Saturday , September 21 2024
Breaking News
Home / Countrywide / মন্ত্রীর সাথে ছবি তোলা হয়ে গেলে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ত্রাণের বস্তা

মন্ত্রীর সাথে ছবি তোলা হয়ে গেলে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ত্রাণের বস্তা

সম্প্রতি দ্রব্যমূল্যের দাম ‍ বৃদ্ধির জন্য অনেক দরিদ্র মানুষ না খেয়ে জীবন যাপন করছে। এই সময়ে অনেকে তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বিড়িয়ে দিয়েছে। তবে অনেকেই প্রভাবশালী ও সরকারের ( government ) সাহায্য থেকে বঞ্চিত বলেও জানা যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছেন রাজনৈতিক অনেক নেতা। তবে অনেক নেতারা মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর নামে তাদের সাথে করছে প্রতারণা। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ ( Imran Ahmed ) ত্রাণ দেবেন এমন খবরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ( Companiganj Sylhet ) উপজেলা সদরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন। এসব বন্যার্তরা পূর্ণ আশা নিয়ে অসহায় হয়ে এসেছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে লটারির মাধ্যমে দেওয়া ত্রাণ পরে দেওয়া হবে বলে ফেরত নেওয়া হয়েছে। ঘটনা জানাজানি হলে তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, মন্ত্রী যথাসময়ে এসে বক্তব্য দেন। এরপর তিনি ত্রাণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী নিজ হাতে বণ্টনের জন্য তালিকা থেকে লটারির মাধ্যমে তিনজন ‘ভাগ্যবান’ নির্ধারণ করেন। এই তিনজনের একজন ছিলেন মাহফুজ মিয়া। তিনি মন্ত্রীর কাছ থেকে ১০ কেজি চাল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী গ্রহণ করেন। ত্রাণের প্যাকেট পেয়ে মাহফুজ মিয়া খুবই খুশি। কিন্তু সেই হাসি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ত্রাণ নিয়ে মঞ্চ থেকে নামার পর মাহফুজের হাত থেকে রিলিফের বস্তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। বলা হচ্ছে, এটি একটি ফটো সেশন ছিল। পরে সবাইকে একসঙ্গে ত্রাণ দেওয়া হবে। ফলে স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফেরেননি মাহফুজ। আগে জড়ো হওয়া লোকজন ত্রাণের বস্তা নিয়ে ঝগড়া শুরু করে। পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও তার আগেই অনেকে ত্রাণের বস্তা লুট করে নিয়ে যায়। আর মাহফুজ ফিরেছেন খালি হাতে।

মাহফুজ ত্রাণ নিতে গেলে ছবি তোলা হয়, ভিডিওও করা হয়। ত্রাণ নিয়ে মঞ্চ থেকে ফেরার পর মাহফুজের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ত্রাণের বস্তা। বক্তৃতা ও ফটো সেশন শেষে ত্রাণ প্যাকেট নিয়ে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু মাহফুজ তার ত্রাণের প্যাকেট ফেরত পাননি। পরে তালিকায় থাকা সবাইকে একসঙ্গে ত্রাণ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

মাহফুজ আরটিভি নিউজকে বলেন, প্রথমে মন্ত্রীর কাছ থেকে স্বস্তি পেলাম। কিন্তু তারা আবার তা নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত স্বস্তি পেলাম না। উল্টো পুলিশের বাড়ি খেতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, আমরা যতই ত্রাণ দিই না কেন তা কম হবে। একটি ইউনিয়নে ১০০ মণ চাল দিলে ১০০ জন পাবে। ২০০ জন চলে গেলে তার অর্ধেক দেওয়া যাবে। যদি খোলা থাকে চাল-গম। কিন্তু প্যাকেট জাত খাবার শেয়ার করা যাবে না। তাই ইতিমধ্যে যাদের তালিকা করা হয়েছে তাদের দেওয়া হয়েছে। তালিকায় অনিয়মের কথা কেউ ধরিয়ে দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

মন্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে অনেকেই বিরোক্তি প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, দূর সময়ে ডেকে এনে আমাদের সাথে এমন আচরণ অনেকটা অপ্রত্যাশা জনক। আমাদের চাল দিবে এক কিলো ফোটোতে দেখানো হবে ১ মণ। লোক দেখানো সাহায্য করে কি লাভ। এমন সমালোচনার কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ।

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *