বাংলাদেশের ( Bangladesh ) অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি বাংলাদেশ ( BNP Bangladesh ) জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ( BNP’ ) প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের ( Bangladesh ) অষ্টম রাষ্ট্রপতি, নিয়োজিত ছিলেন সেনাপ্রধান হিসেবে এবং সেইসাথে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বিএনপি নামক রাজনৈতিক দল গঠন করেন। আজ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ( Ziaur Rahman ) শাহাদাত বার্ষিকী।
নিঃসন্দেহে, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭১ থেকে ১৯৭১ সালের মে ( May year ) পর্যন্ত জীবনের শেষ দিন অবধি বাংলাদেশের ( Bangladesh ) জন্য কর্মযজ্ঞ চালিয়ে গেলেন তা প্রশংসার দাবিদার। আমি মনে করি, তার অতুলনীয় দেশপ্রেম এবং একজন সত্যিকারের প্রকৃত কর্মবীরের ভূমিকা তাকে একজন সত্যিকারের ‘রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।
আজ ৩০ মে — জিয়াউর রহমানের মৃ’ত্যুবার্ষিকী (বা শাহাদাত বার্ষিকী)। জীবনের ৪৫ বছর তিনি দেশপ্রেমের জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামে ষড়য’ন্ত্রে তাকে হ’/ত্যা করা হয়।
জিয়াউর রহমানের সম্পূর্ণ জীবনীকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখলে জানা যায় যে তিনি মেধাবী পিতামাতার সন্তান ছিলেন। রক্তের উত্তরাধিকারসূত্রে তিনি একজন মহান নেতার গুণাবলীতে সমৃদ্ধ ছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী একজন বিখ্যাত রসায়নবিদ এবং তাঁর মা ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ। স্কুল-কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি সুশৃঙ্খল ও মেধাবী জীবনের বিকাশের দিকে এগিয়ে গেছেন। পরিবারের সহায়তায় তিনি ছোটবেলা থেকেই সমাজ ও রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উপযুক্ত শিক্ষা ও দীক্ষার প্রতিশ্রুতিতে নিজেকে গড়ে তোলেন।
জিয়াউর রহমান জানতেন অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে পাকিস্তানি সাম”রিক বাহিনী সম্পূর্ণরূপে দখলদার বাহি’নীতে রূপান্তরিত হবে এবং তারপর তাদের প্রতিশোধ নিতে হবে। সে ঠিক তাই করেছে। যথাসময়ে তিনি বাঙালি সাম”রিক অফিসার ও তাঁর অধীনস্থ অন্যান্য সে”না সদস্যদের নিয়ে দখ’লদার ও হানা”দার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং যু’/দ্ধ ঘোষণা করেন এবং শক্তিশালী শক্তির সাথে প্রতিরোধ যু”দ্ধ শুরু করেন। যথাসময়ে, ২৬শে মার্চ, তিনি প্রথমে চট্টগ্রামের কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিজেকে ‘তত্ত্বাবধায়ক রাষ্ট্রপ্রধান’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং পরে তা পরিমার্জন করেন এবং প্রধান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা সমগ্র বাঙালি জাতিকে দখ”লদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
স্বাধীনতা ঘোষণার পর তিনি তার ৩০০ সৈ”ন্যবাহিনী নিয়ে পাকিস্তানি দখ”লদারদের বিরুদ্ধে অবিরাম মুক্তিযুদ্ধ করেন এবং পরবর্তীতে আরও সেনাসদস্যকে সংগঠিত করে একজন ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেরা নায়ক হয়ে ওঠেন। মুক্তিযু”দ্ধে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান রেখে তিনি ‘বীর-উত্তম’ উপাধি লাভ করেন।
পরবর্তীতে, ১৯৭৫ সালের আগস্টে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের পর, তিনি সেনাপ্রধানের পদে ফিরে আসেন। ৭ নভেম্বর জনগণের সমর্থনে সিপা”হিদের অভ্যুত্থানে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার হন। জিয়াউর রহমান সে সময় রাষ্ট্রক্ষমতার অংশ না হলে দেশে চর”ম নৈরাজ্য শুরু হয়ে যেত। এমন মন্তব্য করেছেন দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হন। তিনি ১৯৭৮ সালে রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি) গঠন করেন। সেটিও অপরিহার্য হয়ে ওঠে।
জিয়াউর রহমান সফল কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মুসলিম দেশগুলোর নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার ন্যায্য স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়। একই সঙ্গে এদেশ থেকে মানবসম্পদ রপ্তানি করে বিপুল আয়ের পথ খুলে দেন। এছাড়া জিয়াউর রহমান সব ধরনের শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়ার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই দেশের ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তা ব্যক্তি ও গ্রুপগুলো একটি তৈরি পোশাক রপ্তানি শিল্পকে সংগঠিত ও গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। এছাড়া বস্ত্রশিল্পসহ অন্যান্য সকল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পও গড়ে উঠতে শুরু করে সেই সময়ে, যেটা হয়েছিল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বের দূরদর্শিতার কারণে। প্রকৃতপক্ষে, সত্তরের দশকের শেষের দিকে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিয়াউর রহমান মুসলিম বিশ্বের একজন শক্তিশালী নেতা হয়ে ওঠেন। জাতিসংঘসহ বিশ্ব সংস্থায় নিজের শক্ত অবস্থান তুলে ধরতে পেরেছিলেন। ইরান-ইরাক যু’/দ্ধের অবসান ঘটাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় জিয়াউর রহমানের মূল্যবান অবদানের বিষয়ে মুসলিম বিশ্ব একমত। ওআইসিতে তিনি বাংলাদেশের জন্য একটি বিশিষ্ট অবস্থান অর্জনের সুযোগ তৈরি করেন।
তিনি প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে চীনের সাথেও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করেন। জিয়াউর রহমান তার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বে সমুন্নত করতে পেরেছিলেন। আমাদের মাতৃভূমি একটি সম্মানজনক অবস্থান পেয়েছে।
তিনি বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারত এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। তিনি স্থাপন করেন কূটনৈতিক সম্পর্ক। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শ মাধ্যমে বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে উপস্থাপন করার মাধ্যমে নানা ধরনের উদ্যোগ নেন। এরপর আমাদের মাতৃভূমি একটি বড় ধরনের সম্মানজনক স্থান পায় বহির্বিশ্বের সামনে।
লেখনীতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব, সাবেক সংসদ সদস্য ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক