Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / কী কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে, বিস্তারিত বললেন বিশ্লেষকরা

কী কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে, বিস্তারিত বললেন বিশ্লেষকরা

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ক্রমশই এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের দিকে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হয়েছে। এরই সুবাধে বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করছে। এমনকি কয়েকটি দেশ নানা বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই ঘনিষ্ঠতা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। এবার এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন বেশ কয়েকজন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। স/ন্ত্রা/স দমন, নিরাপত্তা এবং মা/দ/ক পা/চা/র রোধে একসাথে কাজ করতে রাজি হয়েছে। শনিবার রাতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তুর্কী সরকার এ নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। এই সমঝোতা চুক্তির অধীনে মূলত বাংলাদেশের পু/লি/শ, র‍্যা/ব, বি/জি/বি, আনসার, কো/স্ট/গার্ড/সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীকে তুরস্ক প্রশিক্ষণ দেবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে এই সমঝোতা চুক্তি আগেই হবার কথা ছিল, কিন্তু মহামারির কারণে সেটা আগে হতে পারেনি। এই সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশ ও তুরস্ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি হবে। তখন কী ধরণের ট্রেনিং বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রয়োজন সেটা ঠিক করবে ওই কমিটি, এরপর টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস কী হবে- সেসব ঠিক করা হবে। তারপরই এ নিয়ে বিস্তারিত কাজ শুরু হবে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স/ন্ত্রা/স দমন এবং সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দেশ পরস্পরের সঙ্গে নিরাপত্তা তথ্য বিনিময করবে। এসব বিষয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে। তুরস্কের দেওয়া প্রশিক্ষণটি হবে সামরিক। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাহিনী যেমন সে/না, নৌ বা বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের এই তালিকায় রাখা হয়নি। তবে তালিকায় রয়েছে র‍্যাব, যেটি বাংলাদেশে পু/লি/শে/র এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত এবং যেটির ছয়জন কর্মকর্তার ওপর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ঠিক কী ধরণের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কর্মকৌশল ঠিক হয়নি।সেটি নির্ধারণের জন্য দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি কাজ করার পর তা ঠিক হবে—আর তার পরেই শুরু হবে সে প্রক্রিয়া। এর আগে ২০১৬ সালে হো/লি আ/র্টি/জা/নে স/ন্ত্রা/সী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ ধরণের চুক্তি এবং সমঝোতা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। তুরস্কের সঙ্গে এবারই এধরনের একটি সমঝোতা চুক্তি হলো।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে।বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবার পেছনে প্রধান কারণ উভয় দেশের জাতীয় স্বার্থ। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে এক ধরণের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, যার ফলাফল এ ধরণের সহযোগিতা। তিনি বলেন, কোন একটি দেশের কিংবা একটি ব্লকের ওপর নির্ভর না করে মাল্টিপল (একাধিক) দেশ ও ব্লকের সঙ্গে কাজ করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে যেমন সামরিক সহযোগিতার চুক্তি আছে তেমনি তুরস্কের সাথেও সন্ত্রাস দমনের অংশ হিসেবে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করবে বাংলাদেশ। এছাড়া ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশের গুরুত্বের বিষয়টিও বড় অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিগুলোর আগ্রহের কারণ তৈরি করেছে। অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, এর বাইরে তুরস্কের কাছ থেকে বাংলাদেশ স/ম/রা/স্ত্র কিনছে, সেটাও বাংলাদেশের প্রতি তুরস্কের আগ্রহের আরেকটি কারণ।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ এর প্রেসিডেন্ট, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব) এএনএম মুনীরুজ্জামান বলছেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশেরও আগ্রহের কারণ রয়েছে। কারণ তুরস্কের সামরিক বাহিনী বেশ আধুনিক, ফলে দেশটি থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়া এবং সমরাস্ত্র কেনা- দুই দিক থেকেই লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ। এছাড়া মুসলিম বিশ্বে তুরস্কের অবস্থান শক্ত করাও একটি বড় লক্ষ্য তুরস্কের কাছে। মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সমর্থন এখানে চাইতে পারে তুরস্ক। আর মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির নেতৃত্ব এবং ন্যাটোর অংশীদার হিসেবেও সক্ষমতা বাড়ছে তুরস্কের, ফলে একটি প্রভাব বলয় তৈরি করবার প্রচেষ্টা রয়েছে দেশটির। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এর সঙ্গে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হবার কারণে বাংলাদেশের একটা খ্যাতি আছে, সেই সঙ্গে আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ একটি অবস্থান নিতে পেরেছে, যেটি তুরস্কের আগ্রহের অন্যতম কারণ হতে পারে। এর আগে, ২০১২ সালে যু/দ্ধা/প/রা/ধের দায়ে জামা/য়া/তে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁ/সি কার্যকর করা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কে এক ধরণের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। এমনকি সেসময় ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিয়েছিল দেশটি। ২০১৬ সাল থেকে তুরস্ক এবং বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে বদলে যেতে শুরু করে। ওই সময় দেশটিতে সং/ঘ/টিত একটি ব্যর্থ সে/না অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের সরকার তার নিন্দা জানিয়ে একটি বার্তা পাঠিয়েছিল। তারপরই বরফ গলতে শুরু করে তুরস্ক সরকারের।

দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আদান-প্রদানে পরপর ঘটে বেশ কয়েকটি ঘটনা। ২০২০ সালে সেপ্টেম্বরে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন উদ্বোধন করা হয়। এমনকি রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর তুরস্ক দ্রুততার সাথে বাংলাদেশের সমর্থনে এগিয়ে আসে। এরপর ২০২১ সালে তুরস্কের কাছ থেকে সমরাস্ত্র কেনার জন্য একটি চুক্তি করে বাংলাদেশ। গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আঙ্কারায় একটি পার্কের নামকরণ করা হয়েছে।

স্বাধীনতার স্বল্প সময়ে বিশ্ব দরবারে নিজেদের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়ছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয় বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ অর্জন করেছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশেষ স্বীকৃতি। অবশ্যে বাংলাদেশের এই উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। এবং এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সরকার গ্রহন করেছেন নানা ধরনের পদক্ষেপ।

About

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *