বাংলা ছোট পর্দার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা কচি খন্দকার। অভিনয় ছাড়াও পরিচালক ও নাট্যকার হিসেবেও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ভক্তদের উপহার দিয়েছেন একাধিক জনপ্রিয় নাটক, আর সেই সঙ্গে পেয়েছেন কোটি ভক্তের ভালোবাসা। তবে বর্তমানে খুব একটি ভালো নেই গুণী এই অভিনেতা। গত বেশকিছু দিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতা বোধ করছেন তিনি। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন, হার্টে একাধিক ব্লকের সৃষ্টি হয়েছে, চিকিৎসা করাতে হবে। চিকিৎসার জন্য চলমান প্রায় সব নাটকের শুটিং বাতিল করতে থাকেন তিনি, কেবল একটি নাটক বাদে। শুটিংয়ের সময় বারবার তবু অনুরোধ করতে হয়েছে, ‘ভাই, আমাকে ছাড়। আমি আর ঝুঁকি নিতে পারছি না।’ তারপরও অসুস্থতা নিয়ে শেষ করতে হয়েছে সেই শুটিং। কচি খন্দকার বললেন, ‘শিল্পীর দায়বদ্ধতার জায়গায় জীবন তুচ্ছ করে শুটিং এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।’
শুটিংয়ে অনবরত কাজ করে হাঁপিয়ে উঠতেন কচি খন্দকার। হাঁটাহাঁটি করলেই বুকে ব্যথা হতো। পরীক্ষায় হার্টে ব্লক ধরা পড়লে গত মাসেই শেষে অপারেশন করতে হয় তাঁকে। এখন তিনি রয়েছেন বিশ্রামে। কচি খন্দকার বলেন, ‘অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে জীবনটাকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছি। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুটিংয়ে গিয়েছি, ফিরেছি গভীর রাতে। কখনো রাত দুইটা, তিনটা, কখনো ভোর। কখনো দুই ঘণ্টা, কখনো না ঘুমিয়ে পরদিন শুটিংয়ে গিয়েছি। অনেক সময় দেখা যায়, শুটিংয়ে খাওয়ার কোনো নিয়ম নেই। দীর্ঘদিন এসব অনিয়ম করেই অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বিরামহীন কাজ করে গেছেন কচি খন্দকার। চেয়েছিলেন অভিনয় ও পরিচালনায় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে। সেখানে অসুস্থতা কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়ালেও এখন অভিনয়ের চেয়ে নিজের কাজের প্রতিই তিনি বেশি মনোযোগী। তিনি বলেন, ‘গত মাসের শেষের দিকে অপারেশন করিয়েছি। এখন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছি। একটু একটু করে হাঁটার চেষ্টা করি। পুরো সুস্থ হতে তিন মাস লাগবে। সুস্থ হলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আবার কাজে ফিরব। দীর্ঘদিন ধরে ব্যস্ততার কারণে পরিচালনায় ফিরতে পারিনি। এখন আমার একমাত্র ইচ্ছা, তিনটা সিনেমা শেষ করা।’
কচি খন্দকারের শরীরের অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। তবে এখন তেমন জটিলতা নেই। তিনি ভালো আছেন। নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন। অপারেশনের কারণে স্বাভাবিক রুটিনে ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে এখন থেকে চাপ নিয়ে কোনো কাজ করতে চান না তিনি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠলেই ‘মাই ডিয়ার ফুটবল’ সিনেমার কাজ শুরু করবেন তিনি।
১৯৬৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহন করেন কচি খন্দকার। স্কুল জীবনে পড়াকালীন বিভিন্ন অভিনয়ে জড়িয়ে পড়েন তিনি। আর সেখান থেকেই একপর্যায়ে নিজেকে দেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে পরিচয় করাতে সক্ষম হন গুণী এই তারকা।