গত ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে সুজনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন লাভলী আক্তার সুমাইয়া। দাম্পত্য জীবনে বেশ ভালই কাটছিল তাদের সময়। যদিও তাদের সংসারে কোনো সন্তান ছিল না, তবে এ নিয়ে বিন্দু মাত্রও অখুশি ছিলেন না তারা। কিন্তু হঠাৎ করেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন লাভলী। আর এরই ধারাবাহিকতায় দাম্পত্য জীবন ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছাড়ার খবরে রীতিমতো বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন স্বামী সুজন।
সে তার চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছে না। এখন তিনি তার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আদালতের সহায়তা চান। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টী ইউনিয়নের ঠ্যানঠেনিয়ার ভাবুকদিয়া গ্রামে। স্বজনরা জানায়, সুজন সিকদার টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর গ্রামের নয়ন সিকদারের ছেলে।
লাভলী আক্তার সুমাইয়া সালথা উপজেলার ভাবুকদিয়া গ্রামের মান্নান মোল্লার মেয়ে। বিয়ের পর থেকে সুজন তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন।
এদিকে সুজন কিছুদিন কাতারে ছিলেন। দেশে ফিরে ফরিদপুর শহরের একটি রড কোম্পানিতে ফোরম্যানের চাকরি নেন। তিনি যথারীতি শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন সন্তান ছিল না। তবে তারা এতে অখুশি ছিলেন না। সম্প্রতি সুমাইয়ার প্রেমের অভিযোগ ওঠার পর তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। গত ২৬ মে সুজন বাড়ি ফিরে দেখেন তার স্ত্রী বাড়িতে নেই। পরে সুজন জানতে পারে সুমাইয়া আলামিন শেখ নামে এক নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে সুমাইয়া নগদ ৩ লাখ টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও তার ব্যবহৃত সব কাপড় নিয়ে যায়।
স্বজনদের মাধ্যমে স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ফরিদপুর জজ আদালতের ৬ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করেছেন সুজন। সুমাইয়াসহ তার কথিত প্রেমিক আলামিন শেখকে আসামি করা হয়েছে। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাশার অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
আলামিনের সৎ ভাই দুলাল শেখ বলেন, আমি ৫ বছর আগে আমার ছোট ভাই আলামিনকে বিয়ে দিয়েছিলাম। তাদের একটি ৩ বছরের মেয়ে রয়েছে। তবে স্ত্রীর সঙ্গে মিল নেই আলামিনের। তার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে মামলা রয়েছে। এখন আবার অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছে। তিনি জানান, তিনি আলামিনকে সুজনের স্ত্রীকে ফিরিয়ে দিতে বলেছেন।
এদিকে নিজের স্ত্রীকে হারিয়ে সুজন সিকদার বলেন, সন্তান ছাড়া সংসারে কমতি ছিল না কিছুরই। সুমাইয়াকে ভালবেসে সবকিছু করেছি। তারপরও আমার স্ত্রী গোপন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। কয়েক মাস ধরে মোবাইলে তাদের যোগাযোগ চলছিল। রোজার মধ্যে এমন বিষয় ধরা পড়লে আমি শ্বশুরকে জানাই। আত্মীয় হওয়ার সুবাদে আলামিনের যাতায়াত ছিল এ বাড়িতে। সে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সুমাইয়াকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গেছে। স্ত্রীকে আমি অনেক ভালোবাসি, তাকে ফেরত পেতে চাই।
এদিকে এ ব্যাপারে লাভলীর বাবা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় আলামিনের বাসায় গিয়ে তার পরিবারকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করলেও তারা তারা কোনো সাহায্য করেননি। অন্যদিকে মুঠো ফোন বন্ধ থাকায় নিজ মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেন লাভলীর ববা।