সারা বিশ্বের অনেক নেটিজেনরা যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণার স্বীকার হয়েছে এবং সেটা এখন চলমান। মানুষ যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দ্বারা ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে প্রেম ভালোবাসার মত গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলছে। যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটে যাওয়া নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ড বিগত ( Past ) দিনগুলোতে উঠে এসেছে সবার মাঝে। যোগাযোগ মাধ্যমে গড়ে উঠা এমন একটি প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে সারাদেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অনলাইন ডেটিং অ্যাপে তাদের পরিচয় করিয়ে দিন। সেই পরিচয় থেকেই ভালোবাসা। সেই সূত্রে ঢাকায় ( Dhaka ) আসেন অস্ট্রেলিয়া থেকে কেইলা জেন সোমার্স ( Kayla Jane Somers ) (২৪) নামে এক তরুণী। কিন্তু প্রতারিত হয়ে তিনি এখন প্রায় নিঃস্ব।
কেইলাহারের মতে, তিনি নাইজেরিয়ান তরুণ জর্জ একপুনবীরের ( George Ekpunbir ) তত্ত্বাবধানে ঢাকায় ( Dhaka ) আসেন। যে জর্জ তাকে অত্যাচার করেছেন। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাগ থেকে ডলার চুরি করে পালিয়ে যায়।
কেইলাহ অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা। ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএসে ( Mirpur DOHS, Dhaka ) থাকতেন জর্জ। তিনি কেইলাকে ঢাকায় ( Dhaka ) একজন পোশাক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
কেইলাহার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জর্জের ( George ) ডাকে সাড়া দিয়ে ৩০ নভেম্বর ঢাকায় ( Dhaka ) আসেন তিনি। মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় জর্জের ( George ) ভাড়া বাসায় বড় হয়েছেন তিনি। ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঢাকায় ( Dhaka ) আসার কয়েকদিনের মধ্যেই জর্জের ( George ) আচরণে পরিবর্তন আসতে থাকে। গত ডিসেম্বর ( Last December ) এবং জানুয়ারী, কেইলাহকে ( Keilahke ) বাড়ি ভাড়া থেকে খাওয়া এবং ভ্রমণের সমস্ত কিছুর জন্য অর্থ প্রদান করতে হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা দশ হাজার ডলারের বেশির ভাগই এভাবে ব্যয় করা হয়।
কিইলাহ বলেছেন যে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে জর্জ সত্যিই কিছু করে না। এমনকি বাংলাদেশে তার ভিসার মেয়াদও অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জর্জ গালিগালাজ ( George blasphemed ) শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। জর্জ ১৪ ফেব্রুয়ারির ( February ) আগে বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যান। আর যাওয়ার সময় তার ব্যাগ থেকে প্রায় দেড় হাজার ডলার চুরি করে। তারপর, ১৭ ফেব্রুয়ারি, তিনি জর্জের ( George ) বাড়ি ছেড়ে আলাদাভাবে বসবাস শুরু করেন।
“প্রথমে আমি ভেবেছিলাম আমি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাব,” কেইলা বলেছেন। সে কথা মাথায় রেখে আমি ঢাকায় ( Dhaka ) অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে বিমান ভাড়া এবং যাতায়াত খরচ বাবদ আড়াই হাজার ডলার ধার দিয়েছে। কিন্তু তারপর বাংলাদেশেই থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। বর্তমানে দূতাবাসের দেওয়া ঋণের টাকা দিয়ে কাজ করছি।
কিলাহ বলেন, তার বয়স যখন মাত্র চার বছর তখন তার বাবা-মা তালাক দিয়েছিলেন। কেইলা তখন তার বাবার সাথে সিডনিতে ( Sydney ) বড় হয়। বাবার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ১৪ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তারপর সময়ে সময়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে জীবন যাপন শুরু করি। জীবন এভাবেই চলছিল।
ঢাকায় ( Dhaka ) এসে প্রতারণার শিকার হলেও কেইলা বাংলাদেশের ( Bangladesh ) প্রকৃতি আর বাঙালির মায়ায় আবদ্ধ। তাই ট্যুরিস্ট ভিসায় আসা কেইলাহ অস্ট্রেলিয়ায় না ফিরে এখানেই জীবন কাটাতে চান। ঢাকায় ( Dhaka ) আসার পর কাইলা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ফাতেমা আমুল ( Fatema Amul ) নাম ধারণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ( Bangladesh ) মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। দেশের বেশির ভাগ মানুষের ধর্মই নিজেদের মনে হয়। আমি মুসলিম মেয়েদের মত হিজাব পরা শুরু করেছি।
জর্জের ( George ) প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলে কেইলাহ বলেন, “আমি তাকে আমার জীবনে ফিরে পেতে চাই না। তার বিচার হোক।
কেইলাহ জানালেন, এরই মধ্যে কয়েকটি বাংলা শব্দও শিখে ফেলেছেন। তার মধ্যে ‘জি’, ‘কাও (খাও)’, ‘এই মামা’ শব্দগুলো বলে নিজেই হাসতে শুরু করলেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশে ব্যবহৃত জর্জের ( George ) মোবাইল নম্বরটি ফোন করে ব্লক পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, প্রেমে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়, তার একটি দৃষ্টান্ত হলো, প্রেমের টানে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে ছুটে আসা কেইলাহ ( ফাতেমা আমুল ( Fatema Amul )) । দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ মানুষ তাকে দোয়া ( আশীর্বাদ) করেছেন।বাংলাদেশের ( Bangladesh ) দূতাবাস থেকে তাকে তার দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য অর্থ ধার দিলে ও সে আর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যেতে চায় না। বাংলাদেশের ( Bangladesh ) মানুষকে সে ভালোবেসে ফেলেছেন বলে জানিয়েছেন। এখন তাকে বাংলাদেশে রাখা হবে কিনা তার কোন তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।