Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বেপরোয়া গতি তোলায় লঞ্চটি কাঁপতে শুরু করে

বেপরোয়া গতি তোলায় লঞ্চটি কাঁপতে শুরু করে

গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৩ শে ডিসেম্বর ঢাকার সদরঘাট লঞ্চঘাট হতে এমভি অভিযান-১০ নামের একটি লঞ্চ সন্ধ্যা ৬টার দিকে বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চটি ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই লঞ্চের নিয়ন্ত্রণে থাকা চালক এবং চারজন টেকনিশিয়ান লঞ্চটিতে বেপরোয়া গতি তোলে। মূলত ইঞ্জিনে ত্রুটি থাকার জন্য ওই চারজন টেকনিশিয়ান ত্রুটি মেরামতের জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন। তারা ট্রায়াল’ হিসেবে ওই দুটি ইঞ্জিনের পুরোপুরি গতি তোলে। আর এই কারণে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয় এক পর্যায়ে আগুন লেগে যায়। লঞ্চ থেকে যারা বেঁচে আছেন তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে এমন ধরনের তথ্য মিলেছে।

ইতালি প্রবাসী বরগুনা সদরের হেউলীবুনিয়া এলাকার সাদিক মৃধা অভিযান-১০ নামে ওই লঞ্চের তিনতলার কেবিনের যাত্রী ছিলেন। তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। লঞ্চটি অর্ধেকের বেশি পুড়ে যাওয়ার পর প্রচণ্ড উত্তাপ আর ধোঁয়ায় দম আটকে যাওয়ায় ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। এরপর বাইরে বের হয়ে দেখেন, চারদিকে আ’গুন। তিনি লঞ্চের পাশের ত্রিপলের রশি বেয়ে দ্রুত দোতলায় নামেন। সেখানে অনেক নারী, শিশুকে অজ্ঞান ও দগ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। একটি ফ্যামিলি কেবিনে দুই শিশু ও এক নারীর দ’গ্ধ নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। সাদিক বলেন, কী করব ভেবে দিশেহারা হয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলাম। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করেন।

ওই লঞ্চের আরেক যাত্রী ফারুক হোসেন বলেন, লঞ্চটি ঢাকার ঘাট ছাড়ার পর তিনি ইঞ্জিনকক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। তখন ইঞ্জিনের বেপরোয়া গতি তুলতে চারজন টেকনিশিয়ানকে দেখতে পান।

ফারুক ছাড়াও আরও কয়েকজন যাত্রী বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিনের ত্রুটি থাকায় চারজন ইঞ্জিন মেরামতকারী টেকনিশিয়ান লঞ্চটির ইঞ্জিনকক্ষে ছিলেন। তাঁরাই মূলত পুরো গতিতে লঞ্চটি চালাচ্ছিলেন। ইঞ্জিনে গ্যাস হওয়ায় বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই ইঞ্জিন প্রচণ্ড গরম হচ্ছিল। ইঞ্জিনের ত্রুটি খুঁজে পেতে পুরো গতিতে দুটি ইঞ্জিনই চালাচ্ছিলেন তাঁরা। বেপরোয়া গতির কারণে লঞ্চটি কাঁপছিল।

সাদিক বলেন, লঞ্চটিতে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আর আগুন লাগার পরপরই মালিক ও স্টাফরা যাত্রীদের রেখে লঞ্চ থেকে সটকে পড়েন।

চারজন টেকনিশিয়ান যদি বিষয়টি ভাবতেন যে যেকোনো সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে তাহলে হয়তো এমনটি ঘটতো, এমনটাই জানা তারা। এদিকে এই লঞ্চে যারা নিহত হয়েছে তাদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য ঘোষণা দিয়েছেন বরগুনা জেলা প্রশাসক। তিনি জানিয়েছেন, লঞ্চের গন্তব্য ছিল বরগুনা। আর এ কারণেই বেশিরভাগ যাত্রী বরগুনার। আমরা ইতিমধ্যে যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিচয় জানার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

About

Check Also

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা কমাচ্ছে: রিজভী

দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *