Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Entertainment / দোস্ত আমাকে বাঁচা,আমাই আজীবন তোর পায়ে পড়ে থাকবো, আমাকে ওরা মেরে ফেলছে : জয়কে ফোনে অভি

দোস্ত আমাকে বাঁচা,আমাই আজীবন তোর পায়ে পড়ে থাকবো, আমাকে ওরা মেরে ফেলছে : জয়কে ফোনে অভি

অনেক খোঁজা-খুঁজির পর অবশেষে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে নয় মাসের মাথায় গত মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধান মেলে বাংলা সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা অনিক রহমান অভির। তিনি চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভিন পপির বিপরীতে ‘সাহসী যোদ্ধা’ সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তবে এদিকে এবার জানা যাক, এতদিন পর কিভাবে দেখা মিলল গুণী এই অভিনেতার।

গত শুক্রবার ভোরের ঘটনা। পিরোজপুর থেকে ফিরছিলেন চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী ও জায়েদ খান। সেসময় জয়ের কাছে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে একাধিকবার ফোন আসে। কিন্তু ফোন ধরছিলেন না জয়। পরে হোয়াটসআপে একটি মেসেজ আসে- ‘দোস্ত আমাকে বাঁচা, আমাকে ওরা ফেলছে।’ এমন মেসেজ পেয়ে কৌতুহলি হয়েই জয় ফোন করেন নিজেই।

ফোন কেটে দিয়ে মেসেজ দেওয়া হয় ওপার থেকে। বলা হয় তাকে মেসেজ দিতে। কয়েকবার মেসেজ চালাচালির পর, ওপার থেকে ফোন আসে। পরিচয় দেওয়া হয়। জয় চিনতে পারেন। এরপর ঢাকায় এসে জায়েদ খানকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় র‍্যাবের হেডকোয়ার্টারে যান। এরপর গত মঙ্গলবার উদ্ধার করা হয় চিত্রনায়ক অভিসহ ২৮ জনকে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে জয় চৌধুরী বলেন, ‘জায়েদ ভাইয়া আর আমি পিরোজপুর থেকে ফিরছিলাম। ভোর চারটা ২০ মিনিটে অপরিচিত নম্বর থেকে বেশ কয়েকটি ফোন আসে। আমি ধরি না। কারণ অপরিচিত নম্বরের ফোন আমি সচরাচর ধরি না। পরে হোয়াটসাপে মেসেজ পেয়ে ব্যাক করি। তখন আমার ফোন কেটে দিয়ে মেসেজ করে। জানায় ওখানে এখন কথা বলতে সমস্যা। জানতে পারলে মেরে ফেলবে। কিছুক্ষণ পরে ফোন আসে।’

জয় বলেন, আমাকে ফোন দিয়ে বলেই আমি অভি, দোস্ত আমাকে বাঁচা। দশ মাস ধরে ওরা আমাকে এখানে আটকায়ে রাখছে। আমাকে ওরা এভাবে ধীরে ধীরে মেরে ফেলছে। দোস্ত আমাকে বাঁচা, আমাই আজীবন তোর পায়ে পড়ে থাকবো।, আমি মরে যাবো।’

এরপর জয় তার অবস্থানের ঠিকানা নেন। পাশেই ছিলেন জায়েদ খান ভাইয়া। তিনি তো সবই শুনছিলেন। এরপর আমি তাঁকে গাজীপুর উদ্ধার করে আনতে চাই। জয় ভাই বলেন, যারা ১০ মাস ধরে আটকে রাখতে পারে তারা নিশ্চই ক্ষমতাশালী। এভাবে আমরা নাও পারতে পারি। এরপর আমরা র‍্যাবের হেড কোয়ার্টারে যাই। এরপর তো সব ঘটনা জানেনই।

জয় জানান, অভিকে তার পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়নি। পরিবারের সহায়তা ছাড়া ওই মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্রে এভাবে ৯-১০ মাস কিভাবে থাকে সেটা চিন্তার বিষয়। জয় বলেন, ও এখন আমাদের জিম্মায় আছে।

চিত্রনায়ক অভি এই মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আসা ও ভর্তির বিষয়ে র‌্যাব জানান, দেশে করোনার সময়ে চলচ্চিত্রের কার্যক্রম স্থবির থাকায় অর্থনৈতিক টানাপড়েনের কারণে তিনি কিছুটা মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি নিয়মিত ঘুমের ওষুধ সেবন শুরু করলে তার আচরণে কিছুটা অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। যার কারণে তাঁকে ওই মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।

২০২১ সালের মার্চ মাসে তার মা চিকিৎসার জন্য তাকে ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে আসেন এবং মালিক বাঁধনের কথামতো তার মা তাকে সেখানে ভর্তি করান। পরে তার মা ছেলের চিকিৎসা বাবদ ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তী সময়ে প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা চিকিৎসা খরচ বাবদ প্রদান করেন। মূলত চিকিৎসার নামে তাকে আটকে রেখে প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করাই ছিল ভাওয়াল মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের মুখ্য উদ্দেশ্য।

এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসার নামে শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানি হতো বলে অভিযোগ করা হয়। এখানে চিকিৎসার নামে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হতো বলে অভি জানান। এ ছাড়া ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী তরুণদের অ্যাবিউজ করতেন মালিক বাঁধন।

অভি ওই পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে কিভাবে উদ্ধার পাবেন এই চিন্তায় ছিলেন। তিনি জানতেন তিনমাস পর একজন ছেলেকে ছাড়া দেওয়া হবে। পরে ওই ছেলে আবার আসবে। এভাবে চিকিৎসা চলতে। অভি বুঝতে পারেন, ওই ছেলের সঙ্গে সখ্য তৈরি করতে পারলে কাজ হবে। এরপর ওই ছেলের সঙ্গে ভাব তৈরি করেন। ছেলেটি যখন ফিরে আসে, তখন সে গোপনে মোবাইল নিয়ে আসে। আর এই মোবাইলটি ব্যবহার করার সুযোগ পান অভি। তিনি গত শুক্রবার ভোরে ফোন করেন জয়কে। এখন তিনি মুক্ত।

এদিকে দীর্ঘ ৯ মাস বন্দি দশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) গুণী এই অভিনেতা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমার নতুন জন্ম হলো।’ তবে যাই হোক না কেন, প্রিয় তারকাকে আবার দেখতে পেরে যেন আনন্দের বন্যা বইছে ভক্তদের মাঝে।

About

Check Also

আপত্তিকর সেই ভিডিও নিয়ে মুখ খুললেন তিশা (ভিডিও)

সম্প্রতি ঢাকার দোহার উপজেলার এক জমিদার বাড়িতে নাটকের শুটিং চলাকালীন ঘটে বিব্রতকর একটি ঘটনা। ‘প্রেমিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *