Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বিদেশে যাওয়ার সময়ও টাকা দিছি,সেই ছেলে বাপ-মাকে চেনে না,কাকে বিয়ে করেছে তাকেই চেনে:বাবা

বিদেশে যাওয়ার সময়ও টাকা দিছি,সেই ছেলে বাপ-মাকে চেনে না,কাকে বিয়ে করেছে তাকেই চেনে:বাবা

কিছু ঘটনা আমরা সিনেমা-নাটক সহ বিভিন্ন বিনোদন মাধ্যমে পেয়ে থাকি। কিন্তু বাস্তব জীবনেও যে এমন ঘটতে পারে সেটা ভাবনার বাইরে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় এমন বিরল ঘটনা। সম্প্রতি কুমিল্লায় ছেলেকে নিয়ে শশুর আর বাবার কাড়াকাড়ির মতো একটি ঘটনা ঘটেছে। নাটকীয়তার মতোই টাকার জোরে ছেলে কে শশুর নিয়ে যেতেও দেখা গেছে। কতটা হৃদয়বিদারক একবার ভেবে দেখেছেন? জন্মদাতা বাবা সে কিনা টাকার কাছে হেরে নিজের ছেলের কাছে পর হচ্ছে। ছেলে বা কেমন হলে নিজের বাবাকে ত্যাগ করে শশুর কে আপন করে নেয়।

আল-আমিন সিকদার:

ছেলে কার? বাবার নাকি শ্বশুরের? কখনও কখনও এমন নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয় বাস্তবেও। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ঠিক তাই হয়েছে চট্টগ্রামে।

প্রবাস ফেরত ছেলেকে নিয়ে দু’পক্ষের টানাটানি, পুলিশের হস্তক্ষেপ, সবশেষে টাকার জোরে শ্বশুরের জয়। এখন অসহায় বাবা আর বোনের সম্বল শুধু কান্না। এ যেনো এক থ্রিলারের মঞ্চায়ন।

ওমান প্রবাসী এই যুবকের নাম রকি। বাড়ি কুমিল্লায়। দু’বছর আগে ভালোবেসে রীনা আক্তারকে বিয়ের পর ফের চলে যান ওমানে। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নামার পরই নাটকীয় ঘটনার সূত্রপাত। রকিকে নিয়ে শুরু হয় বাবা আর শ্বশুর বাড়ির লোকদের টানাটানি। বাবার বাড়ি নাকি শ্বশুর বাড়ি, কোথায় যাবেন রকি? এ দ্বন্দ্ব গড়ায় পুলিশ পর্যন্ত।

উভয়পক্ষই যান চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায়। সেখানেই রকি সিদ্ধান্ত জানান, শ্বশুর বাড়িতেই যাবেন তিনি। স্ত্রী রীনাও যেতে চান না রকিদের ঘরে।

এমন সিদ্ধান্তের পর তৈরি হয় আরেক দৃশ্যপট। এবার ছেলের সামনে দাঁড়ান অসহায় বাবা। অবাধ্য সন্তানকে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে মেয়ের কাছ থেকে ধার নেয়া টাকা ফেরত চান।

প্রবাসী রকির বাবা আবদুল মান্নান বলেন, ‘ছেলে বিদেশে যাওয়ার সময় টাকা পয়সা আমি দিছি এখন ছেলে বাপ চেনে না, মা চেনে না, ভাই চেনে না, কাউকেই চেনে না। একমাত্র সে কাকে বিয়ে করেছে তাকেই চেনে সে।’

প্রবাসী রকির বড় বোন বলেন, ‘আমরা ওকে গাড়ি নিয়ে আইছি নিতে, ও আমাদের সাথে যাইবে না, শ্বশুর বাড়ি যাইবে। ও আমাদের চিনে না। বাপ, মা ভাই-বোন চিনে না।’

রকির শ্বশুরপক্ষ শর্ত জুড়ে দেয় লেনদেন হবে স্ট্যাম্প করে। পুলিশের উপস্থিতিতে, রকির বাবার হাতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক তুলে দেয় শ্বশুরপক্ষ। এরপর স্ত্রীর হাত ধরে চলে যায় রকি।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেন, রকির বাবা-বোন ও স্ত্রী-শ্যালক তাকে নেয়ার জন্য আসছে। তাদের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা এসে আবার চলে গেছেন। কেউ কারোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি।

জন্মদাতা বাবার প্রতি সন্তানের এমন নির্দয় আচরণ সইতে পারেননি আদরের বোন। তার আহাজারি হৃদয় ছুঁয়ে গেছে উপস্থিত সবার।

এমন ঘটনা বিরল হলেও মানুষ যে তার মনুষ্যত্ব হারাচ্ছে সেটা এরকম কিছু ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কোন পক্ষই কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি বলে প্রশাসন কিছু করতে পারছে না। তবে কি জন্মদাতা হয়েও নিজের ছেলের প্রতি অধিকার হারাতে হবে নিজের বাবাকে? সবকিছুই এখন ধোঁয়াশা। দেখার বিষয় পরবর্তীতে ছেলের বাবা মা কোন লিখিত অভিযোগ করেন কিনা। যদি না করেন তাহলে হয়তো প্রশাসনের কিছুই করার থাকবেনা। মেনে নিতে হবে এমন বিরল নিয়তি।

About Ibrahim Hassan

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *