বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে দেশের সকল রাজনৈতিক দল গুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে সংলাপ করছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছেন। এদের মধ্যে অন্যতম একটি দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটি রাষ্ট্রপতিকে প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে। বিস্তারিত উঠে এলো প্রকাশ্যে।
নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে সংবিধানের নির্দেশনা অনুসারে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চাইলে এক রাতেই এ সংক্রান্ত আইন করা সম্ভব। মঙ্গলবার বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপে এই প্রস্তাব দেয়া হয়েছে দলটির তরফে। দলের সভাপতি রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেয়। সংলাপ শেষে বেরিয়ে বঙ্গভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ইসি নিয়ে তিন দফা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপ হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্য যে একই বিষয় নিয়ে তিনবার আসতে হলো। রাশেদ খান মেনন বলেন, ২০১১ সালে ইসি গঠনে তারা আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে একই প্রস্তাব দিয়েছেন। আজও সেই প্রস্তাবই পুনরায় দেয়া হয়েছে। ইসি গঠনে আস্থাহীনতা দূর করতে হলে আইন করতেই হবে বলে অভিমত দেন রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টও মনে করেন, ইসি গঠনে আইন প্রণয়ন ফরজ হয়ে গেছে। ইসি গঠনে আইন প্রণয়ের বিষয় আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য আছে’ জানিয়ে ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি বলেন, প্রেসিডেন্ট উদ্যোগ নিতে পারেন। নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও বুদ্ধিজীবীদের মতামত নিতে পারেন। এ ছাড়া সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদার আমলে আইনের একটি খসড়া তৈরি করাই আছে। ওই খসড়াটি ধরেই আইন প্রণয়ন সম্ভব। চাইলে এক রাতেই আইন করা সম্ভব।
আইনের বিষয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল রাখা যেতে পারে। এতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে এই সাংবিধানিক কাউন্সিল হতে পারে। এই কাউন্সিল সিইসি ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে নাম প্রস্তাব করবে। সার্চ কমিটি গঠনেও প্রস্তাব দিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এতে তারা বলেছে, সার্চ কমিটি সাংবিধানিক পদাধিকারীদের নিয়ে গঠন করতে হবে। তারা সিইসি ও অন্য কমিশনারদের প্রতিটি পদের জন্য চারজন করে নাম প্রস্তাব করবে। এই তালিকা সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটিতে বাছাই করে সেখান থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতি সিইসি ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে আনিসুর রহমান মল্লিক, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমেদ বকুল, কামরুল আহসান, আলী আহমেদ এনামুল হক ও নজরুল ইসলাম হাক্কানী উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান সময়ে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তবে তারা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এদিকে নানা অভিযোগের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে দেশের সকল রাজনৈতিক দল গুলো সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি জানিয়েছে।