Sunday , December 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / শেষ পর্যন্ত মাকে ফিরে ফেলো রাস্তায় অবস্থান নেয়া সেই আলিফ-গালিফ

শেষ পর্যন্ত মাকে ফিরে ফেলো রাস্তায় অবস্থান নেয়া সেই আলিফ-গালিফ

গেল বেশ কিছু দিন আগে একটি ঘটনায় বেশ তোলপাড় হয়েছিল দেশের স্যোশাল মিডিয়াতে। শাশুড়ির করা মামলায় আটক হয়েছিলেন এক পুত্রবধু। আর সেই সময় থেকে মা কে ছাড়াতে রাস্তায় অবস্থান নেয় তার দুই সন্তান। এই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সবখানে।এ দিকে সব আলোচনা-সমালোচনার অবসান ঘটিয়ে শাশুড়ির করা মামলায় জামিন পেয়েছেন শিশু আলিফ ও গালিফের মা অনিতা জামান। সোমবার বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মাহবুবুল আলম শর্ত সাপেক্ষে তাকে জামিন দিয়েছেন। এছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ মীমাংসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এর আগে, রোববার আইনজীবী মো. নজরুল ইসলাম অনিতা জামানের জামিনের আবেদন করলে আদালত সোমবার শুনানির দিন ধার্য করে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে শাশুড়ি আলেয়া বেগম দুই ছেলে,অনিতা জামানসহ দুই পুত্রবধূ এবং চাচাতো দেবর দুলালের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি অনিতা জামান ১৫ জুলাই আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে অনিতার স্বামী জুয়েল পলাতক থাকায় তার দুই সন্তান আলিফ এবং গালিফ অসহায় হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে আলিফ ছোট ভাইকে নিয়ে শনিবার সকালে বরগুনা টাউন হল চত্বরের অগ্নিঝরা একাত্তরের পাদদেশে এবং পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়।

ওই সময় আলিফ জানায়, তার মাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। মামলা প্রত্যাহার করে অনতিবিলম্বে মাকে মুক্তি না দিলে তারা ঘরে ফিরে যাবে না।

আলিফের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবার চাকুরির সুবাদে তারা গাজীপুরে বসবাস করতো। সে সেখানকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মেধাবী আলিফ ইংল্যান্ডে লেখাপড়ার সুযোগ পায়। তার ভিসাও প্রস্তুত। কিন্তু করোনার কারণে তার ইংল্যান্ড যাওয়া বিলম্বিত হয়। এমন সময়ে তার দাদি মামলা করে মা আনিতা জামানকে কারাগারে পাঠায়।

শিশু আলিফ আরো জানায়, তার বয়স এখন ১২বছর। অথচ মামলায় ১৮ বছর দেখিয়ে তাকেও আসামি করা হয়েছে। এমনকি আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে সমনও জারি করা হয়েছে।

উভয়পক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে শিশু আলিফ ও গালিফকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের খেজুর তলায় বসবাস করছিলেন আনিতা জামান। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলিফ ও গালিফের বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েলের সঙ্গে তার মা-বোনদের মাঝে কলহ চলছে। মামলায় আলিফের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ দাদিকে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ দিকে এই ঘটনায় এবার স্বস্তি প্রকাশ করেছে নেটিজনেরা।বিশেষ করে ছোট ছোট দুটি বাচ্চার কষ্টের অবসান হয়েছে ভেবে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।এ দিকে অন্যদিকে আলিফের বাবা মো. মনিরুজ্জামান জুয়েল গাজীপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মামলায় ঘটনার যে সময় দেখানো হয়েছে সে সময় তিনি কর্মস্থলেই ছিলেন। সেখানে ডিজিটাল হাজিরায় তার প্রমাণ রয়েছে। অথচ মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেই মামলায় মনিরুজ্জামান জুয়েলকেও আসামি করা হয়েছে। তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এ মিথ্যা মামলা থেকেই মায়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছিল অসহায় শিশু আলিফ।

About Ibrahim Hassan

Check Also

গভীর রাতে র‍্যাব পরিচয়ে ফেরদৌসকে তুলে নিয়ে যায় কিছু যুবক, এরপর যা হলো

বগুড়ায় র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়া কলেজ শিক্ষার্থী ফেরদৌস সরকারকে নরসিংদীর মাধবদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *