পরিচয় নিশ্চিত করতে কবর থেকে ম”রদেহ উত্তোলন করা হবে হারিছ চৌধুরীর। হারিছ চৌধুরীর দেহ উত্তোলন করা হবে এই নিয়ে তার মেয়ে সামিরা চৌধুরী ( Samira Chowdhury ) মত প্রকাশ করেছে। তার কবর দেওয়া দেহ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষার পর পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন কা”রাদণ্ড হয়েছিল একুশে আগস্ট যে অমানবিক এবং পরিকল্পিত হাম”লার মামলায়। হারিছ চৌধুরীর মেয়ে বলেছেন তার বাবার পরিচয়, দেশের মানুষ ও সমাজের জন্য প্রয়োজন।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা ( Begum Khaleda ) জিয়ার সচিব মরহুম হারিছ চৌধুরীর ( late Harish Chowdhury ) প্রয়াতদেহ কবর থেকে উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া ডিএনএ পরীক্ষা করতে চায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিডও)।
হারিছের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তার পরিচয় নিয়ে সন্দেহ দূর করতেই ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হারিছের লন্ডন প্রবাসী কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী ( Samira Chowdhury ) সোমবার ( Monday ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ( Sheikh Hasina ) কাছে চিঠি পাঠান। একই ধরনের চিঠি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ( Asaduzzaman Khan Kamal ), স্বরাষ্ট্র সচিব ও সিআইডি ( CID ) প্রধানকেও পাঠানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে সামিরা চৌধুরী ( Samira Chowdhury ) বলেছেন যে হারিছ চৌধুরী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগে সংক্রমিত হওয়ার পর ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ( September ) বাংলাদেশের ( Bangladesh ) এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রয়াত হন। কিন্তু পরিচয় গোপন করতে তাকে মাহমুদুর রহমান ( Mahmudur Rahman ) নামে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে হারিছ চৌধুরীর নামে ইস্যু করা ডেথ সার্টিফিকেটে তার আসল নামের পরিবর্তে মাহমুদুর রহমান ( Mahmudur Rahman ) লেখা ছিল।
প্রয়ানের পর হারিছ চৌধুরীকে সাভারের বিরুলিয়ার কমলাপুর খাতামুন্নাবিয়ান মাদ্রাসার কাছে সমাহিত করা হয়। তবে এটি হারিছ চৌধুরীর পরিবারের স্বীকৃত কবরস্থান নয়।
সামিরা বলেন, আমার প্রয়াত বাবা হারিছ চৌধুরীর আসল পরিচয় পরিবারের পাশাপাশি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহি”নীর কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশের আইন বিভাগ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়াত পিতার পরিচয় নিশ্চিত করতে চাইলে আমার কোনো আপত্তি নেই। প্রয়োজনে তারা বাবার লাশ কবর থেকে সরিয়ে ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করতে পারে। সামিরা প্রয়াত পিতার দেহাবশেষকে তাদের গ্রামের দর্পণনগরে একটি নির্ধারিত কবরস্থানে দা”ফন করার অনুরোধ করেন।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, একুশে আগস্ট হাম”লা মামলায় হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। অনেকদিন আগে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি। তার প্রয়াতকে ঘিরে রহস্যের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে কী লেখা আছে তা এখনই বলতে পারছি না। হারিছ চৌধুরীর প্রয়াত নিশ্চিত করতে আদালতের অনুমতি নিয়ে দেহ উত্তোলন করা যেতে পারে বলেও জানান তিনি।
এদিকে হারিছ চৌধুরীর প্রয়াতকে ঘিরে রহস্যের জট নির্ভর করছে ইন্টারপোলে হারিছের নামে ঝুলানো রেড নোটিশ সরানো হবে কিনা। তিনি প্রয়াত হয়ে গেলে রেড নোটিশ অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, হারিছ চৌধুরী সাম্প্রতিক সময়ে নিজের নাম-পরিচয় গোপন করে মাহমুদুর রহমান সেজন হিসেবে মিডিয়ায় উঠে এসেছেন। সেই পরিচয়ে তিনি একটি জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেছিলেন। ইন্টারপোলের রেড নোটিশধারী হারিছ চৌধুরী প্রয়াতর আগে প্রায় ১১ বছর ঢাকায় বসবাস করছিলেন। গণমাধ্যমে এমন তথ্য প্রকাশের পর থেকে মাহমুদুর রহমান হারিছ চৌধুরী কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
হারিছ চৌধুরীর সমাজের একজন ভাল নেতা ছিলেন। কিন্তু একুশে আগস্ট সৃষ্ট অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় তার ক্যারিয়ার খারাপ হয়ে যায়। প্রয়াত হবার সময় হাসপাতালে পরিচয় গোপন করেছিলেন। হারিছ চৌধুরীর কবরস্থ দেহ উত্তোলন করে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।