গত বছর তিনেক আগেই পারিবারিকভাবে রেশমী আক্তারকে বিয়ে করেন ফখরুল। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের মাধে নানা কলহের সৃষ্টি হয়। দিন যতই যাচ্ছিল, ততই যেন ঝগড়া-ঝাটিতে জড়িয়ে পড়ছিলেন তারা। আর এরই মধ্যে গতকাল রাত ৩ টার দিকে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগে স্বামী ফখরুল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদী শহরের ঘোড়াদিয়ার সঙ্গীতা এলাকায়।
নিহতরা হলেন- রেশমী আক্তার (২৬) ও তার দেড় বছরের সন্তান সালমান সাফায়াত। নিহত রেশমী পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, ৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমীর সঙ্গে ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো. সাইফুল্লার ছেলে ফখরুলের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেশমীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। এরই মধ্যে তাদের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু নির্যাতন বন্ধ হয়নি।
সবশেষ রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে রেশমী ও তার সন্তানকে মেরে ফেলা হয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এদিকে মেয়ে ও নাতিকে হত্যার খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্বজনরা। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ।
নিহত রেশমীর বাবা পারভেজ মিয়া বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েটাকে নির্যাতন করতো। আমরা কষ্ট পাবো ভেবে মেয়ে আমাদেরকে কিছুই বলত না।
তিনি আরো জানান, ফখরুল মাদকাশক্ত ছিল। কিন্তু আমরা জানতাম না। এসব তথ্য আমাদের কাছ থেকে গোপন রেখে বিয়ে দিয়েছিল। এখন আমি আমার মেয়ে ও নাতির মৃত্যুর বিচার চাই।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম জানিয়েছেন, স্ত্রী পরকীয়া করতেন এমন সন্দেহের জের ধরে স্ত্রী-সন্তানকে শেষ করে দেন ফখরুল। এরই মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।