দেশে বিদেশে বহুল আলোচিত ছুটির ঘন্টা ছবির প্রযোজক আজিজুর রহমানের প্রয়ানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোবিজ অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার সময়ের বিভিন্ন তারকাসহ অনেকেই তার প্রয়ানের বিষকে কেন্দ্র করে শোক প্রকাশ করেছেন। এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান এই গুণী নির্মাতার বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অশিক্ষিত। সামাজিক গনমাধ্যেমে এক সময়কার গুনী ও জনপ্রিয় এই নায়িকা লিখেছেন, আরো একটি তারকার পতন হলো।
আজিজুর রহমান বাংলাদেশের ( Bangladesh ) অন্যতম আলোচিত ও সফল সিনেমা ছুটির ঘন্টা এর পরিচালক। সোমবার (১৪ মার্চ ) কানাডার একটি হাসপাতালে তিনি প্রয়াত হন। ছুটির ঘন্টা ছবির পরিচালকের প্রয়াতেরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোবিজ অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে প্রিয় পরিচালককে হারিয়ে শোকাহত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, মি. আজিজুর রহমান একজন কালজয়ী নির্মাতা। তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়া আমার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি রাজ্জাক ভাইয়ের বিপরীতে তার ৫ নম্বর ছবিতে নায়িকা ছিলাম।
কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ে অঞ্জনা। “তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ,” তিনি বলেছিলেন। বৃদ্ধ তবুও তার মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। একে একে সব মেধাবীরা চলে যাচ্ছেন। আমরা শূন্য হতে যাচ্ছি। খান আতা চলে গেছে, নারায়ণ দা, দিলীপ ( Dilip ) দা, চাষী সাহেব, সবাই চলে যাচ্ছে। আজিজ সাহেবের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। আজিজুর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে ফেসবুকে ( Facebook ) একটি স্ট্যাটাসও দেন অঞ্জনা। সেখানে তিনি লিখেছেন, আরেক নক্ষত্রের পতন। আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি প্রযোজক ও পরিচালক আজিজুর রহমান ভাই আজ চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সুপ্রতিষ্ঠিত বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পে তার অবদান চিরন্তন।
তিনি আরও বলেন, অশিক্ষিত ছবিতে প্রথম নায়ক রাজ রাজ্জাক ( Raj Razzak ) ভাইয়ের একক ও প্রধান নায়িকা হিসেবে আমাকে বেছে নিয়েছিলেন। অশিক্ষিত বাংলা চলচ্চিত্রের সেরা ১০টি শিক্ষামূলক চলচ্চিত্রের একটি। এটা আমার জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার। এই ছবির সাফল্য অকল্পনীয়। অঞ্জনা আরও বলেন, অশিক্ষিত ছবির প্রতিটি গান আজও বাংলা সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের হৃদয়ে দোলা দেয়। বিশেষ করে ঢাকা ( Dhaka ) শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে যেমন আমি, রবো বউ হবোনারে গানগুলো আজও সকলের হৃদয়ে গেঁথে আছে, চির অমর হয়ে আছে। তিনি বলেন, অশিক্ষিত সিনেমা শেষ হওয়ার পর আজিজুর রহমান ভাই আমাকে নিয়ে আরো দুটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। সেই দুটি ছবি আকাশছোঁয়া ব্যবসা সফলতাও পেয়েছে। একজন অতিথি এবং অন্যজন ফুলেশ্বরী। কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা আজিজ ভাইয়ের নির্দেশনায় অভিনয় করা প্রতিটি নায়ক-নায়িকার জন্যই ছিল পরম সৌভাগ্যের বিষয়। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা প্রিয় ভাই। আপনি আপনার অমর কাজের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের স্বপ্নময় আকাশে চিরকাল এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন, যোগ করেছেন অভিনেত্রী অঞ্জনা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ( Last Monday ) বাংলাদেশ সময় রাত ( Night ) সাড়ে ১১টায় কানাডার টরন্টোতে ( Toronto, Canada ) ইন্তেকাল করেন বিখ্যাত এই পরিচালক। আজিজুর রহমান প্রথম পরিচালক এহতেশামের ( Ehtesham ) সহকারী হিসেবে কাজ করেন ১৯৫৮ সালের এ দেশ তোমার আমার ছবিতে। ১৯৬৭ সালে প্রেক্ষাগৃহে প্রকাশিত হওয়া জন্য মুক্তি পায় তার প্রথম ছবি সাইফুল মুলক বদিউজ্জামান। তিনি তার শোবিজ জীবনে মোট ৫৪টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তার নির্মিত সিনেমার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হল: ছুটির গল্প, অশিক্ষিত, মাটির ঘর, জনতা এক্সপ্রেস, সাম্পানওয়ালা, ডাক্তারের বাড়ি, অসমতা ও সমাধান।