Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার গাড়ি নিয়ে রাজপথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বহু প্রতিভার অধিকারী এক বৃহন্নলা (ভিডিও)

এবার গাড়ি নিয়ে রাজপথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বহু প্রতিভার অধিকারী এক বৃহন্নলা (ভিডিও)

বাংলাদেশে ( Bangladesh ) সাধারণত একজন পুরুষ ও একজন মহিলাকে গাড়ি চালাতে দেখা যায়। তবে এবার কোন পুরুষ নয় বা মহিলাও নয় তৃতীয় লি/ঙ্গের মানুষকে গাড়ি চালাতে দেখা যায়। এ বিষয়কে ঘিরে যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড়। তার নাম বুলবুল।

চাঁ/দাবাজি বা ভিক্ষা করে নয়, সমাজের সাধারণ মানুষের মতো মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করতে চায় বুলবুলি। নিজেকে প্রথম তৃতীয় লি/ঙ্গের চালক বলেও দাবি করেন তিনি। বুলবুলি বলেন, আমরা অর্ধেক নারী, আমরাও কিছু করতে পারি।

রাজধানীর মিরপুর-১৪ ( Mirpur-14 ) এলাকায় বুলবুলির ( Bulbul ) সঙ্গে কথা হয় মো. ( Md. ) তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমি এখন ভালোভাবে গাড়ি চালাতে পারছি। পার্কিং এবং জিগস সংকেত সব শিখেছি. গাড়ি চালাতে কোনো অসুবিধা নেই। আমি একজন পূর্ণাঙ্গ চালক। বুলবুলি নড়াইল ( Narail ) সদর কুমখালী ( Kumkhali ) গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আফজাল মোল্লার ( Afzal Mollah ) ছেলে। তবে তিনি রাজধানীর বাড্ডা ( Badda ) এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

নিজ উদ্যোগে শহীদ পুলিশ মেমোরিয়াল কলেজের ( Shaheed Police Memorial College ) শিফট ইনচার্জ সকাল  ও সহকারী অধ্যাপক কাজী বদরুজ্জামান ( Zaman ) ( Kazi Badruzzaman ) (জামান ( Zaman )) এবং ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান বুলবুলিকে ( Habibur Rahman Bulbuli ) গাড়ি চালানো শেখান। বুলবুলি জানান, আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। বাবা কৃষক ছিলেন। অর্ধনারীর কথা বুলবুলি জানতে পেরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। একপর্যায়ে তিনি হতাশ হয়ে ভারতে ( India ) চলে যান। পরে তিনি দেশে ফিরে আসেন। বুলবুলি নিজেকে সংযত করল না। সে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে এখন ডিগ্রির জন্য পড়ছে।

তিনি বলেছিলেন যে নিজেকে অর্ধনারী বলে জেনে প্রথমে তিনি দ্বিধা বোধ করতেন। আমি সব সময় ছেলের প্যান্ট-শার্ট পরে স্কুল-কলেজে ( school-college ) যেতাম। কিন্তু পরে নিজেকে বুঝতে পেরে স্বাভাবিক হয়ে গেলাম। এখন একটাই প্রত্যাশা সরকারি চালক হতে পারি।

বুলবুলি জানান, গাড়ি চালানোর পাশাপাশি তিনি কোরআন তেলাওয়াতও করেন। আগের দিনগুলোর কথা মনে করে আবেগে কেঁদে ফেললেন বুলবুলি। তিনি বলেন, আমরা সমাজ ও পরিবার থেকে বঞ্চিত, সবার কাছে আমরা অবহেলিত। সমাজের বোঝা হয়ে নয়, অন্যদের মতো সম্মানজনক কাজ করে খেতে চাই। আমার কাছে সার্টিফিকেট আছে, আমি গাড়ি চালাতে পারি। এছাড়াও আমি শিক্ষিত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহায়তায় সরকারি চাকরি পেলে অন্য পাঁচজনের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারব।

শহীদ পুলিশ মেমোরিয়াল কলেজের সহকারী অধ্যাপক কাজী বদরুজ্জামান (জামান) বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের কাউকে রাস্তায় বা গাড়িতে ভিক্ষা করতে বা চাঁ/দাবা/জি করতে দেখলে খুব খারাপ লাগে। আমি মনে করি তারাও মানুষ। তাদের স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও কাজ করার অধিকারও রয়েছে। দেশে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ বৃহন্নলা মানুষ রয়েছে। তারাও কাজ করে দেশের সম্পদে পরিণত হবে। “এটা তখন আমাদের নজরে আসে।

এ বিষয়ে ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তৃতীয় লিঙ্গের কাউকে ড্রাইভিং শেখানোর পরামর্শ দিই। সে আমাকে বুলবুলি, রাখি এবং আরও কয়েকজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। তারা ড্রাইভিং শিখতে আগ্রহী। দুজন গাড়ি চালানো শিখেছে। আরেকজন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এখন তাদের প্রত্যাশা চালক হিসেবে সরকারি চাকরি।

মিরপুর এলাকার ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর আলাউদ্দিন বলেন, বুলবুলি দুই মাসে গাড়ি চালানো শিখেছে। সে খুব ভালো গাড়ি চালায়। তাদের ব্যবহারও খুব ভালো।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে অর্ধনারী রয়েছে। অনেক দেশ এসকল মানুষকে অগ্রাধিকার দিলেও অনেক দেশের মানুষ এদেরকে ভিন্ন চোখে দেখে। তবে বাংলাদেশ এসকল অর্ধ-নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বুলবুলের জীবনী অন্য সকল অর্ধ-নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা বলে মনে করছেন অনেকেই। বুলবুল জানায় আমার মত সকল মানুষের কাছে অনুরোধ মানুষের দারে দারে না ঘুরে নিজে কিছু করার চেষ্টা করুন। সাফল্য একদিন আসবেই।

About Nasimul Islam

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *