বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন প্রশাসন কর্মকর্তাদের প্রতি বিশেষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাকে ঘিরে দেশ জুড়ে ব্যপক আলোচনা-সমালোচনা বিরাজ করছে। এমনকি দেশের সরকারের কয়েকটি মন্ত্রী এই নিয়ে কথা বলেছেন।, শিধু তাই নয় যুক্তরাষ্ট্রেরও বেশ কিছু কর্মকান্ড তুলে ধরেছেন। সম্প্রতি এই তালিকায় যুক্ত হলেন বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার বলা কথা গুলো উঠে এলো প্রকাশ্যে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, মার্কিন প্র/শা/স/নের সিদ্ধান্ত একপেশে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত দেশের ভিতরে জ/ঙ্গি/বাদ ও স/ন্ত্রা/সী/দের উৎসাহিত করবে। সচিবালয়ে রোববার (১২ ডিসেম্বর) সকালে তার দপ্তরে ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহর প্রেরণ করেছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে খাদ্য সংকটের সময় ১৯৭৪ সালে কিউবার কাছে পাট বিক্রির অজুহাতে খাদ্যবাহী জাহাজ মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছিল আমেরিকা। ৭১’র গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ ও ৭৫’র বঙ্গবন্ধুর হ/ত্যা/কা/ণ্ডের বিষয়ে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে আছে, তবুও বন্ধুত্বের প্রশ্নে স্পর্শকাতর এ বিষয়গুলোকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেইনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দ্বিপাক্ষিক ও অভিন্ন ইস্যুসহ বহুপাক্ষিক ইস্যুতে দুই দেশ নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন লগ্নে যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি সিদ্ধান্তে আমরা বিস্মিত ও ব্যথিত হয়েছি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, র্্যাব একটি এ/লি/ট ফোর্স হিসেবে কাজ করছে, সাম্প্রতিক জ/ঙ্গি/বা/দ দমনে এই বাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। এ বাহিনীর কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় এ বাহিনীর অন্তত সাত জন মৃ/ত্যু/দ/ণ্ডে দ/ণ্ডি/ত হয়েছিল। কোন অভিযোগ থাকলে বাহিনী নিজে কিংবা মন্ত্রণালয় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছে। সেতুমন্ত্রী বলেন, দুদক যে কোন তদন্ত কাজ চালিয়ে যেতে স্বাধীন ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু ঢালাওভাবে অভিযোগ এনে একটি বাহিনীর প্রধান ও সাবেক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে নিষেধাজ্ঞা প্রদান অযৌক্তিক। মানবাধিকারের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের সিদ্ধান্তই এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। যুক্তরাষ্ট্রে আজ মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে, আমরা তাদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আগে পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করছি।
ওবায়দুল কাদের, জর্জ ফ্লয়েডের মৃ/ত্যু গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, যা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। সেখানে দৃশ্যমান ব/র্ণ/বা/দ বিরাজ করছে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছিলেন। কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈ/ষ/ম্য এবং নিপীড়ন প্রশ্নে খোদ জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে। মেক্সিকো-ইউএসএ সীমান্তে ব/ন্দু/ক হা/ম/লা/য় প্রতি বছর লাখো মানুষ মা/রা যায়। নির্বাচনে হেরে যেদেশের ক্যাপিটাল হিল দখল করতে গিয়ে পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃ/ত্যু/র ঘটনা বিশ্ববাসী লক্ষ্য করেছে। বিশ্ববাসী দেখেছে মার্কিন গণতন্ত্রের স্বরূপ ও তাদের মানবাধিকারের চেহারা। অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার কথা এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বারবার উল্লেখ করেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, খোদ এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিকে আমেরিকা সফরে বাধা দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর কোন কোন খু/নি এখনও আমেরিকায় লুকিয়ে আছে, যু/দ্ধা/পরা//ধী/রাও সেদেশে পালিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর অব লেবার রবার্ট রেইচ এক টুইট বার্তায় বিশ্বকে জানিয়েছিলেন, শুধু ২০২০ সালে সে দেশে বিচারবহির্ভূত হ/ত্যা/কা/ণ্ড ঘটেছে ৯৮৪টি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা বিচারবহির্ভূত হ/ত্যা/কা/ণ্ড ঘটেছে ৬ হাজার ৬০০ জন। প্রতিবছর সেখানে প্রায় ১ হাজার মানুষ বিনা বিচারে মা/রা যায়। যাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হ/ত্যা/কা/ণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন সিটিতে রাস্তায় নামে, তাদের অন্যদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কোন ধরনের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা নিশ্চিত এ সিদ্ধান্তের গভীরে বাংলাদেশ বিরোধী কিছু ব্যক্তি ও অপশক্তির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তি এবং অর্থনৈ্যিক ভাবে সমৃদ্ধাশালী হওয়ায় বিশ্বের সকল দেশের নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে থাকে। এক কথায় বিশ্বের মোড়ল খ্যাত দেশ হিসেবেও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ পরিচিত রয়েছে। তবে সম্প্রতি সময়ে নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশটি বির্তকের সম্মুখীন হয়েছে। তবে নিজেরা নানা ভাবে বির্তকিত হওয়া স্বত্তেও বিশ্বের অন্যান্য নানা বিষয়ের উপরশস্তক্ষেপ করছে দেশটি।