Saturday , September 21 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়লেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী

বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়লেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী

ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ দলের অন্যতন একজন রাজনীতিবীদ ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতির সঙ্গে সক্রীয় রয়েছেন। এবং তিনি এই দলের হয়ে বাংলাদেশের সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে পরপর ৩ বার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। সেলিনা হায়াৎ আইভীর ​উত্থানের বেশ কিছু কথা উঠে এলো প্রকাশ্যে।

ড. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২০১১ সালে দেশের কোন সিটি কর্পোরেশনে প্রথম মহিলা মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন। এবার তৃতীয়বারের মতো মেয়র হয়ে নতুন রেকর্ড গড়লেন। সেলিনা হায়াৎ আইভী ১৯৬৬ সালের ৬ জুন নারায়ণগঞ্জের একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলী আহমেদ চুনকা এবং মাতার নাম মমতাজ বেগম। আলী আহমেদ চুনকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে আইভী সবার বড়। তিনি দেওভোগ আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরি স্কুলে ভর্তি হন এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি মরগান গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি হন। তিনি ১৯৭৯ সালে ট্যালেন্টপুলে জুনিয়র স্কলারশিপ পেয়েছিলেন এবং ১৯৮২ সালে স্টার মার্ক সহ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

তারপরে তিনি রাশিয়ান সরকারের বৃত্তি নিয়ে মেডিসিন অধ্যয়নের জন্য ১৯৮৫ সালে ওডেসা পিরাগোব মেডিকেল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং ১৯৯২ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ১৯৯২-৯৩ সালে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মিডফোর্ট হাসপাতালে এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে অনারারি ডাক্তার হিসেবে কাজ করেন। ছাত্রাবস্থায়ই বাবার সঙ্গে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন আইভি। ১৯৯৩ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মহিলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি আলী আহমেদ চুনকা ফাউন্ডেশন এবং নারায়ণগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) এর নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শামীম ওসমানকে পরাজিত করে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ২৭ নভেম্বর তিনি সিটি করপোরেশনের প্রথম নারী মেয়র হিসেবে শপথ নেন। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি মেয়র হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেন। ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর রাজবাড়ীর বাসিন্দা কাজী আহসান হায়াতের সাথে আইভীর বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুই ছেলে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। প্রথমবারের মতো, ২০১১ সালে, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিজয়ী হন। ২০১৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো জয়ী হন। এবার টানা তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড গড়লেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।

১৬ই জানু্যারি অনুষ্ঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে ভিপুল ভোটে জয় লাভ পেয়েছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এদিকে তার বিপরীতে শক্তিশালী অবস্থানে থাকা প্রতিদ্বন্ধীও অনেক ভোট পেয়েছেন। এবারের মেয়র নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে নারী মেয়র হিসেবে পরপর ৩ বার নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড গড়েছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।

About

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *