২০১০ সালের দিকে, আমি বাংলাদেশের রংপুর ক্যাডেট কলেজ হতে স্কলারশিপ পাওয়ার মাধ্যমে অধ্যয়নের জন্য তুরস্কের আঙ্কারার হ্যাজেটেপে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন বিভাগে পড়তে গিয়েছিলাম। এরপর সেখানে মেডিকেল কলেজে ৭ বছর ধরে পড়াশোনা করার পর আমি পেশাগত জীবনে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নিই। সেখানে এমবিবিএস শেষ করার পর চাকরি শুরু করি। আমি যেখানে চাকরি করতে শুরু করি সেখানে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমার সাথে আয়েশার দেখা হয়। হাসপাতালের প্রধান হিসাবরক্ষক আয়েশা ওজতেকিন আনাতোলিয়ার লাইফ হাসপাতালে চাকরির মাধ্যমে তার সাথে পরিচয় হয়। সেখান থেকেই আমাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমরা আমাদের সম্পর্কের ৪ বছর পার হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমরা বিয়ে করব।
আমাদের ইচ্ছে ছিল দেশে এসে বিয়ে করার কিন্তু আমি ডাক্তার হওয়ায় করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা দেশে আসতে পারছিলাম না। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় দেশে এসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আয়শা তুরস্কের সিভাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স বিভাগ থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করেছে।
নিজের ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার যুবক হুমায়ূন কবির। তুরস্কের আন্তালিয়া শহরের বাসিন্দা মাহমুদ নামিক ওজতেকিন ও সেভদা ওজতেকিন দম্পতির একমাত্র কন্যা আয়েশা ওজতেকিন। সূদুর তুরস্ক থেকে প্রেমের টানে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন আয়েশা।
গত শুক্রবার বিকালে বাঙালি আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে হয় আয়েশা ওজতেকিন ও হুমায়ুনের। এরইমধ্যে সহজে মিশে যাওয়ার মানসিকতা দিয়ে জয় করে নিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হৃদয়। হুমায়ুন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা পৌর শহরের লক্ষীখলা এলাকার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসান আলী ও হোসনেয়ারা বিউটি দম্পতির পুত্র।
নববধূ আয়েশা তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমার বাবা প্রথমে রাজি ছিলেন না আমাদের এই সম্পর্ক নিয়ে। কিন্তু পরে উভয়ের পরিবারই বিয়েতে সম্মতি দেয়। হুমায়ুন আমার অনেক কেয়ার করে।তার গুণ বলে শেষ করা যাবে না। আমি একটু একটু বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি। এখানকার মানুষ খুব ভালো।
শফিক আহমেদ যিনি হুমায়ুনের মামা তিনি বলেন, এটা শুধু বিয়ে নয়, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সম্পর্কের সৃষ্টি হলো। দুই পরিবারের সম্মতির মাধ্যমে তাদের চার হাত এক হয়েছে। সবার সঙ্গে এক হয়ে গেছেন আয়েশা। আমি তাদের জন্য সবার নিকট দোয়া কামনা করছি। ছেলের বিয়ে প্রসঙ্গে তার বাবা হাসান আলী বলেন, আমার ছেলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। আমরা একটি মনের মতো ও ভালো বউ পেয়ে খুব খুশি। আমাদের সংস্কৃতি ও আচার-আচরণে আয়েশা খুবই খুশি।