আত্মহ’নন এমন একটি বিষয় যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। কেউ নিজেকে শে’ষ করে দিতে চাওয়ার প্রধান কারণ দুটি। একটি মানসিক রোগ, অন্যটি আচরণগত সমস্যা। এ দুটি সমস্যা থেকে কাউকে সরিয়ে আনতে পারলে এই ধরনের ঘটনার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করা হয়। এ জন্য পরিবারের সদস্য বা কাছের মানুষদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। তবেই যে কেউ জীবনের অস্থির পর্যায়কে পেছনে ফেলে জীবনের ছন্দে ফিরতে পারবে।
কিছু লোক সময়ের সাথে তাদের আবেগ বা চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যখন মানুষ তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তখন তারা মনে করে আত্মহ”ননই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায়। এ সময় পরিবারের সদস্যদের নজর রাখতে হয়। এবার সাদিয়া আক্তার ( Sadia Akhter ) সাথী নামের এক তরুনী গৃহবধূর নিজেকে নিথর করে দেওয়ার ঘটনা আলোচনায় এসেছে।
মেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাড়ি ফিরে নিজ ঘরে আত্মহ”নন করেছেন সাদিয়া আক্তার সাথী নামের এক গৃহবধূ। সোমবার বিকেলে বরিশাল নগরীর ২০ নং ওয়ার্ড বৈদ্যপাড়া এলাকায় মো. শাহজাহান হোসেন ভবনের পঞ্চম তলায় ভাড়া বাসা থেকে ওই নারীর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তবে সাদিয়ার পড়ার টেবিলের সামনের দেয়ালে কাগজে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তাতে লেখা ছিল আমাকে বিসিএস ক্যাডার হতে হবে। সাদিয়া বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পূর্ব ভুতেরদিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। তার স্বামী মাইনুল ইসলাম একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলাম রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সাদিয়ার ৮ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, তিনি ওই ছাত্রীকে শেরেবাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিয়ে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। অনেকক্ষণ পরও কোনো সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীরা তাকে খুঁজতে গিয়ে বুঝতে পারে সাদিয়া আ’ত্মহ’নন করেছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে দুপুর ১টার দিকে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ম”রদেহ উদ্ধার করে। রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, সাদিয়ার পড়ার টেবিলের সামনে দেয়ালে লেখা ছিল; আমাকে বিসিএস ক্যাডার হতে হবে। অর্থাৎ, তার অদম্য ইচ্ছা ছিল বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। বাড়িতেও প্রচুর বই ছিল, বিসিএস কোচিং করতেন। বোঝা যায় সে মেধাবী ছাত্রী ছিল। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রয়ানের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এমনকি কী কারণে সাদিয়া আ’ত্মহ’নন করেছে তাও বলতে পারেননি।
প্রসংগত, যদিও অনেক উন্নত দেশ আত্মহনন প্রবণ মানুষের যত্ন নেওয়ার বিষয়টিকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়, সেক্ষেত্রে এখনো বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। সেক্ষেত্রে মানসিক প্রতিবন্ধীদের সহায়তা বাড়াতে প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ। পারিবারিক বন্ধন, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি, সামাজিক সম্পর্ক মজবুত করা আ’ত্মহ’নন প্রতিরোধের একটি বড় উপায়।