Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ক্যাম্পাসে আসা পুলিশের উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠি

ক্যাম্পাসে আসা পুলিশের উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশ কিছুদিন যাবত আন্দোলন করছিল উপাচার্য এর পদত্যাগের দাবিতে। যা নিয়ে চলছে তুমুল আলোড়ন। পুলিশের সাথে এর মাঝে হয়েছে সংঘাতও। হলে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তালা। এরই মাঝে শিক্ষার্থীদের কে হল ছাড়ার নির্দেশ এরপর থেকে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ নিয়ে এবার খোলা চিঠি দিল শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে। সাথে ফুল দিয়ে বিদায় জানাতেও তারা প্রস্তুত।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনকারীরা।

সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিকাল থেকে রেক্টরের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদও বাসভবনে রয়েছেন।

সারাদিন পুলিশ বিরোধী স্লোগান দিলেও শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের সামনে এসে ফুল দিয়ে পুলিশের দিকে মিছিল করে। তবে তাদের দেওয়া ফুল নেয়নি পুলিশ সদস্যরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকে: “পুলিশ, তুমি ফুল নাও, আমার ক্যাম্পাস থেকে নেমে যাও।”

পুলিশ ফুল না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা পুলিশের কাছে খোলা চিঠি পড়ে।

চিঠিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হস্তক্ষেপ না করে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পুলিশকে ফুল দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থী জোহরা আক্তার বলেন, “তারা আমাদের ক্যাম্পাসে অতিথি। তাই আমি তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানিয়েছি। আশা করি ফুল দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাবে। আমরা ক্যাম্পাসে পুলিশ চাই না।”

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, আমরা এখানে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। ফুল নেওয়া বা না নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নয়।

ক্যাম্পাস ছাড়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তিনি বলেন: “বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আমরা এখানেও জড়াতে চাই না। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের ডাকে আমরা এখানে এসেছি। শিক্ষার্থীরা শান্ত হলে আমরা ক্যাম্পাস ছেড়ে দেব।’

সোমবার সকাল থেকে ভিসিসহ প্রসিকিউটরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন জোরদার হয়েছে। ছাত্ররা দলে দলে এসে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।

আজ বিকেলে ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বহিরাগতরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।

“আন্দোলন এখন বিদেশী দ্বারা চালিত,” তিনি বলেন. রোববার রাত থেকে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে বলে আমার কাছে তথ্য রয়েছে। ‘

তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভিসির দাবি অস্বীকার করেছে। তারা বলছেন, ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভাইস চ্যান্সেলর মিথ্যাচার করছেন। ক্যাম্পাসে পুলিশ ছাড়া অপরিচিত কেউ নেই।

নিজ বাসভবনে ভিসি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বহিরাগত প্রবেশ করেছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করছে। তাদের ইন্ধনে শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।”

‘আমাদের ছাত্ররা খুব ভালো। প্রশাসনের প্রতি তাদের আস্থা রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আজ আন্দোলনে তেমন অংশগ্রহণ নেই। ‘

কারও দ্বারা বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, “রবিবার যা ঘটেছে তা তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আপনাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষও পদত্যাগ করেছেন। আমি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। ছাত্রের দাবি।’

ভাইস চ্যান্সেলরের অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা।

তাদের একজন ছাত্র সৌরভ চাকমা। তিনি বলেন: “ভিসি রোববারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে এমন কথা বলছেন। তারা (প্রশাসন) অভিযোগ করেন, অপরিচিত লোকজন এসে গুলি চালায়। কিন্তু সত্য হলো পুলিশ ছাড়া কেউ গুলি চালায়নি। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশের গুলিতে। এখানে পুলিশ ছাড়া বাইরে কেউ নেই। ভাইস চ্যান্সেলর পুলিশ ডেকেছেন।

উপাচার্যকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে ছাত্র সাব্বির আহমেদ বলেন, “তিনি একের পর এক মিথ্যা কথা বলছেন। এই উপাচার্যকে আমরা আর এক মুহূর্তের জন্য চাই না। তাকে শাবি ছাড়তে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার সকালে এক সমাবেশে উপাচার্যকে অনাগ্রহী ঘোষণা করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও নাট্যকর্মী শাহীন আলম নিউজবাংলাকে বলেন, “আমরা উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। তাকে ক্যাম্পাস ছাড়তে হবে। আমরা আজ রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেব। তিনি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা ক্যাম্পাস ছাড়ব না।” ”

ইউনিয়নের সদস্য জহির বিন আলম বলেন, “যদি তারা রুম থেকে বের না হয়, কর্তৃপক্ষ তা গুরুত্ব সহকারে নেবে।”

তিন দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে ভিসির নির্দেশে রোববার রাতে পুলিশ এ হামলা চালায় বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নিরাপত্তা দেয়নি। এ কারণে ক্রয় সংস্থার পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে।

বেগম সিরাজুন্নেছা হলের সভানেত্রী জাফরিন লিজার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। রোববার আন্দোলনের চতুর্থ দিনে তা সহিংস রূপ নেয়।

রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করে অবরুদ্ধ করে। রাতের বেলায় পুলিশ হামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। এতে ক্যাম্পাস পরিণত হয় মাঠে

পুলিশ শিক্ষার্থীদের দেওয়া ফুল এখনো পর্যন্ত গ্রহণ করেছে কিনা সে ব্যাপারে কোন খবর এখনও পাওয়া যায়নি তবে এখনো পর্যন্ত পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেনি। এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান তারা কোনো পুলিশ দেখতে চায় না। কিন্তু দায়িত্বরত পুলিশ এর দাবি তারা তাদের ডিউটি পালন করছে। এ জল কতদূর গড়াবে সে ব্যাপারে এখনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। হয়তো খুব শীঘ্রই কোন পদক্ষেপ আসবে তবে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ না আসা পর্যন্তও কিছু বলা যাচ্ছে না।

About Ibrahim Hassan

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *