কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রায় সময় অভিযোগ উঠে আসে তারা ঘুষ ছাড়া কাজ করতে চান না। এমনকি এই সকল অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে সাধারণ মানুষরা হয়রানির শি’কার হন। এই সকল অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও অনেক সময় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। আর এবার এক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি ঘুষ ছাড়া কাজ করতে চান না। তার সেই ঘুষের ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অবশেষে সেই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ঘুষ নেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী এম এস আনোয়ারুল হককে বদলি করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বলদি আদেশ দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ চিঠি এসে পৌঁছিয়েছে বলে জানা গেছে।
দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল ইসলাম খান বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী নগদ টাকা ঘুষ নেওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে এবং উপজেলার সকল চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাগণ তার বিরুদ্ধে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না মাসিক সমন্বয় সভা প্রকাশ্যে বক্তব্য রেখেছেন। উপজেলা প্রকৌশলী দাউদকান্দি থেকে হবিগঞ্জে বদলির আদেশের চিঠি আজ বিকালে আমি পেয়েছি।
দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী এম এস আনোয়ারুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি বারবার কল কে’টে দেন।
এদিকে, ইউপি চেয়ারম্যানদের থেকে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক দাউদকান্দিতে যোগদানের পর বিভিন্ন রাস্তাঘাট, কালভার্ড ও সেতুর কাজ চলাকালীন ঠিকাদার ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেন। উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় ‘প্রকৌশলীকে ঘুষ না দিলে কাজ হয় না’ মর্মে বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যানরা।
সম্প্রতি উপজেলা প্রকৌশলী নগদ টাকা ঘুষ নিচ্ছেন এ রকম একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার তাকে দাউদকান্দি উপজেলা থেকে হবিগঞ্জ উপজেলা বাহুবল উপজেলায় বদলি করে।
উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকারী সুন্দরপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ আলম বলেন, গত উপজেলা মাসিক সমন্বয়সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ উঠে এসেছে। এমনকি তার কাছে গেলেই ঘুষ দেওয়া লাগতো। এই পরিস্থিতিতে অনেকে বড় রকমের বিপদে পড়তে। তবে ওনাকে টাকা দেওয়া ছাড়া অনেকে আর কাজ করতে পারতেন না বলে অভিযোগ উঠে আসে। এরপর অনেকে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন। তবে এতেই তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছিল না। অবশেষে ঘুষ নেওয়ার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাকে বদলি করা হয়।