বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া রোগের কারনে বিশ্বের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়েছে। ঘরে বদ্ধ থেকেই সমস্ত কাজ করতে হয়েছে প্রায় সকলকে। মহামারীতে অনেক পরিবার তার আপনজনকে হারিয়েছেন। অসংখ্য মানুষ তার সর্বস্ব হারিয়েছেন। বিশ্বের এই সংক্রমক রোগ কমার ফলে আগের মত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে শরু করেছে সকল পেশার মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ( Sheikh Hasina ) অনেকদিন পর বাইরে বেরিয়ে এলেন তার বাসভবন থেকে।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবময় ও গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯ ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পদক-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। বহুদিন পর মুক্তি পেলাম; আসলে মহামারীর সময় আমি কারাগারে ছিলাম।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা পদক-২০২২ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা মঞ্চ থেকে নেমে জীবিত দুই মুক্তিযোদ্ধা সিরাজউদ্দিন আহমেদ ও আবদুল জলিলের ( Abdul Jalil ) হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক মানুষ আছেন যারা নিজ উদ্যোগে মানুষের সেবা করেন। এমন মানুষ খুঁজে বের করতে হবে। তাদেরও পুরস্কৃত করতে হবে।
তিনি বলেন, যারা জনগণের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছেন, তারা হয়তো প্রচারনায় আসেন না, তারা দৃষ্টির বাইরে থাকেন। তাদের পুরস্কৃত করা আমাদের উচিত। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং অন্যরা এগুলো দেখে শিখবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের সেবা ও কল্যাণের মাধ্যমে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়। হাজার ধন সম্পদ থাকলেও সেটি যদি মানব কল্যানে ব্যবহার না করলে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় না । সবাইকে জন কল্যানে উদ্যোগ নিতে হবে। কারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে, সেবা করছে, কাজ করছে তা খুঁজে বের করতে এবং পুরস্কৃত করতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পুরস্কার তিনি একবারও দিতে পারেননি। কিন্তু বারবার নিজেকে এটা থেকে বঞ্চিত করতে পারি না। স্বাধীনতা পুরস্কার নিজের হাতে প্রদার করা, আমার জন্য সম্মানের। তাই অনেকদিন পর এই অফিসে আসার সুযোগ পেলাম।
এ বছর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ( Elias Ahmed Chowdhury ), কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা ( Khandaker Nazmul Huda ) (বীর বিক্রম), আবদুল জলিল, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ( Siraj Uddin Ahmed ), মোহাম্মদ সহিউদ্দিন ( Mohammad Sahiuddin ) বিশ্বাস ও সিরাজুল হককে ( Sirajul Haque ) পদক প্রদান করা হয়।
মেডিসিনের অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি ( Dr. Kanak Kanti ) বড়ুয়া ও অধ্যাপক ডাঃ মোঃ কামরুল ইসলাম ( Dr. Md. Kamrul Islam ) এবং স্থাপত্যে প্রয়াত স্থপতি সৈয়দ মইনুল হোসেন ( Syed Moinul Hossain ) পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ( Bangladesh ) গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বিদ্যুৎ বিভাগ স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। সরকার ( Government ) ১৯৭৭ সাল ( Year ) থেকে প্রতি বছর ২৬ মার্চ ( March ) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে।
স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে মনোনীত ব্যক্তিকে পাঁচ লক্ষ টাকা, আঠার ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক ,পদকের একটি রেপ্লিকা ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।
গত ১৫ মার্চ ( March ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরে সাহিত্যের তালিকা থেকে মনোনীত প্রার্থি মোঃ আমির হামজা ( Md. Amir Hamza ) বাদ পড়েন। ফলে এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন না কেউ সাহিত্যিক ক্যাটাগরিতে।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রদানের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিনের বদ্ধতা থেকে মক্ত হবার সুযোগ পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বব্যাপী এই রোগের কারনে তাকে এক স্থানে থেকেই সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করত হতো। মহামারী জন্য তিনি অনেক অনুষ্ঠান যোগদান করতে পারেনি। স্বাধীনতা পুরুস্কার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন দেশের কল্যানে যারা কাজ করছে তাদেরকে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে আরো উদ্বুদ্ধ করা উচিত।