Sunday , November 24 2024
Breaking News
Home / Entertainment / হাতে না ছিল কাজ, না টাকাপয়সা; গৃহহীনদের সাথে ঘুমাতে হয়েছে গাছতলায়: গীতিকার জাভেদ

হাতে না ছিল কাজ, না টাকাপয়সা; গৃহহীনদের সাথে ঘুমাতে হয়েছে গাছতলায়: গীতিকার জাভেদ

প্রতিটা তারকারই দেখা যায় জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে নানা বিধ কষ্টের সম্মুখীন হতে। আসলে কথায় আছে কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। অনেকটা এমনই, কেউ স্বীকার করে কেউ স্বীকার করে না। সম্প্রতি ভারতের প্রখ্যাত গীতিকার জাভেদ আখতার এমনই একটি প্রতিবেদন দিলেন যেখানে তিনি তার কষ্টের কথা গুলো উল্লেখ করে বলেছেন। এমনকি মুম্বাইয়ে প্রথমে এসেই তাকে রাস্তায় থাকতে হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

প্রখ্যাত ভারতীয় গীতিকার জাভেদ আখতার যখন প্রথম মুম্বাই আসেন তখন তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়। জাল দিয়ে একটা গাছের নিচে ঘুমাতে হয়েছে তাকে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

জাবেদ আখতার 1984 সালের 4 অক্টোবর মুম্বাইতে পা রাখেন। তখন কোন চাকরি পাওয়া যায় নি, আর টাকাও ছিল না। অর্থের সন্ধানে তিনি মুম্বাইতে এসেছিলেন, তার ধারালো কলমের স্বপ্ন নিয়ে।

ভাগ্যের দ্বার খোলার আগে তাকে ভবঘুরেদের সঙ্গে শহরে থাকতে হয়েছে। আমাকে আমার ঘুমের সরঞ্জাম সরাতে হয়েছিল।

সারাক্ষণ কাজের খোঁজে। রাতে কখনো বারান্দায়, কখনো করিডোরে। মাঝে মাঝে গাছের নিচে ভিড়ের মধ্যে রাত কাটাতে ফিরে আসে। সকালে, সে আবার কম্বল গুটিয়ে চাকরি খুঁজল।

পাঁচ বছর এভাবেই কেটেছে তার জীবন। 1989 সালে তিনি একটি চাকরি পেয়েছিলেন যার অর্থ তার আর একটি গাছের নিচে ঘুমানোর দরকার নেই। এরপর জাভেদ সেলিম খানকে বিয়ে করেন এবং বলিউডে একের পর এক ব্লকবাস্টার সিনেমার জন্য সংলাপ লিখতে থাকেন। সেলিম-জাভেদ নামে পরিচিতি পান তিনি।

তারা 70 থেকে 80 এর দশকে বলিউডে রাজত্ব করেছে। তারা ‘সীতা অর গীতা’, ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’, ‘ডন’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমা লিখেছেন।

কিন্তু 1982 সালে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে সেলিম ও জাভেদ আলাদা হয়ে যান। তারা আলাদাভাবে কাজ শুরু করে। ভিন্ন হলেও কেউই আলাদা করে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করা থেকে বিরত থাকেননি।

তিন বছর পর গীতিকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন জাভেদ। 1996 থেকে 1999 সাল পর্যন্ত, তিনি যথাক্রমে ‘সাজ’, ‘বর্ডার’ এবং ‘গডমাদার’ চলচ্চিত্রগুলির জন্য জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন। শুধু তাই নয়, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রীও পেয়েছেন তিনি।

জাভেদ 1984 সালে অভিনেত্রী শাবানা আজমিকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের বিয়ের তিন দশক পেরিয়ে গেছে। কিন্তু বিয়ের শুরুটা এত সহজ ছিল না। কারণ: জাভেদ তার আগে অভিনেত্রী হানি ইরানিকে বিয়ে করেছিলেন। জাভেদ-হানি দম্পতির দুটি সন্তানও রয়েছে। ফারহান আখতার ও জয়া আখতার।

শাবানা ও জাভেদের সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে সমাজ থেকে অনেক উপহাস হয়। অনেকেই দুজনের দিকে কাদা ছুড়তে শুরু করেন।

শাবানার বিয়ের কথা বলতে গিয়ে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি তখন আমার যুক্তি সবার সামনে দিতে পারতাম। কিন্তু আরো ছিল।

একই সঙ্গে তিনি হানি ইরানির প্রশংসা করেন। তার মতে, জাভেদের প্রাক্তন স্ত্রী যদি তাকে সমর্থন না করতেন, তাহলে তাদের বিয়ে হয়তো সহজ হতো না।

আজমি জানান, বিয়ের কিছুদিন পরই হানি তার দুই ছেলেকে শাবানা ও জাভেদের সঙ্গে লন্ডনে বেড়াতে পাঠান। এরপর থেকে তাদের সৎ মায়ের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের স্বাস্থ্য আজও ধরে আছে।

জীবন যতটাই সুখ ততটাই কঠিন, বাস্তবতা কাকেইনা শিক্ষা দেয়! হয়তো সেদিন রাস্তায় শুয়ে রাত কাটিয়েছিলেন’ বলেই আজকের জাভেদ আখতার এত বড় গীতিকার। জীবনযুদ্ধ সবার সমান যায় না, তবে কষ্টের জীবন গেলেও তার ফল যে তিনি পেয়েছেন সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কথায় আছে ধৈর্যের ফল সুমিষ্ট হয়, তিনি সেদিন ধৈর্য ধরে ছিলেন বলেই হয়তো আজকে ভাগ্যের দরজা টা এমন ভাবে খুলেছে।

About Ibrahim Hassan

Check Also

আপত্তিকর সেই ভিডিও নিয়ে মুখ খুললেন তিশা (ভিডিও)

সম্প্রতি ঢাকার দোহার উপজেলার এক জমিদার বাড়িতে নাটকের শুটিং চলাকালীন ঘটে বিব্রতকর একটি ঘটনা। ‘প্রেমিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *