Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / স্বৈরাচার বিরোধী ৯০র ফরম্যাটে এবার আন্দোলনের ছক বিএনপির

স্বৈরাচার বিরোধী ৯০র ফরম্যাটে এবার আন্দোলনের ছক বিএনপির

বিএনপির দাবি, এ দেশে এখন আওয়ামী সরকার বিএনপির ( government belongs BNP ) সাথে নি/ ষ্ঠুর আচারন করছে। দলীয় স/ ন্ত্রাসীদের হাতে নি/ র্যাতিত হচ্ছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিএনপি ও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে নি/ র্যাতন-নি/ পীড়নের মাধ্যমে আ/ তঙ্কিত করে এক ভ/ য়াবহ দুঃশা/ সন চালিয়েছে। তবে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। যে কোনো মুহূর্তে জনগণের শক্তিশালী স্রোত আওয়ামী লীগ ( Awami League ) সরকারকে পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবে।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরপেক্ষ সরকারের ( government ) এক দফা দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ( BNP. ) এ জন্য দলের শীর্ষ নেতারা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এদিকে মাহমুদুর রহমান মান্নার ( Mahmudur Rahman Mannar ) নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির ( Bangladesh Labor Party ) সঙ্গে বৈঠক করেছে দলটি। তবে সমমনা দলগুলো বিএনপির দাবির সঙ্গে একমত হলেও এখন বৃহত্তর ঐক্য নেই। সবাই অভিন্ন দাবি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে আগ্রহী। তাই বিএনপি বলছে, কর্মসূচির ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলাই যুক্তিযুক্ত। যা নব্বইয়ের দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের বিন্যাসের মতো। বিএনপি ইতোমধ্যে নির্বাচন-পরবর্তী সরকার গঠনের ফর্মুলা দিয়েছে। এতে বলা হয়, নির্বাচনের পর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। আর যেহেতু সব বিরোধী মতের লক্ষ্য এক, সেহেতু সংলাপের মাধ্যমে আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়ন করা হবে।

এভাবেই আমরা বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলি। তবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন করা হবে। পরে আন্দোলন শেকড় ধরলে প্রয়োজনে মঞ্চে আসতে পারে। এরশাদের বিরুদ্ধে এর আগেও আলাদা আন্দোলন হওয়ায় এটাই সঠিক পন্থা বলে মনে করছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে নব্বই দশকের ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনকে সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।

এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর জোট ও ঐক্যফ্রন্টের বিষয়টি আরও পরিষ্কার করবে বিএনপি। যদিও ইতিমধ্যে জোটের দলগুলোকে আলাদা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামার জন্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। তবে সংলাপের অংশ হিসেবে সব দলের সঙ্গেই বৈঠক করবেন বিএনপি’র নেতারা। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক বক্তব্যে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সকলের সঙ্গেই আলোচনা হবে। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও আলোচনা হবে। আর ২০ দলীয় জোট তো এখন পর্যন্ত বিলুপ্ত করা হয়নি। এই জোটের কী হবে সেটা এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ফাইনালাইজড করবো।

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ আরও কয়েক দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের একটি রূপরেখাও তৈরি করছে বিএনপি। দলটির আন্দোলনের রূপরেখার মধ্যে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, সব দলের মতামতের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার, খালেদা জিয়ার মুক্তি, সাজা বাতিল করে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনাসহ আরও বেশ কয়েক দফা দাবি থাকবে। সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সংলাপেও এসব দাবি নিয়ে আলোচনা হবে। দলটির নেতারা বলছেন, এবার সরকারের ফাঁদে আর পা দেয়া হবে না। নির্বাচনের বাকি আরও বছর দেড়েক। এরই মধ্যে বড় ধরনের কর্মসূচি দিয়ে এখনই মাঠে নামলে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি সরকার তাদের অনুকূলে নিয়ে নেবে। ইতিমধ্যে বিএনপি’র সারা দেশের বিক্ষোভ কর্মসূচিগুলোতে হামলা হয়েছে। আবার বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নামেই মামলা করা হচ্ছে। তাই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে চায় বিএনপি। দলটির নেতাদের ভাষ্য- আপাতত মাঠে বড় কোনো কর্মসূচি দেবে না তারা। সময়মতো কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে চায় দলটি। এর আগে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চলমান নানা ইস্যুতে বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবে তারা।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান মানবজমিনকে বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফরম্যাটতো বরাবরই একটা। কাজেই এখানে আপনি চাইলেই তো সেটা বদলাতে পারবেন না। এখানে মিছিল-মিটিং হবে, সভা-সমাবেশ হবে, প্রতিবাদ হবে, মানববন্ধন হবে, হরতাল হবে। এগুলোইতো আন্দোলনের পথ। এভাবেই সব সময় আন্দোলন হয়ে আসছে। এমনটা এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় হয়েছে। এর বাইরে আন্দোলন কীভাবে করা যায়- এ পরামর্শ যদি থাকে কেউ সেটা দিলে আমরা বিবেচনা করবো।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে কখন আন্দোলন শুরু হয় সেটা কেউই বলতে পারবে না। আন্দোল তো আর বলে কয়ে হয় না। এটার কোনো দিনক্ষণও নেই। আন্দোলনের গতি- প্রকৃতি নির্ণয় করা সম্ভব না।

ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমারো মনে হয় বিএনপি ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ফরম্যাটেই এগোচ্ছে। আর বিএনপি তো জাতীয় সরকারের একটা ফর্মুলা দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- সব বিরোধী দলের লক্ষ্য একটাই। বর্তমান সরকারে পদত্যাগ আর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। এর জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই। সেটা যে ফরম্যাটেই হোক।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আন্দোলনের মূল সুরটা এক। তবে আন্দোলনটা কোন ফরম্যাটে হবে- সেটা আন্দোলন শুরু হলেই বলা যাবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা কাজ করছি। আন্দোলনটা কীভাবে হবে সেটা বলার মতো সময় এখনো হয়নি। কারণ আমরা যে জোট করার চেষ্টা করছি সেটা কোনো রূপ পায়নি। বিএনপি যে কথা বলেছে সেটাও এখনো মাঠে গড়ায়নি। এসব সমস্যা নিয়ে আমরা যদি একটা জোট করি আর বিএনপি তার মতো জোট করে অথবা একসঙ্গে আন্দোলন এসব বিষয়ে কথা বলবো, না হয় যুগপৎ করবো। সব ধরনের রাস্তাইতো খোলা আছে।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, আমাদের কর্মকাণ্ড কোনো ঘটনার বা ইতিহাসের পরিপূরক হচ্ছে কিনা সেটা আমি বলবো না। এটা আশপাশ থেকে যারা পর্যবেক্ষণ করবেন, বিশ্লেষণ করবেন তারা এটা সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একেবারেই স্পষ্ট সেটা হচ্ছে, দেশে যে কর্তৃত্ববাদী শাসন-শোষণ চলছে সেই শোষণ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে চাই। আগামীতে মানবিক একটা বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। একটা সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই। এজন্যই একটা প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। আর আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈরিতা নেই। এই সময়ে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলের মত এক ও অভিন্ন যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। এই মতে যারাই ঐক্যমত তারাইতো আন্দোলন করার অধিকার রাখে।

কিছু নেটিজেন এই বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে বিচার দিতে না পারলে তারা সফল হলে জনমতের প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হবে। সেই সময় ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা ন্যায়বিচার ও মানবতাকে উপহাস করেছিল এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রভাবকে আরও খারাপ করেছিল। গত এক দশকে বিরোধী দল বিদ্রুপের ধারালো ধারে আটকে আছে। এবার সহিংস আন্দোলন হবে, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হবে।

About Nasimul Islam

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *