অর্থায়নে। এর মাধ্যমে আপনি পুরো জাতিকে অন্য জাতির কাছে ঋণী করে করছেন। ‘
বুধবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আপনার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে কি পদ্মা সেতুর টাকা বের হয়েছে? আপনি চীন থেকে উচ্চ সুদে টাকা নিয়েছেন। আপনি চীন থেকে ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। এই পদ্মা সেতুতে যে প্রতীকী বিষয়গুলো উঠে এসেছে তার মধ্যে একটি হলো আওয়ামী লীগের দুর্নীতি। কারণ, বিশ্বব্যাংক খুব কম সুদে এই সেতু নির্মাণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তখন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা নিজের প্যাডে টাকা চেয়েছে। বলেছে, এই টাকা অমুক কোম্পানিকে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা জড়িত থাকলে কি প্রমাণ হয় না যে তিনি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত? ‘
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, “আপনি কোনো বৈধ সরকার নন। তাই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। আপনি এবং আপনার মন্ত্রীরা যেভাবে কথা বলেন তাতে প্রমাণ হয়, আপনাদের ভোটের প্রয়োজন নেই। রাতের ভোট, ভোটারবিহীন নির্বাচনের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে আপনাদের শাসনামলে। আওয়ামী শাসন মানেই রাতে ভোট, নিশিরাতে ভোট।’
বর্তমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব অর্থায়নে কিছু করার নজির নেই দাবি করে রিজভী বলেন, নিজের তহবিল দিয়ে তিস্তা ব্যারাজ করার উদাহরণ শুধু জিয়াউর রহমানেরই আছে। আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) উদাহরণ দুর্নীতি, লুটপাট আর হরিলুট করার। চীন থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সাহস দেখাচ্ছেন। ‘
তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি সরকার তো বৈধ নয়, আওয়ামী লীগের নেতারাই তো বলেছিলেন- ডিল করে ক্ষমতায় এসেছি।২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল তখন তাদের দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জলিল সাহেব বলেছিলেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় বেশিরভাগই ডিজিএফআইয়ের লোক।
শেখের পরিবারের কেউ মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেনি মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে তাদের কোনো অবদান নেই।না শেখ হাসিনা, না তার স্বামীর। প্রয়াত শেখ মুজিবুরের ছেলে কামাল গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। কিন্তু তাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন, তার যদি কোনো ক্ষতি হয়। কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধে এই পরিবারের অবদান নেই।আর রণাঙ্গনে সব মুক্তিযোদ্ধা বিএনপি করেছে। যেমন ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমসহ অনেকে।এ কারণে আওয়ামী লীগ এত ঈর্ষান্বিত।কারণ মুক্তিযুদ্ধে শেখ পরিবারের কোনো ভূমিকা নেই।’
সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেক যুবদল নেতা মোর্তাজুল করিম বদরু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সাবেক কৃষকদল নেতা শাহজান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সরকার নিজেস্ব অর্থায়া্নের নামে চীনের থেকে উচ্চ সুদে পদ্মা সেতু নির্মান করেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকার দেশের মানুষের উপর ঋণের বোঝা চাপিয়েছে। সরকার উন্নয়নের নামে জনদুর্ভোগ বাড়াচ্ছে।