মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র। আজ যে ধনী ব্যক্তি সেই হয়তো আগামী কাল হয়ে যাবেন সব থেকে গরীব। আর এমনটাই হয়েছে এই পৃথিবীতে অহরহ। যার অন্যতম বড় প্রমান ভারতের বিজয় মালিয়া।পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়াকে দেউলিয়া ঘোষণা করল লন্ডন হাই কোর্ট। সোমবার ‘স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া’র নেতৃত্বে সরকারি ব্যাংকগুলির করা মামলায় এই রায় দেয় আদালত। লণ্ডন হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন লিকার ব্যারন মালিয়া বলেই খবর। বিশ্লেষকদের মতে এদিনের রায়ে মালিয়ার কাছে বকেয়া ঋণ উদ্ধারে ব্যাংকগুলি আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
কিংফিশারের কর্ণধার মালিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তি বিক্রি করে বকেয়া টাকা আদায় করতে পারবে ব্যাংকগুলি। বলে রাখা ভাল, আজও দেশে ফেরানো যায়নি তিন পলাতক শিল্পপতি বিজয় মালিয়া, মেহুল চোকসি ও নীরব মোদিকে। তিনজনের কারণে সরকারি ব্যাংকগুলির ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। কয়েকদিন আগেই তিনজনের মোট ৯ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা জমা পড়ল ব্যাংকে। এর মাধ্যমে আংশিক ক্ষতিপূরণ হবে ব্যাংকগুলির।
স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া-সহ একাধিক ভারতীয় ব্যাংক থেকে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ব্রিটেনে গা ঢাকা দিয়েছেন কিংফিশার এয়ারলাইন্সের কর্ণধার। ২০১৯ সালের ১৪ মে ইংল্যান্ডের আদালতে বিজয় মালিয়ার ভারতে প্রত্যার্পণ ঠেকানোর আরজি খারিজ হয়ে যায়। ইডি’র তরফে জানানো হয় খুব শিগগির বিজয় মালিয়াকে ইংল্যান্ড থেকে ভারতে প্রত্যার্পণ করা হবে। কেননা তিনি প্রত্যার্পণ রোধের মামলায় পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু তারপর থেকে আইনি জটিলতা চলছেই।
নিম্ন আদালতে পরাস্ত হওয়ার পর প্রত্যার্পণ ঠেকাতে ব্রিটেনের উচ্চ আদালতগুলিতে আবেদন করেন লিকার ব্যারন। কিন্তু সেখানেও তাকে পরাস্ত হতে হয়। ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট স্তরের আদালতেও প্রত্যার্পণ মামলায় পরাস্ত হয়েছেন মালিয়া। কিন্তু তারপরও তাকে ভারতের হাতে তুলে দেয়নি ব্রিটেন। এতদিন ব্রিটেন সরকার দাবি করছিল, মালিয়া সংক্রান্ত ‘গোপন’ একটি মামলার শুনানি এখনও চলছে। সেই মামলাটির নিস্পত্তি হলেই তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আইপিএলে দলও কিনেছিলেন এই বিজয় মালিয়া। তবে এখন আর সেই প্রতিপত্তি নেই তার। এখন তিনি শুধু মাত্র একজন পলাতক আসামী ছাড়া আর কিছুই নন।