প্রতিমন্ত্রীর চিঠিতে বিমাবন্দরের পুরো নাম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থাকলেও সচিবের সফর পত্রে নামটি নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সচিবের সফর পত্রে বাকি সব তথ্য সঠিক হলেও বিমানবন্দরের ( airport ) নামের ক্ষেত্রে বিকৃতি ঘটে। যেটা নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। হযরত শাহজালালের নামের স্থানে সংক্ষেপে ‘হশা’ লেখা হয়। সরকারি এমন গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে এমন ত্রুটি অপ্রত্যাশিত। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।
সূত্র জানায়, সফরের চিঠির কপি পাওয়া গেলেও দায়িত্বশীল কোনো ব্যক্তির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সচিব এএইচএম জামেরী হাসানের ( AHM Jameri Hasan ) অফিসিয়াল টেলিফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও কেউ সাড়া দেননি। অন্যদিকে সচিব মন্ত্রীদের নিয়ে বরিশাল ( Barisal ) ও টুঙ্গিপাড়া ( Tungipara ) সফরে ব্যস্ত ছিলেন।
সূত্র আরও জানায়, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী ( Md. Mahbub Ali ) এমপি। তার সঙ্গে আসেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল ( Md. Mokammel ) হোসেন। প্রতিমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক চিঠি এবং সচিবের তফসিল গত ( Past ) ১৬ মার্চ ( March ) সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়।
আরও জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রীর সফরসূচির চিঠিতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ( Hazrat Shahjalal International Airport ) ( airport ) কথা পূর্ণাঙ্গ লেখা থাকলেও সচিবের সফরসূচির চিঠিতে তিনবার হশা বিমানবন্দরের ( airport ) লেখা হয়েছে। একবার সচিবের বাসভবন থেকে বিমানবন্দরে যাতায়াতের প্রশ্নে, একবার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর প্রশ্নে এবং একবার বরিশাল ( Barisal ) থেকে যাত্রার প্রশ্নে।
চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া বরিশাল ( Barisal ) ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় পুলিশ ( police ) বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও অনুলিপি দেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া অফিসে কপি পাঠানো হয়।
জানা গেছে, সচিবের সফরসূচি সম্বলিত চিঠি বরিশালের বিভিন্ন ব্যক্তি ও দফতরে পৌঁছানোর পর হযরত শাহজালালের নাম বিকৃতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বরিশাল নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব মো. মিজানুর রহমান বলেন, অনুমান করছি, বিভিন্ন দাপ্তরিক ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি সচিবের নজরে আসেনি। কিন্তু সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনিও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। সে এত বড় ভুল কিভাবে করতে পারে?
বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বোটবল বলেন, ব্রজলাল কলেজ এখন বিএল কলেজ। ব্রজমোহন কলেজ বললে, এখন কেউ জানে না, এটা বিএম কলেজ। এভাবে আমরা আমাদের অনেক জ্ঞানীগুণীর নাম হারাচ্ছি। বর্তমান প্রজন্মকে দমন করা হচ্ছে, তাদের নাম এবং যারা এই সমাজ ও দেশকে গড়ে তুলেছেন। আজ সচিবের সফরের চিঠিতে যদি হজরত শাহজালালের নাম হশা লেখা হয়, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। আমি মনে করি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের এসব বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া দরকার। ”
প্রসঙ্গত, সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দার্য়িত্বশীল পদে থেকে এমন ভুল করা দায়িত্বহীনতার পরিচয়। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িত ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত, এমনটা মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। নাম বিকৃত করা অত্যন্ত দুঃজনক ব্যাপার কারন প্রতিটি নাম নিদিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পরিচয় তুলে ধরে। নামের ভূল হলে সেটা তার নিজস্ব পরিচয় হারিয়ে ফেলে।